আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাঝ রাতে হঠাৎ বিপত্তি। আচমকাই বন্ধ হয়ে গেল অক্সিজেন প্লান্ট। অক্সিজেনের ঘাটতিতে একাধিক রোগীর চরম পরিণতি হল। যা ঘিরে রোগীদের পরিবার তুমুল বিক্ষোভ দেখায়। হাসপাতালে অক্সিজেনের ঘাটতিতে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে তিন রোগীর মৃত্যু ঘিরে চাপের মুখে পাঞ্জাবের আম আদমি পার্টির সরকার।
জানা গেছে, তিন রোগীই গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন তাঁরা। মাঝ রাতে হঠাৎ অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে। টানা ১০ থেকে ১৫ মিনিট অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ ছিল ওই ওয়ার্ডে। এরপরই কয়েক মিনিটের ব্যবধানে তিন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যদিও ঘটনাটির পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ পাঞ্জাবের আপ সরকার।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে পাঞ্জাবের জলন্ধরে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার মাঝ রাতে জলন্ধরের সিভিল হাসপাতালে। ওই হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন কয়েকজন রোগী। তিন রোগীই অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন। অক্সিজেনের ঘাটতিতে রাতেই তিন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
তিন রোগীর মৃত্যুর পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে তাঁদের পরিবার। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, অক্সিজেন প্লান্টে আগেই যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল। সেই যান্ত্রিক ত্রুটি সংশোধন করা হয়েছে দ্রুত। মৃত রোগীদের শারীরিক অবস্থা আগে থেকেই আশঙ্কাজনক ছিল। অক্সিজেনের ঘাটতিতে তাঁদের মৃত্যু হয়নি। অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণের কয়েক মিনিট পরে তিন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে পাঞ্জাবের স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলবীর সিং ইতিমধ্যেই হাসপাতালটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। মৃত তিন রোগীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেছেন, 'তিন রোগীই আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থাও সঙ্কটজনক ছিল। অক্সিজেন প্লান্টটি কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরেই ফের অক্সিজেন সরবরাহ শুরু হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে অক্সিজেনের সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। রোগীরা একসঙ্গে মারা যাননি। রাতেই বেশ কিছুক্ষণের ব্যবধানে তিনজনের মৃত্যু হয়েছিল। মৃতদের মধ্যে একজন মাদকাসক্ত ছিলেন, একজনের ফুসফুস বিকল হয়ে গিয়েছিল, আর একজনের একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে। চণ্ডীগড় থেকে চিকিৎসকদের একটি টিম এসে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট পেশ করা হবে।'
অর্চনা নামের এক তরুণীর মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের তরফে হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে জানানো হয়েছে, গত সাতদিন ধরে এই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। একাধিকবার অক্সিজেন মেশিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। ওরা বিষয়টিকে গুরুত্বই দেয়নি। গতকাল রাতে আবারও মেশিন খারাপ হয়ে যায়। অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। অক্সিজেনের ঘাটতিতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এই ঘটনার পর চিফ মেডিক্যাল অফিসার ড. বিনয় কুমার জানিয়েছেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই রাতে অক্সিজেন সরবরাহ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ ছিল। ব্যাকআপ সিলিন্ডার দিয়ে সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছিল। পাঁচ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহ শুরু হয়ে যায়। রোগীরা শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণেই মারা গেছেন। অক্সিজেনের ঘাটতিতে নয়। ঘটনাটি ঘিরে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চলছে।
