আজকাল ওয়েবডেস্ক: আরএসএস, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। চলতি বছরে শতবর্ষ পূরণ করেছে। স্বাভাবিকভাবেই শতবর্ষের উদযাপন চলছে হইহই করে। উদযাপনের অংশ হিসেবেই পূর্ব নির্ধারিত ছিল আট এবং ন'নভেম্বরের বেঙ্গালুরুর অনুষ্ঠান। যেখানে বক্তব্য রাখার কথা ছিল মোহন ভাগবতের। মোহন ভাগবত দেশের মোট চার জায়গায় সংঘের একশ বছরের পথচলা নিয়ে বক্তব্য রাখবেন, তা ঠিক হয়েছে আগেই। তবে শনিবার, বেঙ্গালুরুতে, তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন, তার কিছু অংশ নিয়ে তুমুল হইচই।


সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, ভারতে কেউই 'অহিন্দু' নন। শুধু এটুকুই নয়, নিজের বক্তব্যের পক্ষে ভাগবতকে বলতে শোনা যায়, ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের পূর্বপুরুষ আদতে একজনই এবং হিন্দু সভ্যতায় প্রোথিত একটি সাধারণ সাংস্কৃতিক ভিত্তি ভাগ করে নিয়েছেন সকলেই।

স্বাভাবিকভাবেই মোহন ভাগবতের এই মন্তব্যের পর, রীতিমতো চর্চা রাজনৈতিক মহলে। কারণ, গেরুয়া শিবির অর্থাৎ বিজেপি, আরএসএস বরাবর হিন্দু ধর্ম নিয়ে কথা বলে এসেছে। সেখানে আচমকা সব ধর্মের মানুষের একই পূর্বপুরুষ, আর সকলেই অহিন্দু, এই মন্তব্যের পর চর্চা তুমুল। মোহন ভাগবত আরও বলেন, হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার উপর আরএসএস কেন জোর দেয়, সেই প্রসঙ্গে। বলেন, 'এটা এমন নয় যে ব্রিটিশরা আমাদের জাতীয়তা দিয়েছে, আমরা একটি প্রাচীন জাতি। প্রতিটি দেশের একটি মূল সংস্কৃতি আছে, এবং ভারতের মূল সংস্কৃতি হল হিন্দু। আমরা যে বর্ণনাই দিই না কেন, তা ঘুরে ফিরে আমাদের হিন্দু শব্দের দিকেই নিয়ে যায়।' তাঁর বক্তব্যের মূল সারবত্তা, দেশের স্বাধীনতার জন্য, দেশের সামগ্রিক উন্নতির রাশ হিন্দুদের হাতে এবং ভারতের কেউই আদতে 'অহিন্দু' নন। যাঁরা সকলেই ভারতের সংস্কৃতির মধ্যে বাস করেন, তাঁরা সকলেই হিন্দু। 

তারপরেই তিনি বলেন যে, মুসলিম এবং খ্রিস্টান-সহ সকল ভারতীয় একই পূর্বপুরুষের বংশধর এবং একই সভ্যতার ধারার অংশ। ভাগবতের মতে, 'ভারতে আসলে কোন 'অহিন্দু' নেই। সমস্ত মুসলিম এবং খ্রিস্টান একই পূর্বপুরুষের বংশধর। তারা সম্ভবত এটি জানেন না, অথবা তাদের এটি ভুলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।'  তিনি যুক্তি দিয়েছেন, জ্ঞানত বা অজান্তে, ভারতের প্রত্যেকেই ভারতীয় সংস্কৃতি অনুসরণ করেন, যা তিনি হিন্দু নীতির সঙ্গে সরল সমীকরণে মিলিয়ে দিতে চেয়েছেন। 


'হান্ড্রেড ইয়ারস অফ সংঘ জার্নি: নিউ হরাইজন' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ভাষণে ভাগবত বলেন, আরএসএস ক্ষমতা বা রাজনৈতিক আধিপত্য খোঁজে না বরং 'ভারত মাতা'র গৌরবের জন্য হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করারই সংঘের লক্ষ্য। তিনি বলেন, 'যখন সংঘের আকারে একটি সংগঠিত শক্তি গড়ে ওঠে, তখন তারা ক্ষমতা বা খ্যাতি চায় না। তারা কেবল ভারত মাতার গৌরবের জন্য সমাজের সেবা  করতে চায় এবং সমাজকে সংগঠিত করতে চায়।' একসময় মানুষ আরএসএস-এর উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ করেছিল, এখন তাঁরা এই সংঘের উপরেই ভরসা রাখে, বক্তব্যে তাও বলেন তিনি।