আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির পর রোদের দেখা মিলল মুম্বইয়ে। শহরের অলিগলিতে জমা জল অবশেষে নেমেছে। আগের ছন্দে চালু হল বাস পরিষেবাও। তবে স্বস্তি বেশিক্ষণ টিকবে না। মৌসম ভবন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারও মুম্বই–সহ উত্তর কোঙ্কণের কিছু কিছু এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। হলুদ সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। তবে তাতে নতুন করে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই।


মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস জানিয়েছেন, মুম্বইয়ের পাশাপাশি রাজ্যের দুর্যোগ পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রাজ্যের যে সব এলাকায় ভারী বৃষ্টি চলছে, সেখানে জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানদের মোতায়েন করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সব রকম প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। ফড়নবিস বলেন, ‘জলাধারগুলি থেকে জল ছাড়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, সে জন্য প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগও করেছে রাজ্য সরকার। মুম্বই এবং মহারাষ্ট্রের অন্যান্য অংশে সামগ্রিক বৃষ্টিপাতের পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে কিছু এলাকায় এখনও ভারী বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, এই ক’দিনের বৃষ্টিতে মহারাষ্ট্র জুড়ে ১৪ লক্ষ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। পরিস্থিতি মূল্যায়নের পর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে রাজ্য।

 

আরও পড়ুন:‌ 'নোরা ফতেহির মতো বউ চাই', স্ত্রীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীরচর্চা করতে জোর, সরু কোমরের জন্য ভ্রুণ নষ্ট করলেন স্বামী


প্রসঙ্গত, গোটা আগস্ট মাস জুড়ে যা বৃষ্টি হওয়ার কথা মুম্বইয়ে, তা গত কয়েক দিনেই হয়ে গিয়েছে। শহরের কোনও কোনও অংশে সোমবার ৩০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। টানা দুর্যোগে কোথাও থমকে গিয়েছিল রেল পরিষেবা। কোথাও আবার সাবওয়েতে ডুবে গিয়েছিল গাড়ি। শহরের বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হয়েছিল সড়ক পরিবহণও। বিমান পরিষেবাও ছিল বিপর্যস্ত। তার মাঝে মঙ্গলবার সন্ধেয় মুম্বইয়ে অন্তত দু’টি মনোরেল মাঝপথে বিকল হয়ে যায়। দুই ট্রেনে আটকে থাকা প্রায় ৮০০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় প্রশাসনকে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অতিবৃষ্টির জেরে দুর্ঘটনায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি সামল দিতে দিনরাত কাজ করছে জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একাধিক দল।
তবে বৃহস্পতিবার সকালে মুম্বইয়ের আকাশ পরিষ্কার হয়েছে। সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রাতভর বৃষ্টিও হয়নি শহরে। আগামী তিন দিনে ধীরে ধীরে আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে।


এদিকে, শুধু মুম্বই নয়, বৃষ্টিতে ভেসেছিল রাজধানী দিল্লিও। আর দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ভারী বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একাধিক রাজ্যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে এবং শত শত মানুষ আটকে পড়েছেন। মহারাষ্ট্র সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির একটি। জানা গেছে, হিমাচল প্রদেশে একাধিক ভূমিধসের কারণে প্রায় ৪০০টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরের কিশ্তওয়ার জেলায় মেঘভাঙা বৃষ্টিতে একটি গ্রাম প্রায় তলিয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বহু। প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের জেরেই দেশ জুড়ে চলছে বৃষ্টি। বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়।