আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের খারগোন জেলায় ফের পণ দেওয়া নিয়ে এক নৃশংস ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিনে দেশজুড়ে একাধিক পণ সংক্রান্ত অভিযোগের ঘটনা সামনে এসেছে। কোথাও পিটিয়ে মেরে ফেলা বয়েছে স্ত্রীকে, কোথাও দিনের পর নৃশংস অত্যাচারের খবর সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের খারগোন জেলার বাসিন্দা ২৩ বছরের খুশবু পিপলিয়া নামের এক তরুণী অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন। অভিযোগ উঠেছে, পণ দেওয়া নিয়ে বচসা বাড়ায় তাঁর স্বামী প্রথমে তাঁকে বেঁধে মারধর করেন। এরপর ছুরি গরম করে মুখের ভিতর ঢুকিয়ে দেন। মর্মান্তক অত্যাচারের ফলে খুশবুর শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক দগ্ধ হওয়ার চিহ্ন তৈরি হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মদ্যপ অবস্থায় খুশবুর স্বামী প্রথমে তাঁকে লাথি-ঘুষি মেরে বেধড়ক মারধর করেন।

তারপর রান্নাঘরে টেনে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে গরম ছুরি দিয়ে স্ত্রীর বুক, হাত ও পায়ে আঘাত করেন। খুশবুর অভিযোগ, ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে হওয়ার পর থেকেই স্বামী তাঁকে অপছন্দ করতেন এবং পণ না আনায় বারবার নির্যাতন চালাতেন। ঘটনার রাতে স্বামী নাকি খুশবুর মাথায় বন্দুকসদৃশ কোনও বস্তু ঠেকিয়ে ভয় দেখিয়ে বলেন, তিনি তাঁর স্ত্রীকে চান না। কারণ এই বিয়ে নাকি তাঁর উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। খুশবু জানিয়েছেন, ঘটনার সময় বাড়ির অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। অবশেষে সোমবার ভোররাতে (প্রায় ৪:৩০ নাগাদ) খুশবু নিজেকে মুক্ত করতে সক্ষম হন। বাড়ির কাজের লোকের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাঁর বাবা লোকেশ বর্মা ছোট ছেলেকে পাঠিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করান। বর্তমানে খুশবু আওয়ারকাছ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ মেঙ্গাঁও থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

আরও পড়ুন: যৌতুক চাওয়া নিষিদ্ধ ভুলে যাচ্ছে দেশ, গ্রেটার নয়ডার নিকির হত্যাকাণ্ড জাতীয় তথ্যকেই প্রমাণ করল

তবে খুশবুর পরিবারের দাবি, অভিযোগ করার পর কিছু দুষ্কৃতী তাঁদের হুমকি দিয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, পণ না দেওয়া এবং স্বামীর অপছন্দের কারণেই এই নৃশংসতা চালানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, খুশবুর বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত চলছে। পরিবারের দাবি, অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, স্ত্রীকে খুন করার নৃশংস ঘটনা ঘটেছে গ্রেটার নয়ডাতেও। জানা গিয়েছে, পণ না দেওয়ায় দিনের পর দিন নির্মম শারীরিক নির্যাতন চলত ওই একই বাড়িতে বিয়ে হওয়া দুই বোনের ওপর। দুজনেই বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে চরম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাও আবার নিজেদের সন্তানদের সামনেই। এর মধ্যে বিপিন তাঁর স্ত্রীকে বেধড়ক মারতে মারতেই গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গিয়েছে, গায়ে আগুন নিয়ে প্রাণপণে চিৎকার করে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যান নিক্কি নামে ওই তরুণী। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। তরুণীর মর্মান্তিক পরিণতি হয় হাসপাতালে। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই শ্বশুরবাড়ির অকথ্য নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ওই তরুণীর দিদি। থানায় অভিযোগ দায়ের করে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কড়া শাস্তির দাবি জানান তিনি। নির্মম শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। এমনকি, মারতে মারতে তাঁকে সিঁড়ি থেকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় পণের জন্য। তরুণীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন স্বামী। অবশেষে মৃত্যু হয় তরুণীর।

জানা গিয়েছে, নিক্কি ও দিদির উপর চরম শারীরিক নির্যাতন করতেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। পণ হিসেবে দুজনের থেকে ৩৬ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন তাঁরা। নিক্কির দিদি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। মারতে মারতে সন্তানের চোখের সামনেই নিক্কির গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন।‌ বাঁচার জন্য গায়ে আগুন নিয়েই সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিনি শেষরক্ষা হয়নি। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নিক্কির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ আধিকারিক সুধীর কুমার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতেই হাসপাতাল থেকে থানায় ফোন করে জানানো হয়। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় এই তরুণী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই তাঁকে সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। হাসপাতালে যাওয়ার পথেই তরুণীর মৃত্যু হয়। তাঁর দিদির অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।