আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারের ভাগলপুর জেলায় ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন কানওয়ারিয়া যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন বলে খবর মিলেছে। ঘটনার জেরে আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন। সূত্রে জানা গিয়েছে রবিবার গভীর রাতে, জয়েষ্টগৌর নাথস্থান যাওয়ার পথে একটি ডিজে সাউন্ড সিস্টেম লাগানো গাড়ি উচ্চ ভোল্টেজের বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে এসে আচমকা উল্টে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে রাত প্রায় ১২টা ৫ মিনিটে। এই কানওয়ারিয়া যাত্রীরা সুলতানগঞ্জ থেকে গঙ্গার পবিত্র জল সংগ্রহ করে শ্রাবণী মেলার শেষ সোমবারের দিন পূজো দিতে যাচ্ছিলেন। এই বার্ষিক তীর্থযাত্রায় প্রতিবছর হাজার হাজার ভক্ত অংশ নেন।
ঘটনার জেরে ভাগলপুরের এসএসপি হৃদয়কান্ত জানান, 'একটি ডিজে গাড়ি বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে এসে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।' তিনি আরও জানান, আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার বর্তমানে ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন এবং গাড়িচালককে খুঁজে বের করার জন্য তল্লাশি চলছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার আগে গাড়িটি কিছুক্ষণের জন্য কাদায় আটকে গিয়েছিল। পরে চালক গাড়িটিকে কাদা থেকে বের করে আনলে গাড়ির উপরে বসানো ডিজে সাউন্ড সিস্টেমটি নিচু হয়ে ঝুলে থাকা বিদ্যুতের তারে লেগে যায়। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটি ভারসাম্য হারিয়ে পাশের একটি খালে উল্টে পড়ে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় গাড়িটিতে মোট ৯ জন কানওয়ারিয়া ছিলেন। গাড়ির পাশে আরও কয়েকজন যাত্রী হাঁটছিলেন, যাঁরা একইভাবে ডিজে সাউন্ড সিস্টেম সহ তীর্থযাত্রায় অংশ নেন। এই ঘটনার জেরে পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। দুর্ঘটনার সময় সুরক্ষা বিধিনিষেধ মানা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশেও এমনই এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বুদায়ুঁ জেলার উঝানি এলাকায় জুলাই মাসের এক বিকেলে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা ঘটে। মর্মান্তিক এই ঘটনার জেরে ১৪ বছর বয়সী এক কানওয়ারিয়া তরুণ নিহত হন। বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কানওয়ার যাত্রায় অংশ নেওয়া একটি দল কচলা ঘাট থেকে গঙ্গাজল সংগ্রহ করে ট্র্যাক্টর-ট্রলিতে করে ফিরছিল। পথে ক্লান্ত হয়ে পড়ায় তারা রাস্তার ধারে তাদের গাড়ির পাশে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। এমন সময়ে ভয়াবহ দু্র্ঘটনাটি ঘটে৷
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত তরুণ অঙ্কিত। বরেলি জেলার বাসিন্দা সে। ঘটনার দিন সেও ওই দলের একজন সদস্য ছিল। বিশ্রাম নেওয়ার সময়, আরেকটি কানওয়ারিয়া দল, যারা ট্র্যাক্টর-ট্রলিতে করেই আসছিল, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অঙ্কিতদের ওপর উঠে যায়। ঘটনাস্থলেই অঙ্কিতের মৃত্যু হয়। তার আরও কয়েকজন সঙ্গী গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়৷ এরপর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আবার চলতি বছরের জুলাই মাসে রাজস্থানে দুই কানওয়ার যাত্রী মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে আলওয়ার জেলার বীচগঞ্জা গ্রামে। সূত্রে জানা গিয়েছে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি বুধবার অর্থাৎ ২৩ জুলাই ঘটেছে। দুইজন কানওয়ারিয়া নির্মমভাবে প্রাণ হারান। একই ঘটনার জেরে আরও প্রায় ৩০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ জানিয়েছে, একটি ট্রাক আচমকা ঝুলন্ত বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে আসার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে যখন কানওয়ার যাত্রীদের একটি দল এবং স্থানীয় কিছু বাসিন্দা গ্রামের চারপাশে 'পরিক্রমা' (পারিক্রমা) করছিলেন। তাঁদের সঙ্গে থাকা একটি ট্রাক রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকালীন ঝুলে থাকা বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে আসে। এর ফলে অনেকেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
