আজকাল ওয়েবডেস্ক: মা-ছেলের বিবাদ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছল, মা-কে খুন করে মাটিতে পুঁতে দিল ছেলে। শুধু তাই নয়, ঘরের ঠিক পাশের গাছে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর। পরিস্থিতি দেখে হতবাক গ্রামবাসীরা। কেউ বুঝতেই পারছেন না, কী ঘটে গেল। 

ঘটনাটী ঘটেছে মহারাষ্ট্রের লাতুরে। শনিবারেই সামনে আসে গোটা ঘটনা। জানা গিয়েছে ৪৫ বছরের ছেলে বাবান ঘুতে, ৭০ বছর বয়সী মা লক্ষ্মীবতী ঘুগেকে খুন করে,  নিজে আত্মহত্যা করেছেন। সূত্রের খবর তেমনটাই। রেনাপুর তালুকের সাংভি গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ওড়িশায় বেসরকারি হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্সের রহস্য মৃত্যু! শৌচাগারে মিলল দেহ, হাতে সূচের চিহ্ন ঘিরে প্রশ্ন...

প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, মূলত একটি জমিকে কেন্দ্র করেই বিবাদ মা-ছেলের। ছেলে দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর মা-কে ওই জমি বিক্রি করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। দাবি ছিল, ভাল দামে ওই জমি বিক্রির সুযোগ রয়েছে। এতে পরিবারের কাছে একসঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকা আসবে। যদিও মা কোনওভাবেই জমি বিক্রির সিদ্ধান্তে রাজি ছিলেন না। মাঝে মাঝেই এই বিষয়কে কেন্দ্র করে মা-ছেলের মধ্যে বিবাদ চলত। এক একদিন বিবাদ অন্য মাত্রা পেত বলেও জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে।

জানা যায়, ঘটনার দিনেও দু’ জনের মধ্যে ঝামেলা হয়। যদিও গ্রামবাসীরা প্রথমে কিছু বুঝতে পারেননি। আচমকা গ্রাম থেকে লক্ষ্মীবাঈ নিখোঁজ হয়ে যান। লক্ষ্মীবাঈয়ের হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ায় গ্রামবাসীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তাকে খুঁজতে শুরু করেন। তার আগে পর্যন্ত কেউ ঘূণাক্ষরেও জানতেন না, কী হতে চলেছে। গ্রামবাসীরা হঠাত লক্ষ করেন, আখ ক্ষেতে নতুন করে মাটি নষ্ট হওয়ার দাগ। সন্দেহ বাড়তেই ওই জায়গার মাটি খুঁড়তেই দেখা যায়, মাটির নীচে লক্ষ্মীবাঈয়ের দেহ।

পুলিশ জানিয়েছে যে হত্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাবান তাঁর বাড়ির কাছে একটি গাছে ঝুলে আত্মহত্যা করেন । প্রাথমিকভাবে ধারণা, সম্ভবত অপরাধবোধ, গ্রেপ্তারের ভয়, অথবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কারণেই মা-কে খুন করার পরে, নিজের জীবনও শেষ করে দেন ছেলে। 

রেনাপুর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে, উভয় মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, পরে মা ও ছেলেকে একই চিতায় দাহ করা হয়। 

আরও পড়ুন:  টলতে টলতে ডিউটি, রোগীদের কাছে যেতে নাকে এল উৎকট গন্ধ, সরকারি হাসপাতালে দুই নার্সের কীর্তিতে তোলপাড়

ঘটনায় পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছে। তবে কেবল জমি নিয়ে বিবাদকে ঘিরে মা-কে খুন করে দিয়েছে ছেলে, ভাবতেও পারছেন না গ্রামবাসীরা। লক্ষ্মীবাঈইয়ের দেহ উদ্ধার এবং ঠিক তার পরেই ছেলের দেহ উদ্ধার। দুই ঘটনায় শোকে কাতর পাড়া -পড়শিরা। কেউ মানতেই পারছেন না এই ধরনের ঘটনা ঘটে গিয়েছে তাঁদের গ্রামেই। 

 

উল্লেখ্য, এর আগেও, দেশের নানা জায়গায়, সন্তানের হাতে বাবা-মা খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিজেদের দাবী পূরণ না হওয়ায়, বাবা-মা-কে খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে সাম্প্রতিক সময়ে। মহারাষ্ট্রের ঘটনা তারই আরেকটি উদাহরণ।