আজকাল ওয়েবডেস্ক: পারিবারিক ঝামেলা তুঙ্গে। কারণ? শুধুমাত্র বোন। বোন দুইবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এদিকে একটি বিয়েও টেকেনি। আবার দু্টো বিয়ের জন্যেই লাখ লাখ টাকা খরচ করেছে পরিবার। বোনের বারবার বিয়ে ভাঙার কারণেই পরিবারের সুনাম নষ্ট হয়েছে। আবার বোনকেই সম্পত্তির সবটুকু লিখে দেন বাবা, মা। রাগে, ক্ষোভে, ফুঁসতে থাকে দাদা। অবশেষে রাগের মাথাতেই চরম পদক্ষেপ করল সে। একসঙ্গে বাবা, মা ও বোনকে খুন করল সে। ঘটনাটি ঘিরে পুলিশের চোখ ছানাবড়া রীতিমতো। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, এক পরিবারের তিন সদস্যকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে ২৭ জুলাই। খানপুর থানার অন্তর্গত দিলিয়া গ্রামে। মৃতেরা হলেন, শিবরাম যাদব (৬৫), তাঁর স্ত্রী যমুনা দেবী (৬০), এবং তাঁদের মেয়ে কুসুম দেবী (৩৬)। বাড়ির বাইরেই তিনজনকে একসঙ্গে কুপিয়ে খুন করা হল। এইদিনের পর তাঁদের একমাত্র ছেলে অভিযুক্ত অভয় যাদব ওরফে ভু্ট্টান পলাতক ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে চৌকিয়া ক্রসিং এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

 

নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরেই তাঁদের এক আত্মীয় অমরনাথ থানায় অভয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এফ আই আর দায়ের করার পর অভিযুক্ত অভয়ের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। গাজিপুরের পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, তল্লাশি অভিযান শুরু করার কয়েক ঘণ্টা পরেই গভীর রাতে অভয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘ পুলিশি জেরায় বাবা, মা ও বোনকে খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেয় অভয়। পুলিশকে এও জানায়, লোভ, দীর্ঘদিনের পারিবারিক অশান্তি, সম্পত্তির কারণেই খুনের ঘটনাটি সে ঘটিয়েছে। 

 

আরও পড়ুন: বিনোদন পার্কে ভয়ঙ্কর ঘটনা, হঠাৎ ভেঙে পড়ল জয়রাইড, উপর থেকে ছিটকে পড়লেন সকলে, মর্মান্তিক পরিণতি

 

অভয় জানিয়েছে, তার বোন কুসুম দু'বার বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু একটি বিয়েও টেকেনি। তুমুল অশান্তির জেরে বিয়ে ভেঙে যায় তাঁর। কিন্তু বোনের দু'বারের বিয়ের জন্য বাবা, মা প্রচুর টাকা খরচ করেছিলেন। বোনের প্রথম বিয়ের জন্য মোটা অঙ্কের পণ দিয়েছিলেন বাবা-মা। সেই বিয়েও অশান্তির পর ভেঙে যায়। দ্বিতীয়বার বিয়ের পরেও সাংসারিক অশান্তির জন্য শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বোন চলে আসেন। 

 

বোনের দ্বিতীয় বিয়ে ভাঙার পরেই পরিবারে অস্থিরতা বাড়তে থাকে। প্রায়ই নিত্যদিন অশান্তি হত। অভয়ের ধারণা ছিল, বোনের কারণে পরিবারের সুনাম নষ্ট হয়েছে। এমনকী বোনের কারণে পরিবারে তার গ্রহণযোগ্যতা কমে গিয়েছিল। এমনকী সম্পত্তি থেকেও বঞ্চিত হয়েছে সে। অভয় জানিয়েছে, জমিটি বোনের নামেই লিখে দেন বাবা, মা। অথচ জমির সম্পত্তি থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হয় সে। 

 

খুনের দিন কয়েক আগেও পরিবারে তীব্র অশান্তি হয়েছিল। সেই ঝামেলায় যুক্ত ছিলেন কুসুম। সেই রাগ পুষে রেখেছিল অভয়। ২৭ জুলাই রাতেও ঝামেলার মাঝে কুড়ুল নিয়ে প্রথমে বোনের দিকে তেড়ে যায় অভয়। প্রথমে বোনকে কুপিয়ে মারে। এরপর একে মা ও বাবাকে খুন করে সে। বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে অভয়। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনাটির তদন্ত জারি রয়েছে।