আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতে ধন-সম্পদের চূড়ান্ত কেন্দ্রীকরণের ছবি আবারও উঠে এসেছে এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে। আন্তর্জাতিক ব্রোকারেজ সংস্থা বার্নস্টেইন-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট পরিবারের মাত্র ১ শতাংশ—প্রায় ৩০ লক্ষ পরিবারের হাতে—দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ সম্পদ কেন্দ্রীভূত। এই পরিবারগুলির হাতে থাকা তরল আর্থিক সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২.৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের সর্বোচ্চ আয়ের শীর্ষ ৩ শতাংশ পরিবারের দখলে রয়েছে মোট সম্পদের প্রায় ৭০ শতাংশ, আয়ের ৪৫ শতাংশ এবং আর্থিক সম্পদের ৮০ শতাংশ। এর মধ্যে শীর্ষ ১ শতাংশ পরিবারের হাতে রয়েছে আয়ের ৪০ শতাংশ, সম্পদের ৬০ শতাংশ এবং আর্থিক সম্পদের ৭০ শতাংশ।

 

বার্নস্টেইনের পর্যবেক্ষণ, এই পরিস্থিতি ভবিষ্যতে আরও বৈষম্য তৈরি করবে। সংস্থার ভাষায়, “যদিও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পিরামিডের বিভিন্ন স্তরে সুযোগ তৈরি করবে, তবুও ধনী আরও ধনী হবে।”

 

ধনীদের জন্য আলাদা অর্থ ব্যবস্থাপনা শিল্পের বিকাশ

বার্নস্টেইন মনে করছে, দেশের ‘উবার রিচ’ বা অতিধনীদের সম্পদ বৃদ্ধির ফলে পেশাদার সম্পদ ব্যবস্থাপনার (wealth management) চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়বে। জটিল আর্থিক পণ্য ও উচ্চ মুনাফার প্রত্যাশা বৃদ্ধির কারণে ধনীরা ক্রমেই পেশাদার পরামর্শদাতাদের ওপর নির্ভরশীল হবেন।

 

বর্তমানে দেশে বিশেষায়িত সম্পদ ব্যবস্থাপনা খাতের অধীনে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পদ রয়েছে, যা মোট সম্পদ ব্যবস্থাপনার মাত্র ১১ শতাংশ। বার্নস্টেইন অনুমান করছে, আগামী এক দশকে এই খাতের পরিমাণ ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলার-এ পৌঁছবে—অর্থাৎ বছরে ১৮ শতাংশেরও বেশি হারে প্রবৃদ্ধি।

 

অর্থনীতিবিদদের মতে, এই তথ্য ভারতে সম্পদ বৈষম্যের গভীরতা স্পষ্ট করে তুলেছে এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের প্রশ্নকে আরও জোরালো করেছে। দেশের বৃহৎ অংশের মানুষ যখন জীবিকা ও মৌলিক চাহিদা মেটাতে সংগ্রাম করছে, তখন ক্ষুদ্র এক অংশের হাতে বিপুল সম্পদের কেন্দ্রীভবন নীতিনির্ধারকদের জন্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।