আজকাল ওয়েবডেস্ক: হোমওয়ার্ক না করার শাস্তি! চার বছরের খুদে পড়ুয়াকে গাছে ঝুলিয়ে শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাছে ঝুলতে থাকে ওই পড়ুয়া। কান্নাকাটির পরেও তার রেহাই মেলেনি। যে ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঝড় গোটা রাজ্যে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুরাজপুরের নারায়ণপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই গ্রামের হংস বাহিনী বিদ্যা মন্দির স্কুলে চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছে চার বছরের এক খুদে পড়ুয়া। হোমওয়ার্ক না করার জন্য স্কুলের মধ্যে তাকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। এরপর তার জামাকাপড় খুলে, হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, স্কুলের মধ্যেই এক গাছে খুদে পড়ুয়াকে ঝুলিয়ে রেখে, কড়া শাস্তি দেন ওই দুই শিক্ষিকা। ঘটনার ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই তুমুল বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। স্কুলের পাশের এক বাড়ির ছাদ থেকে ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করেন এক যুবক। দেখা গেছে, নিরুপায় হয়ে গাছ থেকে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছিল ওই পড়ুয়া। গাছের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন কাজল সাহু ও অনুরাধা দেবাঙ্গন নামের দুই শিক্ষিকা।
স্কুলে নার্সারি থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা থাকে। সোমবার সকালে নির্দিষ্ট সময়েই স্কুলের দরজা খোলা হয়। নির্দিষ্ট সময়েই ক্লাস শুরু হয়। সেই সময় নার্পাসারি পড়ুয়াদের ঘরে ছিলেন কাজল সাহু। সকলের হোমওয়ার্ক দেখছিলেন। সকলের মধ্যে শুধুমাত্র একজন পুরো হোমওয়ার্ক করে আসেনি। সেই ছাত্রের উপরেই রাগে ফুঁসতে থাকেন তিনি।
রাগের মাথায় খুদে পড়ুয়াকে ক্লাস থেকে বের করে দেন। এরপর তার শার্টের সঙ্গে দড়ি বেঁধে স্কুল প্রাঙ্গণের একটি গাছে ঝুলিয়ে দেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেভাবেই গাছ থেকে ঝুলছিল সে। চিৎকার করে কান্নাকাটি করে তাকে নামানোর জন্য আর্জি জানায় ছাত্র। কিন্তু তাতেও তাকে নামিয়ে নেননি। ঘটনাটি ঘিরে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ উগরে দিয়েছে পড়ুয়ার পরিবার। এই ঘটনার পর দুই শিক্ষিকার দোষ স্বীকার করে কড়া পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। দ্রুত এই ঘটনার তদন্ত শেষ করে পদক্ষেপ করবেন তাঁরা।
গত সপ্তাহে অন্য এক রাজ্যে আরও ভয়াবহ এক ঘটনা ঘটেছিল। স্কুলে পৌঁছতে সামান্য দেরি হয়েছিল। এর জেরেই কড়া শাস্তি খুদে ছাত্রীকে। স্কুল প্রাঙ্গণে ১০০ বার ওঠবোস করানো হল তাক। নির্মম শাস্তির জেরে স্কুলেই জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়ে সে। কিছুক্ষণেই মর্মান্তিক পরিণতি ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে শিশু দিবসে। ভাসাইয়ের শ্রী হনুমন্ত বিদ্যা মন্দির হাই স্কুলে। শুক্রবার স্কুলে ১০ মিনিট দেরিতে পৌঁছনোর জন্য তাকে ১০০ বার ওঠবোস করানো এক শিক্ষক। ১০০ বার ওঠবোস করার পরেই কোমরে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয় ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীর।
জানা গেছে, সেদিন শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে স্কুল থেকে বাড়িতে ফিরে আসে ১২ বছরের নাবালিকা। কিন্তু ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপর দ্রুত নালাসোপারার এক হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতেই মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ছাত্রীকে। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তার।
মৃত ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, স্কুলে শিক্ষকের নির্মম শাস্তির জেরেই তার মৃত্যু হয়েছে। ১০০ বার ওঠবোস করার সময় কাঁধেই ছিল তার স্কুল ব্যাগ। যে কারণে আরও যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করে সে। এ ঘটনার পরেই স্থানীয়রা ও অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। দ্য মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ না করা পর্যন্ত স্কুল চালু করা যাবে না।
