আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিশেষ দিনেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাত্রী। এহেন পরিস্থিতিতেও পিছিয়ে দিল না বিয়ের দিনক্ষণ। হাসপাতালের এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে পাত্রীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন পাত্র। কোনও মন্ত্র উচ্চারণ না করে, শুধুমাত্র সিঁদুর পরিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন তাঁরা।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা, কেরলের কোচির এক হাসপাতালে এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন পাত্রীকে বিয়ে করেন এক যুবক। আলাপ্পুজার বাসিন্দা অভনী পেশায় একজন স্কুল শিক্ষিকা। বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছনোর আগেই গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন তিনি। লোকেশোর হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। দুর্ঘটনায় পাত্রী চিকিৎসাধীন থাকলেও, দুই পরিবারের তরফে বিয়ের তারিখ পিছিয়ে দিতে নারাজ ছিল। তাদের ইচ্ছে ছিল, শুভ দিনেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবেন পাত্র ও পাত্রী।
এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে চিকিৎসক, নার্স ও আত্মীয়দের সাক্ষী রেখে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অভনী ও পেশায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যাপক শারন। দুই পরিবারের আবেদনে রাজি হন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে কোনও বিয়ের সানাই বাজেনি, ছিল না বিশেষ সাজসজ্জা, উদযাপন। ছাপোষা সাধারণ পোশাকেই শয্যাশায়ী পাত্রীর কপালে সিঁদুর পরিয়ে দেন পাত্র।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বিয়ের মেকআপ করতেই বেরিয়েছিলেন অভনী। গাড়িতে তাঁর সঙ্গে কয়েকজন আত্মীয় ছিলেন। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ির চালক একটি গাছে গিয়ে ধাক্কা মারেন। দুর্ঘটনায় শিরদাঁড়ায় গুরুতর চোট পান অভনী। বিশেষ চিকিৎসার জন্য তাঁকে ৭০ কিলোমিটার দূরে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই শারন তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে পৌঁছন। পরিবারের উপস্থিতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান, সেদিনই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চান। অবশেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাজি হন। অভনী ও শারন দীর্ঘদিন ধরেই প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। পরিবার রাজি হতেই দ্রুত বিয়ের দিনক্ষণ স্থির হয়। নবদম্পতির ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই আবেগপ্রবণ নেটিজেনরা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি মাসেও এমন এক ঘটনা ঘটেছিল। হাসপাতালের মধ্যে বসল বিয়ের আসর। বাজল সানাই, শঙ্খধ্বনি। আত্মীয়ের উপস্থিতিতে সাত পাকে বাঁধা পড়ল এক যুগল। যে ঘটনায় অবাক হাসপাতালের রোগীদের আত্মীয়রাও। কিন্তু কেন হাসপাতালেই বিয়ে সারল দম্পতি?
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের মুজফ্ফরপুরে। সেখানকার এসকেএমসিএইচ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন রীতা দেবী নামের এক বৃদ্ধা। গত কয়েকদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। দিন কয়েক আগেই তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। তখনই পরিবারের সদস্যদের নিজের শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন।
বৃদ্ধা জানান, তাঁর শেষ ইচ্ছা নাতির বিয়ে দেখা। মার্চ মাসেই তাঁর নাতি অভিষেক কুমারের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক ছিল। বৃদ্ধার শেষ ইচ্ছার কথা পাত্রীর পরিবারে জানানো হয় অভিষেকের পরিবারের তরফে। অবশেষে দুই পরিবারের ইচ্ছেয় হাসপাতালে বসে বিয়ের আসর।
হাসপাতালের শিব মন্দিরে যুগল বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা। বিয়ের সমস্ত আচার পালন করেই বিয়ে সারেন নবদম্পতি। তাঁদের বিয়ের সাক্ষী ছিলেন ওই বৃদ্ধা। নাতির বিয়ের দু'ঘণ্টা পরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রীতা দেবী। তাঁর মৃত্যুর পর আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন সকলে। হাসপাতালে আনন্দের মুহূর্ত বদলে যায় বিষাদে।
