আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরকীয়ার জেরে একের পর এক আত্মহত্যা, খুন৷ সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটল অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা নদীর উপর। প্রথমে খুন ও পরে নদীর উপরে থাকা শ্রীশৈলম জলাধারে স্বামীর দেহ ফেলে দেন এক স্ত্রী। জানা গিয়েছে, এভাবে তিনি অপরাধ লুকানোর চেষ্টা করেন। একইসঙ্গে অভিযুক্ত তাঁর প্রেমিক। দুজন মিলে ষড়যন্ত্র করে এই নৃশংস কাণ্ড ঘটান। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই এই খুনের রহস্যের কিনারা করল পুলিশ।
তেলেঙ্গানার ওয়ানাপারথি জেলার পুলিশ সুপার রাভুলা গিরিধর ঘটনার প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, "অত্যন্ত কৌশলে তদন্ত চলেছে৷ প্রযুক্তির সাহায্য ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই পুলিশ সরাসরি অপরাধীদের ধরে ফেলেছে।"
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত কুরুমূর্তি ওয়ানাপারথির বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পেশায় একজন নিরাপত্তারক্ষী। জানা গিয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর রাতের পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী কেকুলা নাগামণি এবং তাঁর প্রেমিক নন্দিমালা শ্রীকান্তের নাম মুল অভিযুক্ত হিসেবে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সুপারের কথায়, অভিযুক্ত দুজন মিলে ঠান্ডা মাথায় খুনের পরিকল্পনা তৈরি করে। জানা গিয়েছে ২৫ অক্টোবর রাতে নাগামণি ও শ্রীকান্ত নাকি কুরুমূর্তিকে জোর করে মদ খাইয়ে দেন। এরপর শ্বাসরোধ করে নৃশংসবাবে তাঁকে মেরে ফেলা হয়।
জানা গিয়েছে এরপর দেহটি সরিয়ে ফেলতে তাঁরা একটি গাড়ি ভাড়া করেন। সেই গাড়িতে করে শ্রীশৈলম বাঁধের কাছে গিয়ে মৃতদেহটি ফেলে দিয়ে আসেন অভিযুক্তরা। পুলিশকে ভুল বোঝাতে এবং সন্দেহ এড়াতে নাগামণি পরে ওয়ানাপারথি টাউন থানায় স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার একটি অভিযোগও দায়ের করেছিলেন।
তবে এই খুনের ঘটনা লুকানোর চেষ্টা দ্রুতই ব্যর্থ হয়। নাগামণি ও শ্রীকান্তের গ্রেপ্তারের পর নিশ্চিত হওয়া যায় যে, অবৈধ সম্পর্কের কারণেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই খুন করা হয়েছে। ঘটনার জেরে এসপি গিরিধর বলেন, "অপরাধীরা যতই চালাকি করুক না কেন, সত্য একদিন না একদিন বেরিয়ে আসবেই। কেউই আইনের হাত থেকে বাঁচতে পারে না।"
অন্যদিকে, পারিবারিক বিবাদের জেরে আরেক ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। ঘটনাটি ঘটে হামিরপুরে। এক যুবক তাঁর ২৪ বছর বয়সি স্ত্রীকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নৃশংসতার এখানেই শেষ নয়। খুনের পর অভিযুক্ত তার তিন বছরের শিশুসন্তানকে মায়ের লাশের সঙ্গেই ঘরে তালা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ রবিবার এই খবর জানিয়েছে। এই ঘটনা জানাজানি হতেই তোলপাড় চারিদিক।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম মইনউদ্দিন৷ সে সরকারি রেশন ডিলার। বিবাদের জেরে সে তার স্ত্রী রোশ্নিকে পিটিয়ে খুন করে। খবর অনুযায়ী, মউদাহা থানা এলাকার একটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, বছর চারেক আগে মইনউদ্দিন ভালোবাসে রোশ্নিকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু পরে তাদের মধ্যে নানা খুটিনাটি বিষয় নিয়ে বিবাদ লেগে থাকত।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র ঝগড়া শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় রাগের মাথায় মইনউদ্দিন তার স্ত্রীর ওপর লোহার রড নিয়ে চড়াও হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় ঘটনাস্থলেই রোশ্নির মৃত্যু হয়।
রবিবার সকালে তালা দেওয়া ঘর থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পান পরিবারের সদস্যরা। এর পরই তাঁরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। ভিতরে গিয়ে তাঁরা যা দেখেন, তাতে আঁতকে ওঠেন সকলে৷ ছোট্ট শিশু তার মায়ের রক্তমাখা দেহের পাশে বসে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।
ঘটনার জেরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মনোজ কুমার গুপ্ত জানিয়েছেন, "তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
