আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ আল-ফালহা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ পেয়েছে। ই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ সিদ্দিকিকে। ইডি সূত্রে খবর, আল-ফালহার সঙ্গে যুক্ত অন্তত ৯টি ভুয়ো কোম্পানির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। যাদের ঠিকানা একই। এই কোম্পানিগুলির যে কোনও বাস্তব অস্তিত্ব নেই, তার একাধিক প্রমাণ ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের হাতে রয়েছে। আজমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কাজে অর্থ জোগানেরও অভিযোগ উঠেছে। এতসবের পরও আল-ফালহা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার কাজকেই সমর্থন করলেন জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি আরশাদ মাদানী।
মাদানী বলেছেন, "আজ, একজন মুসলিম, মামদানি, নিউ ইয়র্কের মেয়র হতে পারেন। একজন 'খান' লন্ডনের মেয়র হতে পারেন। কিন্তু ভারতে, একজন মুসলিম কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে পারেন না। আর যদি হয়েও থাকেন, তাহলে তিনি আজম খানের মতো কারাগারে যাবেন। আল-ফালাহে কী ঘটছে তা দেখুন। তিনি (প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ সিদ্দিকি) কারাগারে আছেন। কে জানে তাঁকে কত বছর সেখানে থাকতে হবে।"
আরশাদ মাদানী আরও বলেন, "বিশ্ব মনে করে যে মুসলিমরা অসহায় হয়ে পড়েছে এবং এই সম্প্রদায়টি শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমি তা মনে করি না, জোহরান মামদানি নিউ ইয়র্কের মেয়র হয়েছেন এবং সাদিক খান লন্ডনের মেয়র ছিলেন।" মাদানীর অভিযোগ, "সরকার চায় তাদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাক।"
জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি আরশাদ মাদানীর অভিযোগে, ভারতে মুসলমানরা বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছেন।
মাদানীর পক্ষে সওয়াল কংগ্রেসের
কংগ্রেসের উদিত রাজ, মাদানীর বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। তাঁরও মতে, দেশে মুসলমানরা বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছেন। উদিত রাজের কথায়, "আমি একমত যে আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ করেছে। সন্ত্রাসবাদের জন্য কোনও ক্ষমা হতে পারে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়কে লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। যদি কোনও আর্থিক অনিয়ম হয়ে থাকে তবে আইন অনুসারে তদন্ত করা হোক। কিন্তু কেন মুসলমানদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হচ্ছে?" আমেরিকার সঙ্গে সাদৃশ্য টেনে তিনি আরও বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র মহান কারণ সেখানে কোনও বৈষম্য নেই।"
সমাজবাদী পার্টির ঘনশ্যাম তিওয়ারি বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর এই বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য রাখা উচিত।"
মাদানীকে নিশানা বিজেপির
জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি আরশাদ মাদানীর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। দলের নেতা মহসিন রাজা তাঁকে দু'মুখো আচরণ এবং দেশের মুসলমানদের লুট করার অভিযোগ করেছেন। রাজা বলেছেন, "আরশাদ মাদানী এবং তাঁর পরিবার দেশের মুসলমানদের লুট করেছে এবং দোষারোপের রাজনীতি করেছে। এটাই ওদের দু'মুখো চরিত্র। তাঁরা বছরের পর বছর ধরে মুসলিম সংখ্যালঘুদের নামে অনুদান পেয়ে আসছেন কিন্তু মুসলমানদের জন্যই কিছুই করেনি। তাঁরা মুসলমানদের নামে রাজনীতি করে চলেছেন।"
আরেক বিজেপি নেতা ইয়াসের জিলানি, মাদানীকে 'বিভ্রান্ত' বলে নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, "মুসলমানদের জন্য ভারতের চেয়ে ভাল জায়গা আর হতে পারে না, হিন্দুদের চেয়ে উদার 'বড় ভাই' আর হতে পারে না।" জিলানির বক্তব্য, "আরশাদ মাদানীর বক্তব্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। একদিকে তিনি বলছেন যে বিশ্বে মুসলমানদের অবস্থা ভাল নয়, অন্যদিকে তিনি নিউ ইয়র্ক সিটির নির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির কথা বলছেন। তিনি আজম খান এবং আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাও উল্লেখ করেছেন। আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা একজন অপরাধী, এবং আজম খান বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সরকার সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলছে। তাঁর উচিত মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি না ছড়ানো।"
