আজকাল ওয়েবডেস্ক: এক ঘর থেকে উদ্ধার দম্পতির নিথর দেহ। প্রেম করে বিয়ের পরেও আচমকা সংসারে ঝড়। মূল কারণ কি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক? দম্পতির দেহ উদ্ধারের পর জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দম্পতির ঘরে থেকেই খুন ও আত্মহত্যার আসল কারণ জানার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিলাসপুরে এক ঘর থেকে এক দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই ঘরের দেওয়ালেই লিপস্টিক দিয়ে খেলা ছিল আসল ঘটনা। এটি খুন ও আত্মহত্যার ঘটনা।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ৩০ বছর বয়সি নেহা নামের যুবতীর নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছে ওই ঘরের বিছানা থেকে।অন্যদিকে তাঁর স্বামী রাজের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় সিলিং ফ্যান থেকে। দু'টি উদ্ধারের পর সেই ঘরের দেওয়ালে লিপস্টিক দিয়ে যা লেখা ছিল, তা নজরে পড়তেই আঁতকে উঠেছে পুলিশ। প্রতারণা, বিশ্বাসঘাতকতা, দোষারোপের জেরে ভয়ঙ্কর এই ঘটনাটি ঘটেছে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
দেওয়ালে রাজেশ বিশ্বাস নামের এক যুবকের নাম ও ফোন নম্বর লেখা ছিল। তিনিই দম্পতির সংসারে ফাটল ধরার আসল কারণ বলেই লেখা রয়েছে। একজায়গায় লেখা, 'রাজেশ বিশ্বাসের কারণে আমাদের মৃত্যু।' আরেক জায়াগায় সন্তানদের উদ্দেশে লেখা, 'আই লাভ ইউ'। রাজেশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল নেহার। যা থেকেই সন্দেহ দানা বাঁধে রাজের মনে।
প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন নেহা ও রাজ। একদশক ধরে সংসার করছেন। তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে। দু'জনেই এক সংস্থায় সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। প্রতিবেশীরাও জানিয়েছেন, নিত্যদিন অশান্তি, ঝামেলাই ছিল তাঁদের অভ্যাস। যা কখনও কখনও চরম পর্যায়ে পৌঁছত।
গত ২৪ নভেম্বর দীর্ঘক্ষণ রাজ ও নেহার কোনও সাড়াশব্দ না পাওয়ায় সন্দেহ হয় নেহার মায়ের। বাড়িতে গিয়ে দেখেন, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। দরজায় খানিকক্ষণ ধাক্কা দেওয়ার পর সেটি খুলে যায়। সেখানেই পৌঁছতেই দম্পতির মৃতদেহ দেখতে পান তিনি। ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ করেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, নেহাকে গলা টিপে খুনের পর আত্মঘাতী হয়েছেন রাজ। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে কিনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসেও এমন এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী ছিল বেঙ্গালুরু। হাতে ছিল স্ত্রীর কাটা মুণ্ডু। দরদর করে ঘামছে যুবক। কাঁপতে কাঁপতে হাজির থানায়। যুবকের এই দশা দেখে শিউরে ওঠে খোদ পুলিশ। অবশেষে পুলিশের সামনেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করল যুবক। যা শুনেই চমকে ওঠেন সকলে। বর্তমানে পুলিশের জালে সে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরুতে। আনেকাল এলাকার বাসিন্দা ছিলেন ২৬ বছরের মনসা। কয়েক বছর আগে শঙ্করের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। খুদে কন্যাসন্তান রয়েছে তাঁদের। মনসা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত রয়েছে, তেমনটাই সন্দেহ করত শঙ্কর। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে পারিবারিক অশান্তির জেরেই মনসাকে খুন করে সে। তারপর কাটা মুণ্ডু নিয়ে থানায় যায়।
শঙ্কর পুলিশকে জানিয়েছে, ৩ জুন কাজের অজুহাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। মনসাকে জানিয়েছিল, পরেরদিন সকালে ফিরবে। কিন্তু সেদিন রাতেই বাড়ি ফিরে আসে। মনসা বাড়িতে অন্য কারও সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে কিনা, তা দেখতেই বাড়ি ফিরেছিল। সেদিনেই দু'জনের তুমুল অশান্তি হয়। এরপর বাড়ি ছেড়ে চলে যান মনসা।
শুক্রবার আবার বাড়ি ফিরে আসেন মনসা। হেনস্থা করার জন্য শঙ্করকে ব্যাপক কটুক্তি করেন। তখনই আবারও ঝগড়া, ঝামেলা হয় তাঁদের। গতকাল রাতে মনসাকে মারতে মারতে খুন করে শঙ্কর। এরপর মুণ্ডু কেটে, সেটি নিয়ে থানায় পৌঁছয়। স্ত্রীকে সহ্য করতে না পেরেই যে খুন করেছে, তাও জানায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। শঙ্করকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। ঘটনার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
