আজকাল ওয়েবডেস্ক: সিভিল জজ পদের জন্য আবেদনকারী এবং আইনজীবী হিসেবে কর্মরত অর্চনা তিওয়ারি। আচমকা খোঁজ  মিলছিল না তাঁর। পরে পুলিশ অর্চনাকে মঙ্গলবার গভীর রাতে উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খিরিতে ভারত-নেপাল সীমান্তের কাছে উদ্ধার করে এবং বুধবার ভোরে তাঁকে ভোপালে ফিরিয়ে আনা হয়। এতদূর পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও, ঘটনার মোড় অন্য জায়গায়। যুবতীর বুদ্ধি, আইনের খুঁটিনাটি জেনে নিখুঁত বানানো পরিকল্পনা যে পুলিশকে হয়রান করেছে, তা স্পষ্ট। জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে জোর করে বিয়ে ঠিক করার পর, উপায় কী ভাবতে গিয়ে নিজের এক বন্ধুর সঙ্গে পরিকল্পনা করেন অর্চনা। পরিকল্পনা, নিজেকে ভ্যানিশ করে দেওয়ার। যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। 

প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পরে ধীরে ধীরে রহস্যের জট খোলে। জানা যায়, ওই যুবতীর বাড়ি থেকে জোর করেই বিয়ের ঠিক করা হয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, আইনের ছাত্রী, আইনজীবী হওয়ার কারণে নিজেকে নিজেই গায়েব করে দেওয়ার বিষয়টি তিনি নিখুঁতভাবে করতে পেরেছিলেন। প্রথমে ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়া। ট্রেনে এক কামরায় উঠে পরে কামরা বদল এবং তেজিন্দর বলে একজনকে নিজের ফোন ফেলে দেওয়ার জন্য দেয়। অন্যদিকে এই সময়ের মধ্যেই দিল্লি পুলিশ তেজিন্দরকে অন্য জালিয়াতি মামলায় আটক করে। তেজিন্দর নিজে একজন গাড়ির চালক। গোটা ঘটনায় যুবতীকে সঙ্গ দিয়েছেন সারাংশ বলে তাঁর এক বন্ধু। তিনি নিজেও তাঁর পুরনো মোবাইল নম্বর মুছে ফেলেন, সিম, ফোন ফেলে দেন। বদলে বাবার নামে অন্য মোবাইল ফোন কেনেন, সিম কার্ডও কেনেন। 

আরও পড়ুন: ভারতকে সতর্ক করতে গিয়ে মুখ পুড়ল ইউনূস সরকারের! আওয়ামী লিগ ইস্যুতে মোক্ষম জবাব এদেশের...

একদিকে দু' জনে নানা সিসিটিভি যুক্ত এলাকা এড়িয়ে পালানোর পরিকল্পনা করছিলেন। অন্যদিকে খোঁজ বাড়ছিল তাঁদের। টিভি, মিডিয়া, সংবাদপত্র। সব মিলিয়ে এক সময়ে পরিস্থিতি বিচারে, হায়দরাবাদে চলে যান দু' জনে। তাঁরা তারপর যোধপুর এবং দিল্লি হয়ে নেপালের কাঠমান্ডুতে যান। পরে সরাংশ ইন্দোরে ফিরে আসেন, আর অর্চনা লুকিয়ে থাকেন সেখানেই। সারাংশ ফিরতেই পুলিশ আটক করে তাঁকে। সারাংশের থেকে তথ্য পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়  অর্চনা পর্যন্ত।

পুলিশ জানিয়েছে, উমারিয়া স্টেশনে অর্চনার ব্যাগ, রাখীর উপহার খুঁজে পাওয়ার পরেই অন্যদিকে মোড় নেয় ঘটনা। জানা গিয়েচেহ, অর্চনার ফোন থেকে শেষ ফোন যায় ৭ আগস্ট, তাঁর এক কাকিমার কাছে।  তারপর থেকে ফোন বেজে গেলেও সেই ফোনে কারও সঙ্গে কথা হয়নি। পরে ফোন বন্ধ হয়ে যায়। তদন্তকারীরা তদন্তেই জানতে পারেন, অর্চনা গোয়ালিয়রের ভানওয়ারপুরা থানার একজন কনস্টেবল রাম তোমারের সঙ্গে এই গায়েব হওয়া পর্বে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি তাঁর জন্য ইন্দোর থেকে গোয়ালিয়র যাওয়ার জন্য একটি বাস টিকিট বুক করেছিলেন, যদিও তিনি কখনও এটি ব্যবহার করেননি। ১৮ আগস্ট কনস্টেবলকে আটক করা হয়েছিল এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অর্চনা এখন ভোপালে। পুলিশের হেফাজতে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে, তাঁর আসল উদ্দেশ্য কী। পুলিশ তদন্তের পর এও জানিয়েছে, কী নিখুঁত পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন যুবতী।