আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিশ্বের অন্যতম বড় রেলওয়ে নেটওয়ার্ক রয়েছে ভারতে। বিশ্ব জুড়ে প্রথম পাঁচটি বড় রেলওয়ে নেটওয়ার্কের মধ্যে ভারতীয় রেল একটি। নূন্যতম খরচে নিত্যদিন রেলপথেই লক্ষ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন। দেশজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে কয়েক হাজার রেল স্টেশন। 

তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় রেলের অধীনে দেশজুড়ে সাত হাজর ৩০৮ -এর বেশি রেল স্টেশন রয়েছে। নিত্যদিন ১৩ হাজারের বেশি রেল চলাচল করে। যার মধ্যে লোকাল ট্রেন ও দূরপাল্লার ট্রেন, উভয়ই রয়েছে। জানা গেছে, শুধুমাত্র রেলপথেই ২০ মিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। সবচেয়ে কম খরচে যাতায়াতের অন্যতম উপায় এই রেল। 

যাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য একাধিক নিয়ম জারি করেছে ভারতীয় রেল। প্রতিটি ট্রেনেই যাত্রীরা যাতে সুরক্ষিত থাকেন, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। কিছু বিষয়ে আবার জারি রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। বহু যাত্রীই ভারতীয় রেলের নিয়মাবলি জানলেও, অনেকেই আবার অবগত নন। এর জেরেই ভোগান্তি পোহাতে হয় বহু যাত্রীকে। 

দূরপাল্লা হোক বা লোকাল ট্রেন, ভারতীয় রেলের তরফে রেলে যাতায়াতের জন্য একাধিক জিনিসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সেই তালিকায় আটটি মূল জিনিস রয়েছে। বিস্ফোরণ, দুর্ঘটনা এড়াতেই এই জিনিসগুলি নিয়ে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারতীয় রেল। কোনও যাত্রী এই নিষিদ্ধ জিনিসগুলি সহ ধরা পড়লে, তাঁর জেল হেফাজত হতে পারে এবং মোটা অঙ্কের জরিমানার মুখেও পড়তে পারেন। 

আরও পড়ুন:  'স্যার, আমরা খুন করেছি, অস্ত্র বাড়িতেই রাখা আছে', থানায় এসে পুলিশকে জানাল মা ও ছেলে

ভারতীয় রেলের তরফে কোন আটটি জিনিস নিয়ে যাত্রা করায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে? 

নারকেল: ভারতীয় রেলের নিয়ম অনুযায়ী, শুকনো নারকেল নিয়ে রেলে যাত্রা করা নিষিদ্ধ। নারকেলের ছোবড়ায় আগুন ধরলেই, সেটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই ছোবড়াও একধরনের দাহ্য বস্তু। তাই নারকেল নিয়ে যাত্রা করা বিপজ্জনক। নারকেল নিয়ে ট্রেনে চড়লে, তাঁর জেল হতে পারে। 

গ্যাস সিলিন্ডার: দূরপাল্লার এবং লোকাল ট্রেনে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গ্যাস লিক করে বিস্ফোরক, অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। 

আতশবাজি: যেকোনও ধরনের আতশবাজি নিয়ে ভারতীয় রেলে ওঠা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। আতশবাজি থেকে অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনা থাকে। তা এড়াতেই আতশবাজির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে ভারতীয় রেলে। 

অ্যাসিড ও রাসায়নিক দ্রব্য: বাথরুম পরিষ্কার করার অ্যাসিড, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড অত্যন্ত বিপজ্জনক পদার্থ। ত্বকের সংস্পর্শে এলে, তা মারাত্মক ক্ষতি করে। যাত্রীদের সুরক্ষায জন্য এই ধরনের জিনিসের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। 

পেট্রোলিয়াম: ভারতীয় রেলে পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিনের মতো তরল পদার্থ নিয়ে যাত্রা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ধরা পড়লেই মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে যাত্রীদের। 

স্টোভ ও দেশলাই: গ্যাস সিলিন্ডারের মতোই স্টোভ, দেশলাই নিয়ে ভারতীয় রেলে যাত্রা করা নিষিদ্ধ। স্টোভ থেকে কেরোসিন লিক করলে, অগ্নিকাণ্ড ঘটার সম্ভাবনা থাকে। 

ঘি: ঘি নিয়ে যাত্রা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ নয়। ২০ কেজি পর্যন্ত ঘি নিয়ে যাত্রীরা ট্রেনে চড়তে পারেন। কিন্তু ঘিয়ের পাত্রটি ভাল ভাবে আটকে রাখতে হবে। যাতে সেই পাত্র থেকে ঘি বাইরে না পড়ে। 

পাশাপাশি ট্রেনে মদ্যপান, ধূমপান করাও নিষিদ্ধ। মত্ত অবস্থায় কোনও যাত্রী যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, যাত্রীদের হয়রানির কারণ হয়ে ওঠেন, জরিমানা সহ ছয় মাস পর্যন্ত শ্রীঘরে ঠাঁই হতে পারে তাঁর। নিষিদ্ধ জিনিস নিয়ে ট্রেনে উঠলে, রেলের সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে, তার সমস্ত ক্ষতিপূরণ সেই ব্যক্তিকেই দিতে হবে। এক হাজার টাকা জরিমানা সহ ছয় বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।