আজকাল ওয়েবডেস্ক: হোটেলের রুমে প্রেমিকার সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে গিয়েছিলেন যুবক। হোটেলের রুমে ঢোকার কয়েক মিনিট পরেই পরপর গুলির আওয়াজ। তারপরেই রক্তে ভেসে যায় সেই রুম। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই শিউরে উঠল পুলিশ। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে ছিলেন তরুণী ও যুবক।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বিহারে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জ্যাকি ন্যাট নামের এক যুবক গুলি করে তাঁর প্রেমিকাকে গুলি করে খুন করেন। তরুণীর নাম, কাজল কুমারী। প্রেমিকাকে গুলি করে খুনের পর আত্মহত্যা করেন জ্যাকি। তরুণীর মা জানিয়েছেন, কাজলকে লাগাতার বিয়ের জন্য জোরাজুরি করছিলেন জ্যাকি। তাঁরা প্রেমের সম্পর্কেও আবদ্ধ ছিলেন।
কিন্তু কী কারণে বিয়েতে রাজি হননি কাজল? পুলিশ জানতে পেরেছে, সামাজিক কিছু কারণ এবং ভিন জাতের কারণে জ্যাকির সঙ্গে বিয়েতে রাজি হননি কাজল। বিহারের রোহতাসের একটি গেস্ট হাউস থেকে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কাজলের মা গায়েত্রী দেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, একটি শপিং মলে কাজ করতেন তাঁর মেয়ে। ঘটনার দিন মেয়েকে মার্কেটে নামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই জানতে পারেন বালিয়ার বাসিন্দা এক যুবক কাজলকে গুলি করে খুন করেছেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, কাজলকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন জ্যাকি। রক্তাক্ত অবস্থায় কাজলকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বারাণসীর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। গায়েত্রী দেবী জানিয়েছেন, 'কাজলকে বিয়ের জন্য দিনের পর দিন জোরাজুরি করতেন জ্যাকি। ও বারবার বলতেন, 'কাজল আমার না হলে, আর কারো হবে না।' কিন্তু ভিন জাতের কারণে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন কাজল।
এদিকে জ্যাকির বাবার অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে। ওই হোটেলের বিরুদ্ধেই স্বরযন্ত্রের অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। ঘটনাটি ঘিরে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে আরও একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল মহারাষ্ট্রে। জানা গেছে, এক বিবাহিত তরুণীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন তাঁর চেয়ে বয়সে ছোট এক তরুণ। বারবার তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। কিন্তু তরুণী প্রতিবার সেই বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। অবশেষে অপমানিত হয়ে, রাগের মাথায় চরম প্রতিশোধ নেন ওই তরুণ। বিবাহিত তরুণীকে নয়, প্রেমের পথের কাঁটা তাঁর স্বামীকেই খুন করেন তিনি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নভি মুম্বইয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, নভি মুম্বইয়ের ভাসির বাসিন্দা ২৫ বছরের তরুণী ফাতিমা মণ্ডল ও তাঁর স্বামী আবুবাকার সুহাদলি মণ্ডল। ফাতিমার থেকে বয়সে দশ বছরের বড় ছিলেন তিনি। সুখের সংসারে কোনও অশান্তি ছিল না। তা সত্ত্বেও ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ফাতিমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন ২১ বছর বয়সি আমিনুর আলি আহমেদ। তিনিও ওই এলাকার বাসিন্দা। ফাতিমা বিবাহিত জানা সত্ত্বেও নিত্যদিন তাঁকে উত্যক্ত করতেন আমিনুর। কখনও ফোনে, কখনও রাস্তায় মুখোমুখি হয়েই ফাতিমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতেন তিনি। আর প্রতিবার আমিনুরের দেওয়া বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করতেন ফাতিমা।
আমিনুরের বিয়ের স্বপ্নের পথে কাঁটা ছিলেন ফাতিমার স্বামী আবুবাকার। সেই পথের কাঁটা সরাতেই খুনের পরিকল্পনা করেন তিনি। সোমবার রাতে যুবককে খুন করে বস্তায় দেহ ভরেন আমিনুর। এরপর সেই বস্তাবন্দি দেহটি ভাসির খালে ফেলে দেন। প্রমাণ লোপাটের জন্য আবুবাকারের জামাকাপড় পানভেল- সিওন রোডের ধারে একটি ড্রেনের মধ্যে ফেলে দেন তিনি।
সোমবার রাতে অফিস থেকে আর বাড়ি না ফেরায়, থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন ফাতিমা। পাশাপাশি আমিনুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান, তিনি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে। সম্ভবত এর পিছনে তার কোনও ভূমিকা রয়েছে। এরপরই আমিনুরকে আটক করে পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেন।
আমিনুর দেহটির সন্ধান দিতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। সেখানে পৌঁছে বস্তা থেকে নিথর দেহটি উদ্ধার করে তারা। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আমিনুরের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। আমিনুর বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।
