আজকাল ওয়েবডেস্ক: জাতীয় নিরাপত্তা এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে, পূর্ব লাদাখের মুধ-নিয়োমায় ভারতের সর্বোচ্চ বিমানঘাঁটি তারি করেছে নয়াদিল্লি। এইবায়ুসেনা ঘাঁটি চলতি বছর অক্টোবরের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হতে চলেছে। প্রায় ১৩,৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত, নিয়োমা হল এলএসি-র নিকটতম অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড (এএলজি)। এলএসি-র কাছে এই ঘাঁটিতে নিয়মিত ওঠানামা করবে সুখোই, রাফাল বা তেজসের মতো যুদ্ধবিমান।

যুদ্ধের সময়ে এর কৌশলগত অবস্থান বাহিনীকে বাড়তি সুবিধা দেবে। পাশাপাশি, লাদাখের মতো পাহাড়ি এলাকায় সংঘর্ষ বাধলে দ্রুত ফৌজকে রণাঙ্গনে নিয়ে যাওয়া বা সৈনিকদের জন্য হাতিয়ার ও গোলা-বারুদের জোগান ঠিক রাখতেও এই ঘাঁটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। নবনির্মিত এএলজি-তে রয়েছে তিন  কিলোমিটার রানওয়ে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাবতীয় অপারেশন চালিয়ে যাওয়ার কথা মাথায় রেখে ওই রানওয়ে তৈরি করা হয়েছে। ২০২১ সালে অনুমোদিত এই প্রকল্পের বাজেট ছিল প্রায় ২১৪ কোটি টাকা।

লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দুর্গম এলাকাগুলিতে নজরদারি চালানো খুবই চ্যালেঞ্জিং। স্থলসেনার সেখানে পৌঁছতে কালঘাম ছুটে যায়। এত দিন পর্যন্ত ওই এলাকায় কোনও বায়ু সেনাঘাঁটি না থাকায় সে ভাবে নজর রাখতে পারছিল না বায়ুসেনা। এ বার স্থলবাহিনীর পাশাপাশি চীন সীমান্তের উপর কড়া নজরদারি করতে পারবে বায়ুসেনা।

আরও পড়ুন- যাত্রী নিরাপত্তায় বিশাল পদক্ষেপের পথে রেল, কী পরিকল্পনা?

২০২০ সালে পূর্ব লাদাখে আগ্রাসন দেখিয়েছিল চিন। এলএসি জুড়ে বিপুল সেনা মোতায়েন করে বেজিং। পাল্টা পদক্ষেপ করে নয়াদিল্লি-ও। রাতারাতি লাদাখ সীমান্তে বাহিনীর পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় কেন্দ্র। ফলে বেশ কিছু জায়গায় চিনের ‘পিপলস্‌ লিবারেশন আর্মি’র (পিএলএ) একেবারে মুখোমুখি রণং দেহি মূর্তিতে দাঁড়িয়ে পড়ে ভারতীয় সেনা।

সেই পরিস্থিতিতে মুধ-নিয়োমায় এয়ারফিল্ড নির্মাণে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া ছিল অন্যতম কঠিন সিদ্ধান্ত। কারণ, সীমান্তের এত কাছে বায়ুসেনা ঘাঁটি তৈরি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বেজিং। সেই চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করেই দ্রুত গতিতে এয়ারফিল্ড তৈরির কাজ চালিয়ে যায় ভারত।

বর্তামনে পূর্ব লাদাখের দেমচোক এবং দেপসাং সমভূমিতে ভারত ও চীনের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক বিচ্ছিন্নতার পর নিওমার গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও সেনা টহল পুনরায় শুরু হয়েছে। এই বিমান ঘাঁটি থেকে অধিক উচ্চতায় সংকটের সময় দ্রুত সেনা মোতায়েন ও সমরাস্ত্র পাঠানো সহজ করে তোলে। এছাড়াও এতে লাদাখের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলির সঙ্গে যোগাযোগের সামরিক ও অসামরিক যোগাযোগ কয়েক গুণ বাড়বে বলে মনে করা হয়।