আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর প্রদেশে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি সোমবার রাতে বৃন্দাবনে ঘটে। জানা গিয়েছে এক স্বামী তাঁর স্ত্রীকে এক গেস্টহাউসে অন্য পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এই ঘটনাটি ঘটে চট্টিকারা এলাকায়। মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনাটি জনসমক্ষে প্রকাশ পায়। শুরু হয় উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা ও তুমুল হাঙ্গামা। প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ এই ঘটনার ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন। এরপর ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।

সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামী কিছুদিন ধরে তাঁর স্ত্রী'র আচার-আচরণে সন্দেহ করছিলেন। স্ত্রীর ফোনে কিছু রোমান্টিক বার্তা ও কথোপকথনের রেকর্ডিং পান তিনি৷ এরপর আরও নিশ্চিত হন যে কিছু একটা গোপনে তাঁর অবর্তমানে চলছে। শুরু হয় স্ত্রী'র উপর নজরদারি। সোমবার রাতে গোপন সূত্রে জানতে পারেন যে স্ত্রী একজন পুরুষের সঙ্গে একটি স্থানীয় গেস্টহাউসে দেখা করতে যাচ্ছেন। তিনি কিছু বন্ধুকে নিয়ে গেস্টহাউসে পৌঁছন। সেখানে গিয়ে স্ত্রীকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে এক ঘরে পান।

জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছেই নিজের স্ত্রীকে এইভাবে অন্য পুরুষের সঙ্গে দেখে স্বামী চরম উত্তেজিত হয়ে পড়েন। স্ত্রীর সঙ্গে উচ্চস্বরে তর্ক শুরু করেন। মুহূর্তেই স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে যায় সেখানে। ঘটনাটি জনসমক্ষে বিশৃঙ্খলায় পরিণত হয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, স্বামী আবেগপ্রবণ কণ্ঠে স্ত্রীর উদ্দেশে বলছেন, 'কলোনির লোকজন বলবে, কার সঙ্গে এখানে এসেছিল।'

ভিডিওতে আরেকজন পুরুষকে দেখা যায়। দেখা যাচ্ছে তাঁর জামা ছেঁড়া এবং তিনি পুরো ঘটনা চলাকালীন পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনিই সেই অভিযুক্ত প্রেমিক। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ভিড়ের মধ্যে থেকে কিছু উত্তেজিত মানুষ তাঁর উপর চড়াও হয়, এর জেরে তাঁর জামা ছিঁড়ে যায়।

এরপর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এক মহিলা, যাঁকে অভিযুক্ত প্রেমিকের মা বলে মনে করা হচ্ছে, তিনিও তর্কে জড়িয়ে পড়েন। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'তুই আমার ছেলের ভিডিও করিয়েছিলি না? আমার ছেলেকে ব্ল্যাকমেল করছিলি।'

ঘটনার একপর্যায়ে স্বামী ও স্ত্রী একে অপরকে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু করেন জনসমক্ষে। স্বামী চিৎকার করে বলেন, 'তুই আমার জীবন শেষ করে দিয়েছিস। ৫ বছর ধরে আমার জীবন নষ্ট করেছিস। আমি মরতেও রাজি। ভালো করিসনি আমার সঙ্গে।'

এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন যে, এমন দৃশ্য দেখার পর তাঁর আর বিয়ে করতে ইচ্ছা করে না। এমন মন্তব্য আরও অনেকে নানাভাবে করতে থাকেন৷ 

আরও পড়ুনঃ টানা একবছর লাগাতার ধর্ষণ, এরপর জ্যান্ত কবর! ওড়িশায় তরুণীর সঙ্গে যা ঘটল শুনলে গা শিউরে উঠবে...

এদিকে, ঘটনাটি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একটা পর্যায় পর স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়৷ খবর পেয়ে চট্টিকারা থানার পুলিশ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজনকে থানায় জেরা করে। স্বামী, স্ত্রী ও অভিযুক্ত প্রেমিককে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই দম্পতির পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। এমনকি তাঁদের দুটি ছোট সন্তান রয়েছে। স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এবং স্ত্রী গৃহিণী। বর্তমানে পুরো ঘটনা ভালো করে খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷