আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাড়ির সামনেই বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করছিল আট বছরের নাবালক। খেলতে খেলতেই হল মর্মান্তিক পরিণতি।‌ বল কুড়োতে গিয়ে ঝলসে গেল সে। বাড়ির সামনেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল নাবালক। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া এলাকায়। বিদ্যুৎ দপ্তরের গাফিলতির অভিযোগে সরব স্থানীয় বাসিন্দারা। 

জানা গেছে, বাড়ির সামনেই বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলছিল ওই নাবালক। একটি বল ছিটকে পড়ে ট্রান্সফরমারের কাছে। সেখান থেকেই বলটি কুড়োতে গিয়েছিল সে। সেই ট্রান্সফরমারে হাত পড়তেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাবালক। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে।‌ রবিবার সকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ক্রিকেট খেলার সময়েই মর্মান্তিক পরিণতি হয় নাবালক। ক্রিকেট বল কুড়োতে গিয়ে বাড়ির পাশেই ট্রান্সফরমারে হাত পড়ে যায় তার। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সেখানেই লুটিয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি স্থানীয়রা ও নাবালকের মামা ছুটে আসেন। তারাই দ্রুত তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা নাবালককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

আরও পড়ুন: হাসপাতালে মৃত্যুফাঁদ! হঠাৎ অক্সিজেনের ঘাটতি, কয়েক মিনিটের মধ্যে পরপর তিন রোগীর মৃত্যু

স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্রান্সফরমারের ক্রুটির কারণে গত কয়েক মাসে একাধিকবার বিদ্যুৎ দপ্তরে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তার সত্ত্বেও কোনও সমাধান হয়নি। দু'বছর ধরে ট্রান্সফরমারের গেটটি খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। অতীতে এই ট্রান্সফরমারের সংস্পর্শে এসে ১৪টি গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে। 

নাবালকের বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনাটি জানিয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরে যোগাযোগ করা হয়েছিল। নাবালককে সেখান থেকে বের করে আনার পরে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ দপ্তরের কোনও আধিকারিক ঘটনাস্থলে আসেননি। বারবার অভিযোগ জানিয়েও, ট্রান্সফরমারের ক্রুটির সমাধান করেননি কেউ। এদিকে ঘটনাটি ঘিরে থানাতেও কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি মৃত নাবালকের পরিবার।‌ 

প্রসঙ্গত, রবিবারের পর সোমবারেও যোগীরাজ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার ভোররাতে উত্তরপ্রদেশের বারাবঁকি জেলার আওসানেৎশ্বর মহাদেব মন্দিরে ভয়াবহ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল অন্তত দুই জন ভক্তের। আহত হয়েছেন আরও ১৯ জন। পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৩টা নাগাদ মন্দিরে জড়ো হওয়া ভক্তদের উপর আচমকা একটি বিদ্যুতের তার পড়ে যায়, যার ফলে হুড়োহুড়ি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

জেলা শাসক শশাঙ্ক ত্রিপাঠী জানান, “সোমবার শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবারে দর্শনের জন্য ভোর থেকেই ভক্তরা জমা হয়েছিলেন। সেই সময় কিছু বানর ওভারহেড বৈদ্যুতিক তারে লাফাতে থাকে, যার ফলে পুরনো ও ক্ষয়প্রাপ্ত তারটি ছিঁড়ে পড়ে টিনের ছাউনির ওপর। ছাউনিতে কারেন্ট ছড়িয়ে পড়ে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন অনেকেই।” পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে একজন হলেন মুবারকপুরা গ্রামের বাসিন্দা ২২ বছর বয়সি প্রশান্ত। অপর ব্যক্তির পরিচয় এখনও জানা যায়নি। দু'জনেরই মৃত্যু হয় ত্রিবেদিগঞ্জ কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।

মন্দির চত্বরে পুলিশ বাহিনী আগে থেকেই মোতায়েন ছিল। ঘটনার পরপরই উদ্ধারকার্য শুরু করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনার তীব্র নজর নিয়েছেন এবং আহতদের চিকিৎসায় তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।