আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোগান্তি অব্যাহত। কেন্দ্র কড়া হুঁশিয়ারি দিলেও তাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। পরিসংখ্যান, রবিবার কলকাতা বিমানবন্দর থেকেই ইন্ডিগোর ৫৩টি বিমানের উড়ান বাতিল হয়েছে। রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল, এমন ২৩টি বিমান বাতিল হয়েছে বলে জানা গিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে।
ইন্ডিগো বিভ্রাটে দেশ জুড়ে বিমানবন্দরগুলিতেও ফুটে উঠেছে নানা ছবি। গত কয়েকদিনের ক্রমাগত গলোযোগে, ভিড় বিমানবন্দরগুলিতে। কোথাও ক্ষোভ যাত্রীদের। কোথাও অসহায় বাবা মেয়ের জন্য আতর আর্জি জানিয়েছেন, কোথাও বিয়ের বোউভাগে পৌঁছতেই পারেননি নবদম্পতি, কোথাও আবার গরবা করছেন একদল যুবক। কেউ গিটার বের করে গান ধরেছেন গলা খুলে।
প্রবল বিভ্রাটে কেন্দ্র একের পর এক পদক্ষেপের কথা জানালেও, সুরাহা এখনও লক্ষণীয় নয়। এসবের মাঝেই শনিবার রাতে ইন্ডিগো একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি বিচারে বহু সংখ্যক বিমান বাতিলের পরেও, শনিবার সংস্থা ১১৩টি গন্তব্যে ৭০০টিরও বেশি বিমান পরিচালনা করেছে। জানানো হয়েছে, 'মূল লক্ষ্য ছিল নেটওয়ার্ক, সিস্টেম এবং রোস্টার পুনরায় চালু করা যাতে আজ আমরা আরও বেশি সংখ্যক ফ্লাইটের মাধ্যমে নতুন করে শুরু করতে পারি, স্থিতিশীলতা উন্নত হয় এবং উন্নতির কিছু প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।'
একইসঙ্গে ইন্ডিগো জানিয়েছে, রবিবার সংস্থাত ১৫০০টিরও বেশি বিমান পরিচালনা করবে। গন্তব্যস্থলের ক্ষেত্রে, ৯৫% এরও বেশি নেটওয়ার্ক সংযোগ ইতিমধ্যেই পুনঃস্থাপিত হয়েছে বলেও দাবি করেছে তারা। জানিয়েছে, ১৩৮টি গন্তব্যের মধ্যে ১৩৫টিতে পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে তারা। একইসঙ্গে ইন্ডিগো জানায়, 'যদিও আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের এখনও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে, আমরা আমাদের গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আমাদের সমস্ত অংশীদার এবং সরকারী সংস্থাগুলিকে তাদের অবিরাম সমর্থন এবং নির্দেশনার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। সর্বোপরি, এই কঠিন সময়ে ধৈর্য এবং সহযোগিতার জন্য আমরা আমাদের গ্রাহক এবং কর্মীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।'
বিমান গলোযোগের এই পরিস্থিতিতে, ত্রাতা হয়ে নামছে ভারতীয় রেল। ভারতীয় রেল আগেই জানিয়েছে, প্রায় ৩৭টি ট্রেনে ১১৬টি অতিরিক্ত কোচ যুক্ত করা হয়েছে। ভারতীয় রেলওয়ে শনিবার থেকে আগামী তিন দিনে সমস্ত জোনে ৮৯টি বিশেষ ট্রেন পরিচালনার ঘোষণা করেছে, যাতে ইন্ডিগোর ব্যাপক বিমান বাতিলের কারণে ভ্রমণে বিঘ্নের সম্মুখীন হওয়া মানুষদের সাহায্য করা যায়।
ভারতীয় রেল জানিয়েছে, ব্যাপকহারে বিমান বাতিলের পর যাত্রীদের চাহিদা অনুসারে দক্ষিণ রেলওয়ে ১৮টি ট্রেনের যাত্রী বহন ক্ষমতা বাড়িয়েছে। উচ্চ চাহিদা সম্পন্ন রুটগুলিতে অতিরিক্ত চেয়ার কার এবং স্লিপার ক্লাস কোচ মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার থেকে বাস্তবায়িত এই অতিরিক্ত পরিষেবা দক্ষিণ অঞ্চলে যাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে। উত্তর রেলওয়ে (এনআর) আটটি ট্রেনে ৩টি এসি এবং চেয়ার কার কোচ যুক্ত করেছে। পশ্চিম রেলওয়ে (ডব্লিওআর)'র ব্যাপক চাহিদা রয়েছে যাত্রীদের, এমন রুটে চারটি ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ৩ এ সি এবং ২ এ সি কোচ। পূর্ব মধ্য রেলওয়ে (ইসিআর) ৬-১০ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচটি ট্রিপে অতিরিক্ত ২টি এসি কোচ দিয়ে রাজেন্দ্র নগর-নয়াদিল্লি (১২৩০৯) পরিষেবা প্রস্তুত করেছে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ বিহার-দিল্লি যাতায়াতের পথে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ক্ষমতা বেড়েছে।
