আজকাল ওয়েবডেস্ক: তেলেঙ্গানায় এক মহিলার নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য ও ক্ষোভ। হায়দরাবাদের শহরতলি বালাজি হিলসে এক ব্যক্তি নিজের পাঁচ মাসের গর্ভবতী স্ত্রীকে খুন করে দেহ খণ্ডবিখণ্ড করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার দেহের মাথা, হাত ও পা ইতিমধ্যেই মুসি নদীতে ফেলে দিয়েছিল অভিযুক্ত। বাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছে তরুণীর দেহের অংশ। জানা গিয়েছে, নিহতের নাম স্বাতী (২১)। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভিকারাবাদ জেলার কামারেড্ডিগুড়ির বাসিন্দা স্বাতী ও মহেন্দর একে অপরের প্রেমে পড়ে বিয়ে করেছিলেন। পরে তারা চলে আসেন হায়দরাবাদের বালাজি হিলসে। মহেন্দর একটি ক্যাব পরিষেবা সংস্থার গাড়ি চালাতেন।

অভিযোগ উঠেছে, গত শনিবার বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ স্ত্রীকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে নদীতে ফেলে দেয় মহেন্দর। এরপর ফোনে বোনকে জানায়, তার স্ত্রী নিখোঁজ। বোন সন্দেহ করে এক আত্মীয়কে জানালে, আত্মীয় মহেন্দরকে থানায় নিয়ে যান। সেখানে প্রথমে স্ত্রী নিখোঁজ দাবি করলেও, জিজ্ঞাসাবাদে শেষ পর্যন্ত খুনের কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ইতিমধ্যেই মহেন্দরকে গ্রেপ্তার করেছে। ডিসিপি (মালকাজগিরি জোন) পি ভি পদ্মজা জানিয়েছেন, ‘মৃতদেহের কেবল ধড় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ফরেন্সিক প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃতার পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ টেস্ট হবে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে’।

নিহত মহিলার বাবা জানান, জামাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণে তাঁদের মধ্যে আর কোনও যোগাযোগ ছিল না। তাঁর কথায়, ‘আমার মেয়ে বলত, সব ঠিকঠাক আছে। কিন্তু ওর উপর নিয়মিত নির্যাতন চলত। আমার মেয়েকে যেভাবে কষ্ট দিয়েছে, ওকেও সেভাবেই কষ্ট পেতে হবে’। এই নৃশংস ঘটনায় স্তব্ধ হায়দরাবাদ, অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি তুলছেন প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা। উল্লেখ্য, স্ত্রীকে খুন করার নৃশংস ঘটনা ঘটেছে গ্রেটার নয়ডাতেও। জানা গিয়েছে, পণ না দেওয়ায় দিনের পর দিন নির্মম শারীরিক নির্যাতন চলত ওই একই বাড়িতে বিয়ে হওয়া দুই বোনের ওপর।

দুজনেই বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে চরম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাও আবার নিজেদের সন্তানদের সামনেই। এর মধ্যে বিপিন তাঁর স্ত্রীকে বেধড়ক মারতে মারতেই গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, গায়ে আগুন নিয়ে প্রাণপণে চিৎকার করে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যান নিক্কি নামে ওই তরুণী। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। তরুণীর মর্মান্তিক পরিণতি হয় হাসপাতালে। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই শ্বশুরবাড়ির অকথ্য নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ওই তরুণীর দিদি। থানায় অভিযোগ দায়ের করে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কড়া শাস্তির দাবি জানান তিনি।

নির্মম শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। এমনকি, মারতে মারতে তাঁকে সিঁড়ি থেকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় পণের জন্য। তরুণীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন স্বামী। অবশেষে মৃত্যু হয় তরুণীর। জানা গিয়েছে, নিক্কি ও দিদির উপর চরম শারীরিক নির্যাতন করতেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। পণ হিসেবে দুজনের থেকে ৩৬ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন তাঁরা। নিক্কির দিদি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। মারতে মারতে সন্তানের চোখের সামনেই নিক্কির গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন।‌

বাঁচার জন্য গায়ে আগুন নিয়েই সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিনি শেষরক্ষা হয়নি। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নিক্কির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ আধিকারিক সুধীর কুমার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতেই হাসপাতাল থেকে থানায় ফোন করে জানানো হয়। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় এই তরুণী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই তাঁকে সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। হাসপাতালে যাওয়ার পথেই তরুণীর মৃত্যু হয়। তাঁর দিদির অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই নিক্কির স্বামী বিপিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিক্কির শ্বশুর ও দেওরের খোঁজেও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।