আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে আরও এক যুবকের চরম পরিণতি ঘটল। এবার প্রেমিকার চাহিদা মেটাতে গিয়ে জেরবার হয়ে চরম পদক্ষেপ করলেন ওই বিবাহিত যুবক। স্ত্রীর সঙ্গে কোনও অশান্তি ছিল না। সম্পর্কের বিষয়টি স্ত্রী জানতেন না। শুধুমাত্র পরিবারের সকলে জানতেন, ঋণের পাহাড় জমে গেছে। সেই ঋণ শোধ করতে না পেরে, মানসিক অশান্তিতে ভুগছেন যুবক। তার জেরেই যে চরম পদক্ষেপ করবেন , তা যেন কল্পনাতীত সকলের কাছে। প্রেমিকার চাহিদা মেটাতে গিয়ে, ঋণ শোধ করতে না পারায়, নিজের বাড়িতে আত্মঘাতী হলেন ওই যুবক।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে বারাণসীর সরনাথের হাভেলিয়া গ্রামে। মৃত যুবকের নাম, মুন্না লাল মৌর্য। নিজের বাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে মুন্না লাল আত্মঘাতী হয়েছেন। জানা গেছে, আর্থিক অনটন ও ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যায় জেরবার ছিলেন তিনি। এক মহিলার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকেই চরম আর্থিক অনটনের মুখোমুখি হন তিনি।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ৩৮ বছর বয়সি মুন্নার এক দাদা রয়েছেন। মুন্নার দাদা রাজেন্দ্র মৌর্য জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতে আত্মঘাতী হয়েছেন মুন্না। মুন্নার আচরণে আগেই সন্দেহ হয়েছিল তাঁর স্ত্রীর। বিষয়টি ঘিরে তিনিই প্রথমে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এরপর তড়িঘড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তারা তদন্ত শুরু করে।
আরও পড়ুন: ২ ঘণ্টায় তিন জেলায় ঝেঁপে বৃষ্টি, টানা সাতদিন কোন কোন জেলা তুমুল বৃষ্টিতে ভাসবে? রইল আপডেট
মুন্নার স্ত্রী চঞ্চলা জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে গত কয়েক মাসে কোনও ঝামেলা, অশান্তি হয়নি। প্রত্যেকদিন সকালে মুন্না কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর, তিনি সদর দরজা বন্ধ করেই রাখেন। বৃহস্পতিবার রান্নাঘরের কাজ সেরে দরজা বন্ধ করতে গিয়ে দেখেন, দরজাটি আগে থেকেই ভিতরে দিয়ে বন্ধ। পাশে পড়ে রয়েছে মুন্নার চটি। এরপর ঘরগুলিতে খোঁজ শুরু করেন তিনি। একটি ঘরের জানলা বন্ধ দেখেই তাঁর সন্দেহ হয়। সেই ঘরের দরজা খুলতেই মুন্নাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তিনি।
তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, মুন্না এক প্রতিবেশীর বাড়িতে রুপোর গয়না তৈরি করতেন। সেখানে বাসন্তী নামের এক যুবতী থাকতেন। সারাদিন সেই বাড়িতেই কাটত মুন্নার। কাজ থেকে খাওয়াদাওয়া। শুধুমাত্র বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বাড়িতে ফিরতেন তিনি। মুন্নার দাদা রাজেন্দ্র জানিয়েছেন, বাসন্তীকে সাহায্য করার জন্য একাধিক জায়গা থেকে টাকা ধার করেছিলেন মুন্না।
বাসন্তীর স্বামী সাত বছর আগে মারা যান। বাসন্তীর সঙ্গে মুন্নার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে তারপর। পরিবারের মধ্যে আর্থিক সমস্যার জেরে বাসন্তীও অশান্তিতে ভুগতেন। টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করতেন মুন্নাকে। বাসন্তীর চাহিদা মেটাতে নানা জায়গা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন মুন্না। কিন্তু কোনও জায়গাতেই শোধ করতে পারেননি। বাসন্তীর চাহিদা মেটাতে মেটাতেই চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়ে যান তিনি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে বাসন্তীর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন মুন্না। সেখান থেকে বাড়ি ফিরেই আত্মঘাতী হন তিনি। ইতিমধ্যেই ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। একাধিক নমুনা সংগ্রহ করেছে তারা। অন্যদিকে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর আসল কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হবে তারা। ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে।
