আজকাল ওয়েবডেস্ক: নিয়মমাফিক কাজ করছিলেন কর্মীরা। স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল ট্রেনটি। সেই ট্রেনটিই পরিষ্কার করছিলেন কর্মীরা। হঠাৎ ট্রেনের শৌচালয়ে ঢুকেই সকলের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। কারণ, ট্রেনের শৌচালয়ের ডাস্টবিন থেকে তাঁরা উদ্ধার করেন পাঁচ বছর বয়সি এক শিশুর নিথর দেহ। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বইয়ের এক স্টেশনে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে কুরলার লোকমান্য তীলক টার্মিনাসে দাঁড়িয়েছিল কুশিনগর এক্সপ্রেস (২২৫৩৭)। ওই ট্রেনের এসি কোচের শৌচালয় পরিষ্কার করছিলেন রেলের সাফাই কর্মীরা। সেই সময়ে ওই শৌচালয়েথ্র ডাস্টবিনে তাঁর নজর পড়ে। সেই ডাস্টবিনকে থেকে উদ্ধার হয় পাঁচ বছর বয়সি শিশুর দেহ। 

 

সাফাই কর্মীরা তড়িঘড়ি করে স্টেশন ম্যানেজমেন্টকে জানান। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ও রেলের আধিকারিকরা। ঘটনাটি ঘিরে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, শুক্রবার রাতে শিশুটির মা গুজরাটের সুরাটে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নিজের তুতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ ছিল, ২৫ বছর বয়সি তুতো ভাই বিকাশ সাহ তাঁর সন্তানকে অপহরণ করেছে। 

 

এদিকে কুশিনগর এক্সপ্রেস উত্তরপ্রদেশের লোকমান্য তীলক টার্মিনাস ও গোরখপুরের মধ্যে দিয়ে চলাচল করে। রেল পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা প্রতিটি স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। কীভাবে শিশুটিকে খুন করা হয়েছে, তা তদন্ত করতে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কীভাবে ট্রেনের টয়লেটের মধ্যে ডাস্টবিনে তার দেহটি রাখা হল, ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

 

আরও পড়ুন: 'কেন চলে গেলে?', পণের জন্য স্ত্রীর গায়ে আগুন দিয়েও শান্তি হয়নি, আত্মহত্যার গল্প সাজাতে আবেগপ্রবণ পোস্ট স্বামীর

 

প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই আরও একটি শিশু মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল মহারাষ্ট্রে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছিল মহারাষ্ট্রের পারভানিতে। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সাড়ে ছ'টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পাথরি-সেলু সড়কের উপরে। চলন্ত বাসে ১৯ বছরে তরুণী সন্তান প্রসব করেন। এরপর স্বামীর সাহায্য নিয়ে সদ্যোজাতকে সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে, জানলা দিয়ে রাস্তায় ছুড়ে ফেলেন। 

 

তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, রীতিকা ধেরে নামের ওই তরুণী এবং তাঁর স্বামী আলতাফ শেখ পুনে থেকে পারভানির দিকে যাচ্ছিল। রীতিকা ও আলতাফ গত দেড় বছর ধরে পুনেতে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। তাঁরা আদতে পারভানির বাসিন্দা ছিলেন। এদিন পারভানিতেই দু'জনে একসঙ্গে ফিরছিলেন। 

 

সন্ত প্রয়াগ ট্রাভেলস সংস্থার স্লিপার কোচের বাসে উঠেছিল দম্পতি। চলন্ত বাসের সিটে বসেই সন্তান প্রসব করেছিলেন। কেউ কেউ কান্নার আওয়াজ শুনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে সেই কান্নার আওয়াজ থেমে যেতেও দেখেন। একমাত্র বাসের চালক খেয়াল করেছিলেন, চলন্ত বাস থেকে ভারী কিছু ছিটকে রাস্তায় পড়ে গিয়েছে। বিষয়টি খেয়াল করেই আলতাফকে জিজ্ঞেস করেন বাসের চালক। উত্তরে তিনি বলেন, স্ত্রী বমি করেছিলেন। বাসে যেতে যেতে অস্বস্তি বোধ করছিলেন। সেই ব্যাগটিই বাইরে ফেলে দিয়েছেন। 

 

এদিকে ততক্ষণে ১১২ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে বিষয়টি পুলিশে জানিয়ে দেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা সেই মহিলা। সঙ্গে সঙ্গে সেই বাসের খোঁজ চালিয়েও মাঝ রাস্তায় দাঁড় করানো হয়। দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আটক করে পুলিশ। জেরায় তাঁরা সবটাই স্বীকার করে নেন। দম্পতি জানায়, তারা অত্যন্ত গরিব। নিজেদের খাবার জোগাড় হয় না দু'বেলা। সন্তানের জন্ম দিলেও, তাকে খাওয়ানোর মতো আর্থিক অবস্থা তাদের নেই। এমনকী সন্তানের দেখভাল করার ক্ষমতা না থাকার জন্যেই এভাবেই মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। 

 

রীতিকা দাবি করেছেন, আলতাফ তাঁর স্বামী। কিন্তু বিবাহের কোনও প্রমাণ তাঁরা কেউই দেখাতে পারেননি। এই ঘটনায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৯৪(৩) এবং ৫ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। রীতিকাকে হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ।