আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীপাবলি ও ছটপুজো উপলক্ষে যাত্রীদের বাড়তি ভিড় সামলাতে উত্তর পশ্চিম রেলওয়ে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে। উৎসব সিজনে যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে মোট ৪৪ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়েছে, যা চলবে মুম্বই, পুনে, হাওড়া এবং বিহারের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলো থেকে ও সেদিকে।
 
 উত্তর পশ্চিম রেলওয়ের প্রধান জনসংযোগ আধিকারিক ক্যাপ্টেন শশী কিরণ জানিয়েছেন, “দীপাবলি ও ছট উৎসবের জন্য আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। বর্তমানে ৪৪ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন রুটে যেমন মুম্বই, পুনে, হাওড়া ও বিহারের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে। প্রয়োজনে আরও বিশেষ ট্রেন চালানোর বিষয়ে আমরা পর্যালোচনা করছি। অনুমোদন মিললেই অতিরিক্ত ট্রেন পরিচালনা করা হবে।”
 
 তিনি আরও জানান, যাত্রীদের চাপ সামলাতে এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত প্রায় ৬০টি ট্রেনে ১৭৪টি অতিরিক্ত কোচ সংযুক্ত করা হয়েছে। বড় স্টেশনগুলিতে—যেমন জয়পুর—বিশেষ হোল্ডিং এরিয়া তৈরি করা হয়েছে, যাতে প্ল্যাটফর্মে অতিরিক্ত ভিড় না হয়।
আরও পড়ুন: পৃথিবীতে গাছের জন্ম রয়েছে ওদের হাতে, অবহেলা নয়-যত্নে রাখুন
 
 জনসচেতনতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
 
 ক্যাপ্টেন কিরণ বলেন, “আমরা এনজিও, স্কাউট ও গাইড সদস্যদের পাশাপাশি রেলওয়ে প্রটেকশন ফোর্সের অতিরিক্ত কর্মী নিয়োজিত করেছি। যাত্রীরা যেন সুষ্ঠুভাবে ট্রেনে উঠতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে নির্ধারিত সময়ে স্টেশনে পৌঁছাতে; আগে এলে তারা যেন নির্দিষ্ট হোল্ডিং এরিয়াতে অপেক্ষা করেন। স্টেশনের প্রবেশ ও নির্গমনের নিয়মিত পয়েন্টগুলোই খোলা থাকবে, প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে, তবে বিশেষ ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “এই ব্যবস্থাগুলো ভিড় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে এবং যাত্রীরা নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করতে পারবেন।”
 
 সেন্ট্রাল রেলওয়ের উদ্যোগ
 
 একই দিনে সেন্ট্রাল রেলওয়েও উৎসব উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতির ঘোষণা করেছে। সংস্থার মুখপাত্র স্বপনিল নিলা বলেন, “দীপাবলি ও ছট উৎসব উপলক্ষে যাত্রীদের পরিবারের সঙ্গে উৎসব পালন করতে সাহায্য করার জন্য মোট ১,৭০২টি বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে। এই ট্রেনগুলো ছাড়বে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস, লোকমান্য তিলক টার্মিনাস, পুনে, কোলহাপুর ও নাগপুর থেকে।”
 
 এর মধ্যে ৮০০-রও বেশি ট্রেন চলবে উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রুটে। এছাড়াও, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে সংযোগের জন্যও একাধিক ট্রেন চালানো হবে।
 
 নিলা জানান, বড় স্টেশনগুলোয় অতিরিক্ত টিকিট কাউন্টার ও ৩,০০০ যাত্রীর ধারণক্ষমতাসম্পন্ন হোল্ডিং এরিয়া তৈরি করা হয়েছে, যেখানে থাকবে পানীয় জল, খাবার, শৌচাগার ও পাখার সুবিধা। মোবাইল UTS পরিষেবা ও অতিরিক্ত টিকিট কাউন্টার খোলা হয়েছে, যাতে অপেক্ষার সময় কমে।
 
 ভুয়ো ভিডিওর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ
এদিকে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিছু সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট পুরনো বা বিভ্রান্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। ইতিমধ্যে ২০টিরও বেশি এমন অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে, এবং তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালানোর জন্য বিশেষ সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।
 
 রেল কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা যাচাই না করে কোনো ভিডিও বা তথ্য শেয়ার না করেন এবং শুধুমাত্র ভারতীয় রেল মন্ত্রকের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলো—যেমন X, Facebook, Instagram ও YouTube-এর @RailMinIndia—থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপর নির্ভর করেন।
