আজকাল ওয়েবডেস্ক: আধ্যাত্মিক শিক্ষার জন্যে গুরুকুলে ভর্তি হয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হল এক নাবালিকা। দিনের পর দিন যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছে সে। যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছে গুরুকুল প্রধান ও এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। যৌন হেনস্থার পাশাপাশি খুনের হুমকি দেওয়া হত বলেও অভিযোগ জানিয়েছে নাবালিকা ছাত্রী।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গুরুকুলের মধ্যেই যৌন হেনস্থার শিকার এক নাবালিকা। যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে গুরুকুল প্রধান ও এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রত্নগিরি জেলার ওয়ার্কারি গুরুকুলের প্রধান ভগবান কোকারে মহারাজ এবং শিক্ষক প্রীতেশ প্রভাকর কদমের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছে নাবালিকা ছাত্রী। দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
আধ্যাত্মিক শিক্ষার জন্য মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পড়ুয়ারা এই গুরুকুলে ভর্তি হয়। নির্যাতিতাও চলতি বছরে এই গুরুকুলে ভর্তি হয়। গত ১২ জুন ভর্তি হয় গুরুকুলে। প্রথম আটদিন সব ঠিক ছিল। তার পর থেকেই যৌন হেনস্থা শুরু করেন গুরুকুলের প্রধান ভগবান কোকারে মহারাজ।
নির্যাতিতা নাবালিকা জানিয়েছে, 'যখনই ঘরে একা থাকতাম, উনি ঢুকে পড়বেন। মারধর করেই আমার বুকে হাত দিত। এটাই ছিল হেনস্থার শুরু।' যৌন হেনস্থার কথা বাইরে ফাঁস ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে বলেও তিনি হুমকি দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে নাবালিকা। সে আরও জানিয়েছে, গুরুকুল প্রধানের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ জানাতে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শিক্ষক। বাইরে বিষয়টি ফাঁস করলেই, বাবা, ভাই ও তার প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।
সোমবার যৌন হেনস্থার ঘটনাটি বাবার কাছে ফাঁস করে নাবালিকা। এরপর থানায় অভিযোগ জানানো হয় গুরুকুল প্রধান ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো-র ১২ ও ১৭ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: চটি পরে স্কুলে! সহপাঠীদের সামনেই কষিয়ে চড় মারলেন প্রিন্সিপাল, অবসাদে মর্মান্তিক পরিণতি ছাত্রীর
প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, গত বছর আগস্ট মাসে পুনের এক স্কুলে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে প্রিন্সিপাল, পাঁচজন শিক্ষক এবং স্কুল কমিটির এক সদস্য রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ছাত্রীর বাবা পুলিশকে জানিয়েছেন, গত দুই বছর ধরে স্কুলের মধ্যে যৌন নির্যাতনের শিকার সে। মূল অভিযোগ পিটি শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তবে এই প্রথমবার নয়। ওই শিক্ষক আগেও যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন। দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর জেলেও বন্দি ছিলেন কিছুদিন। ছাড়া পেয়ে আবারও স্কুলে তাঁর কুকীর্তি বজায় ছিল।
ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, ওই শিক্ষক তাঁর মেয়েকে একাধিকবার যৌন নির্যাতন করেছেন। স্কুলে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বরং জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেও স্কুলে দাপট বজায় ছিল। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠলেও, তা বিশেষ গুরুত্ব দিতেন না প্রিন্সিপাল এবং স্কুল কমিটির সদস্যরা।
সম্প্রতি থানায় ওই শিক্ষক, প্রিন্সিপাল সহ মোট সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার বাবা। শুক্রবার মূল অভিযুক্ত শিক্ষক, প্রিন্সিপাল সহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে পকসো মামলা এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে।
আগস্ট মাসেই মহারাষ্ট্রের বদলাপুরে স্কুলের মধ্যে যৌন নির্যাতনের শিকার হয় দুই নার্সারি পড়ুয়া। সেই স্কুলেও অভিযোগ ছিল সাফাইকর্মীর বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তারির পরেও বদলাপুর কাণ্ডে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে মহারাষ্ট্র। একনাথ শিন্ডে সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামেন বিরোধীরাও। প্রতিবাদে সামিল ছিলেন শরদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরেরাও।
