আজকাল ওয়েবডেস্ক: ত্রিপুরার ক্রীড়া অঙ্গণে রাজনীতির কোনও স্থান নেই। মেধা ও যোগ্যতাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

দক্ষতা, পরিশ্রম ও প্রতিভার ভিত্তিতেই খেলোয়াড়দের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বুধবার বাধারঘাটের দশরথ দেব স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আয়োজিত খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলা সাধারণ মানুষকে সুস্থ জীবনচর্চায় অভ্যস্ত করে তোলে। এমনকী, নেশা থেকে দূরে রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষভাবে সক্ষম ক্রীড়াবিদরা সমাজের কাছে সাহস, আত্মবিশ্বাস ও অদম্য মানসিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

তিনি জানান, শারীরিক ভাবে পিছিয়ে থাকলেও তা কখনওই প্রতিভা বা সাফল্যের অন্তরায় হতে পারে না। প্যারা ক্রীড়াবিদদের সাফল্যই তার জীবন্ত প্রমাণ।

তিনি আরও বলেন, দিব্যাঙ্গতা কোনও বাধা নয়। দৃঢ় মনোবল, স্পষ্ট লক্ষ্য ও একাগ্রতাই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমেই ক্রীড়াবিদরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে।

ক্রীড়ার কোনও জাত, ধর্ম বা বর্ণ নেই, ক্রীড়া মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে। খেলাধূলা কেবল শারীরিক সক্ষমতা বাড়ায় না, মানসিক শক্তি, শৃঙ্খলা ও আত্মসম্মানবোধও গড়ে তোলে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘খেলো ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজ্য সরকার ‘খেলো ত্রিপুরা’ কর্মসূচির মাধ্যমে ক্রীড়াক্ষেত্রকে সার্বজনীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলতে বদ্ধপরিকর।

প্যারা ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ, উপযুক্ত ক্রীড়া পরিকাঠামো, আধুনিক সরঞ্জাম ও আর্থিক সহায়তা প্রদানে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালে শুরু হওয়া খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস প্রতিবছর সাফল্যের নতুন সোপান অতিক্রম করছে। বর্তমান সরকার ক্রীড়াবিদদের সম্মান করতে জানে।

জীবনে সংকট আসবেই, তবে তা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাওয়াই আসল কথা। শারীরিক সীমাবদ্ধতার চেয়েও মানসিক শক্তিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হীরা মডেল, অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি ও অষ্টলক্ষ্মী দৃষ্টিভঙ্গির ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ ত্রিপুরার দৃশ্যমান উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন।

শেষে প্যারা গেমসের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন তিনি। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিঙ্কু রায় বলেন, ২০২৩ সালে খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমসের সূচনা হয়।

দিব্যাঙ্গদের সামাজিক সুরক্ষার লক্ষ্যে ইউডিআইডি কার্ড প্রদান করা হচ্ছে এবং রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৪৩ হাজারেরও বেশি ইউডিআইডি কার্ড দেওয়া হয়েছে, যা প্রায় ৯৫ শতাংশ।

তিনি জানান, বর্তমান সরকার দিব্যাঙ্গজনদের সার্বিক উন্নয়নে আন্তরিক। অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে কৃতী দিব্যাঙ্গ ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

পাশাপাশি ম্যারেজ গ্র্যান্ট, নির্মলা হেলথ ইন্স্যুরেন্স কার্ড, সিকিউরিটি পেনশন ও চলন সহায়ক সামগ্রী দিব্যাঙ্গদের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্য অতিথিরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, প্যারা অলিম্পিক কমিটি অফ ইন্ডিয়ার চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটার কর্নেল অমুক সিং, বিধায়ক মীনা রানী সরকার, ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা এল. ডার্লং, সমাজ কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস এবং অলিম্পিয়ান ও পদ্মশ্রী দীপা কর্মকার।