আজকাল ওয়েবডেস্ক: মেয়ে হতে চেয়েছিলেন এক তরুণ। তবে বাড়িতে কাউকে বলার সাহস ছিল না। এমনকী লিঙ্গ পরিবর্তনের সার্জারির অর্থও ছিল না। তাই বাড়িতে একা একা লিঙ্গ পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। এক কোপে কেটে ফেলেন নিজের পুরুষাঙ্গ। এতেই ঘটে বিপত্তি। শেষমেশ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন ওই ২০ বছর বয়সি তরুণ। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে। ওই জেলাতেই এক তরুণ নিজের পুরুষাঙ্গ কেটে মেয়ে হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে। মেয়ে হওয়ার ইচ্ছেতেই বাড়িতেই কেটে ফেলেন পুরুষাঙ্গ। রক্তাক্ত অবস্থায় তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। 

 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তরুণ আদতে আমেঠি জেলার বাসিন্দা। সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। তরুণ জানিয়েছেন, অনলাইনে এক চিকিৎসকের সঙ্গে তিনি কথা বলার পরেই এমন পদক্ষেপ করেছেন। স্থানীয় ওই চিকিৎসকের পরামর্শেই বাড়িতেই নিজের পুরুষাঙ্গ এক কোপে কেটে ফেলেন তিনি। কিন্তু শেষমেশ যে এমন বিপত্তি ঘটতে পারে, তা অনুমান করতে পারেননি। 

 

স্বরূপ রানি নেহরু হাসপাতালের চিকিৎসক ড. সন্তোষ জানিয়েছেন, সার্জিক্যাল ব্লেড দিয়ে ওই তরুণ নিজের গোপনাঙ্গে কোপ বসান। এক কোপে পুরুষাঙ্গ বাদ পড়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে আশঙ্কাজনক ছিলেন। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। 

 

আরও পড়ুন: মিড ডে মিল খেয়েই পেটে ব্যথা, ঘনঘন বমি! স্কুল থেকে সোজা হাসপাতালে প্রায় ১০০ পড়ুয়া, বিষক্রিয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ অভিভাবকদের

 

চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন, হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে তরুণ বারবার বলেন, 'আমার শরীরটা পুরুষের মতো হলেও, আমি মনে মনে একজন মেয়ে।' তাঁর দাবি, গলার স্বর, আচার-আচরণ, ইচ্ছে, যৌন চাহিদা সবটাই মেয়েদের মতো‌। ১৪ বছর বয়সে প্রথমে তিনি সেটি টের পান। পারিবারিক এক অনুষ্ঠানে মহিলাদের সঙ্গে নাচগানের সময় টের পান, তিনি আদতেই মেয়েলি স্বভাবের‌। তখনই মনে হয়েছিল, তিনি আদতে এই মেয়েদের মতোই। শুধুমাত্র শরীরটা তাঁর পুরুষের মতো। তখন থেকেই মেয়ে হওয়ার ইচ্ছে চেপে বসে মাথায়। 

 

বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ওই তরুণ। তাই কখনও মুখ ফুটে নিজের ইচ্ছে প্রকাশ করতে পারেননি। মেয়ে হওয়ার ইচ্ছেয় লিঙ্গ পরিবর্তনের স্বপ্ন তাই চেপেই রেখেছিলেন। এরপর প্রয়াগরাজে সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে চলে যান। সেখানে এক ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের ভিডিও দেখতেন। অনলাইনে লিঙ্গ পরিবর্তন নিয়ে নানা গবেষণা করেন। অবশেষে স্থানীয় এক চিকিৎসকের থেকে অনলাইনেই পরামর্শ নেন। 

 

বাড়িতেই অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে অসাড় করেন শরীর। এরপর সার্জিক্যাল ব্লেড দিয়ে গোপনাঙ্গে কোপ বসান। কিন্তু অসাড়তা কেটে গেলেই অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন। অতিরিক্ত রক্তপাত শুরু হয়। তখনই ভয়ে, আতঙ্কে স্থানীয়দের ডাকাডাকি শুরু করেন তিনি। স্থানীয়রাই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যান। 

 

ছেলের এহেন কাণ্ডে কাঁদতে কাঁদতে হাসপাতালে পৌঁছন তাঁর মা। তিনি বলেন, 'ও আমাদের একমাত্র ছেলে। একমাত্র সন্তান। আমাদের বিদ্যে বুদ্ধি কম। কিন্তু চিকিৎসকের উচিত ছিল আমাদের একবার জানানো। প্রয়াগরাজে পাঠিয়েছিলাম। ভেবেছিলেন উচ্চ পদস্থ আধিকারিক হবে। কিন্তু ওর মনে যে অন্য ইচ্ছে ছিল, তা বুঝতে পারিনি।'