আজকাল ওয়েবডেস্ক: দাম্পত্য কলহ চরমে। নিত্যদিন অশান্তির জেরে স্বামীকে ছেড়ে বোনের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন তরুণী। আর তার জেরেই আরও অশান্তি বাড়ল দম্পতির মধ্যে। বিয়ের মাস খানেকের মধ্যে চরম পদক্ষেপ করল তরুণীর স্বামী। পরিবারের সকলের সামনেই স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করল সে। 

 

জানা গেছে, তরুণী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাঁর বোনের বাড়িতে আচমকা ঢুকে পড়ে স্বামী। এরপর সকলের চোখের সামনে স্ত্রীকে ঘরে টেনে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। খানিকক্ষণ পরেই তরুণীর আর্তনাদ শুনতে পান সকলে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকেই দেখে, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহের উপরে বসে রয়েছে তাঁর স্বামী। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মিরাটে। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তরুণীর নাম, স্বপ্না। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে রবি শঙ্কর নামের এক যুবকের সঙ্গে তিনি‌ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন স্বপ্না। তাঁকেই কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ রয়েছে স্বামী রবি শঙ্করের বিরুদ্ধে। 

 

আরও পড়ুন: সংসারে ছিল না মন, বয়সে ছোট প্রেমিকের সঙ্গে দিনরাত খুনসুটি বিবাহিত যুবতীর! নিখোঁজ স্বামীর খোঁজে নেমে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কিনারা পুলিশের

 

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিয়ের কয়েক সপ্তাহ পর থেকে স্বপ্না ও রবির তীব্র বচসা হত। প্রায়ই নানা কারণে দম্পতির মধ্যে অশান্তি শুরু হত। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাঁর উপরে মানসিক চাপ বাড়ছিল। এই পরিস্থিতিতে আমহেরায় বোনের বাড়িতে চলে আসেন স্বপ্না। গত পাঁচ মাস ধরে স্বপ্না পিঙ্কির বাড়িতেই ছিলেন। কারণ হিসেবে পরিবারকে জানান, রবির সঙ্গে অশান্তি এড়াতেই অন্যত্র থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

 

শনিবার সকালেই আমহেরায় পিঙ্কির বাড়িতে হাজির হয় রবি। সেখানে পৌঁছে স্বপ্নার সঙ্গে খানিকক্ষণ কথা বলার আর্জি জানায়। তাতে স্বপ্না রাজি হননি। এরপর সকলের সামনেই স্বপ্নাকে টেনে হিঁচড়ে একটি ঘরে নিয়ে যায় রবি। সেই ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেয়। তখন থেকেই দু'জনের ঝামেলার ইঙ্গিত পান পরিবারের সদস্যরা। আরও কিছুক্ষণ পরেই ঘটে নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি। 

 

পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বচসার মাঝে হঠাৎ স্বপ্না চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু করেন। বারবার তাঁকে বলতে শোনা গেছে, 'আমাকে মেরো না। আমি প্রাণ ভিক্ষা চাইছি।' আচমকা তাঁর আর্তনাদ শোনা গিয়েছিল।‌ এই ঘটনাতেই সন্দেহ হয় পরিবারের। তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেয় তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছয় পুলিশ। 

 

সেই ঘরের দরজা বাইরে থেকে ভেঙে ভিতরে ঢোকে তারা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, অন্তঃসত্ত্বা স্বপ্নার রক্তাক্ত দেহের উপরেই বসে রয়েছে রবি। তার সারা শরীরেও রক্ত মাখা। দৃশ্যটি দেখেই আঁতকে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা। পুলিশের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। ঘাতক স্বামীর বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করার আগেই রবিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

 

এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, রবির বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অন্যদিকে স্বপ্নার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। স্বপ্নাকে খুনের নেপথ্যে কী কারণ ছিল, আদৌ দাম্পত্য কলহের জেরেই অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে রবি খুন করেছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।