আজকাল ওয়েবডেস্ক: শুধুমাত্র সন্দেহের জেরে পিটিয়ে খুন। ফোন হ্যাক করা এবং বিরল কয়েন চুরির সন্দেহে দুই ভাড়াটিয়াকে ভয়ঙ্কর ভাবে মারধর করলেন এক বাড়িওয়ালা। এই মারের ফলে একজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যজনও গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে৷ 

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত বাড়িওয়ালা, ৩১ বছরের ইরশাদকে গত ১১ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, জিম করার জন্য তিনি 'টার্মিন ইনজেকশন' নামে এক ধরনের মাদক (বা স্টেরয়েড) নিতেন। ঘটনার দিনও তিনি সেই মাদক ব্যবহার করেছিলেন।

উপ-পুলিশ কমিশনার ভীষম সিং জানিয়েছেন, গত ৯ নভেম্বর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। সেদিন তামান্নে নামে ওই আহত ব্যক্তি কয়েক জন পরিচিতকে নিয়ে থানায় আসেন। অভিযোগ করেন যে তাঁর বাড়িওয়ালা তাঁকে মেরেছেন। তবে থানায় আসার পরেই তামান্নে জ্ঞান হারাতে শুরু করেন। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে নিয়ে যেতেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই যুবক শাকূরপুরে ভাড়া থাকতেন। লরেন্স রোডের একটি কারখানায় কাজ করতেন।

নিহত যুবকের সহকর্মী নাজিম পুলিশকে জানিয়েছেন যে, বাড়িওয়ালা ইরশাদ সন্দেহ করতেন, তামান্নে এবং তাঁর রুমমেট বীরেন্দর তাঁর ফোন হ্যাক করছেন ও কয়েন চুরি করেছেন। এই সন্দেহে টানা দু'দিন  দু'জনকেই ঘরে আটকে রেখে বেল্ট, লাথি ও ঘুষি দিয়ে মারধর করেন বাড়িওয়ালা।

নাজিম আরও জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে তাঁরা কোনও মতে পালিয়ে তাঁর নিজের বাড়িতে আসেন। পেটে মারাত্মক ব্যথা হওয়ায় তামান্নে দু’দিন ধরে একাধিক ক্লিনিকে চিকিৎসা করান। পরে আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্টে জানা যায়, তাঁর পেটের ভেতর মারাত্মক রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এর পরই তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। অন্যদিকে বীরেন্দর ভয়ে নিজের গ্রামের বাড়ি বিহারে পালিয়ে গিয়েছেন।

পুলিশ এরপর অভিযুক্ত ইরশাদকে ধরতে দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। একটি গোপন সূত্রের খবর পেয়ে ১১ নভেম্বর পুলিশ রোহিনি থেকে ইরশাদকে গ্রেপ্তার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ইরশাদ মারধরের কথা স্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর কারখানায় চুরির প্রমাণ লোপাট করতে তামান্নে ও বীরেন্দর তাঁর ফোন হ্যাক করার চেষ্টা করছিলেন। পাশাপাশি, তাঁর বিরল কয়েন চুরিরও অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের কাছ থেকে বেল্ট, দড়ি, টার্মিন ইনজেকশনের ভায়াল এবং নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংবিধান, ধারা ১০৩(১) এর অধীনে মামলা রুজু করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এর আগেও ইরশাদের বিরুদ্ধে মারধর ও অবৈধ ভাবে আটকে রাখার একটি মামলা ছিল।