আজকাল ওয়েবডেস্ক: হাসপাতালে ঢুকে আইসিইউ-তে শুয়ে থাকা রোগীকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে চলে গেল পাঁচ ব্যক্তি। না, কোনও সিনেমার দৃশ্য নয়। বাস্তবে এইরকমই ঘটেছে বিহারের রাজধানী পাটনায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রশ্নের মুখে ভোটমুখী রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা।

পুলিশে জানিয়েছে, পাটনা শহরের রাজা বাজার এলাকার পারস হাসপাতালে এই গুলি চালানোর হাড়-হিম ঘটনা ঘটে। বক্সার জেলার একটি খুনের মামলার আসামি চন্দন মিশ্র বেউর জেল থেকে মেডিকেল প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ডজন খানেক খুনের মামলা রয়েছে। বক্সারের জেলে বন্দি ছিলেন তিনি। পরে তাঁকে ভাগলপুরের জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। সম্প্রতি চন্দনকে চিকিৎসার জন্য পারস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

হাসপাতালের মধ্যেকার একটি ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, পারস হাসপাতালের করিডোরে পাঁচজন সশস্ত্র ব্যক্তি চন্দন মিশ্রের ঘরে ঢুকছেন। তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে। হামলার পর, পাঁচজন হামলাকারীই হাসপাতাল চত্বর থেকে পালিয়ে গেল। চন্দন মিশ্রের শরীরে একাধিক গুলি লেগেছে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

?ref_src=twsrc%5Etfw">July 17, 2025

পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং বক্সার পুলিশের সহায়তায় দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করার জন্য তল্লাশি শুরু করেছে। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের নিরাপত্তায় সম্ভাব্য ত্রুটি এবং হাসপাতালের রক্ষীদের দুষ্কৃতীদের সঙ্গে কোনও যোগসাজশ ছিল কিনা তাও তারা তদন্ত করছেন।

সেন্ট্রাল রেঞ্জ (পাটনা) এর ইন্সপেক্টর জেনারেল জিতেন্দ্র রানা সাংবাদিকদের বলেন, "চন্দন মিশ্র নামে এক অপরাধীকে চিকিৎসার জন্য পারস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংয়ের সদস্যরা তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছে। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমরা এই দিকটিও তদন্ত করব।" 

আরও পড়ুন-  বিয়ের প্রতিশ্রুতি, শারীরিক সম্পর্ক: 'আপনি কি ধোয়া তুলসীপাতা?' পুরুষ সঙ্গীকে জামিন দিয়ে মহিলাকেই কড়া ধমক সুপ্রিম কোর্টের!

এই ঘটনায় রাজনৈতিক আকছাআকছি তুঙ্গে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারকে রাজ্যে ক্রমবর্ধমান অপরাধ রোধে ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেছে। ক্ষমতাসীন সরকারের তীব্র সমালোচনা করে পূর্ণিয়ার সাংসদ পাপ্পু যাদব বলেন, "আমি রাজ্যপালকে বিহারে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার জন্য অনুরোধ করব। নার্স, ডাক্তার - কেউই এখানে নিরাপদ নয়। এখানে সরকারই, অপরাধী এবং মাফিয়াদের আশ্রয় দেয়। বিহারে কোনও প্রশাসন নেই।" 

আরজেডি নেতা মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি একই রকম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, রাজ্য 'গুন্ডা রাজ' চলছে। তিনি বলেন, "অপরাধীরা আর পুলিশকে ভয় পায় না। রাজ্য সরকার নীরব থাকা সত্ত্বেও অপরাধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। বিহারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে।" 

এই ঘটনায় পুলিশ এখনও কোনও গ্রেপ্তার করেনি।