আজকাল ওয়েবডেস্ক: বন্যাদুর্গত শ্রীলঙ্কার জন্য ত্রাণ পাঠাতে পাকিস্তানের বিমান ভারতের আকাশপথ ব্যবহার করতে চেয়েছিল। কিন্তু ভারত সেই অনুমোদন দেয়নি। একাধিক পাক সংবাদমাধ্যমে এমনটাই দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মানবিক কারণে দিল্লি যত দ্রুত সম্ভব অনুমতি দিয়েছে। 

পাকিস্তান, ভারতের কাছে ১ ডিসেম্বর দুপুর একটা নাগাদ অনুরোধ জানায়। সেখানে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার বন্যা-পরিস্থিতিতে সাহায্য পাঠানোর জন্য তাদের বিমানকে ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হোক। বিষয়টি মানবিক, তাই সহায়তার জন্য ভারত দ্রুত প্রক্রিয়া শুরু করে। বিকেল সাড়ে পাঁচটা মধ্যেই অনুমোদন দিয়ে দেয়। অর্থাৎ, মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যেই সবুজ সংকেত দেওয়া হয় পাকিস্তানকে।

ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় 'দিতওয়াহ'-র ধাক্কায় শ্রীলঙ্কায় এখনও পর্যন্ত ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত। বহু মানুষ আশ্রয় হারিয়েছেন। একাধিক জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশটির সরকার জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছে। এই বিপদের সময় প্রতিবেশী দেশগুলোর সাহায্য চেয়ে আবেদন জানায় কলম্বো।

পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ভারত ইতিমধ্যেই ত্রাণ পাঠাতে শুরু করেছে। নৌবাহিনী, বায়ুসেনা ও এনডিআরএফ- সব বাহিনীই 'অপারেশন সাগর বন্ধু'-র আওতায় উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ বিলিতে অংশ নিচ্ছে। খাদ্য, চিকিৎসা সামগ্রী, বিশেষ উদ্ধারকারী দল, জাহাজ- সবই পাঠানো হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা ডিসানায়েকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তিনি শ্রীলঙ্কার মানুষের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে, আরও সহায়তা পাঠানোর আশ্বাস দেন। 

ভারত সরকার জানিয়েছে, 'ভিশন মহাসাগর'-এর অধীনে 'ফার্স্ট রেসপন্ডার' হিসেবে কাজ করে এবং ভবিষ্যতেও প্রয়োজন অনুযায়ী শ্রীলঙ্কাকে সব ধরনের সহায়তা পাঠানো হবে। প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে ভারতের উদ্ধারকারী দল, নৌ সহায়তা এবং জরুরি সরবরাহের জন্য 'গভীর কৃতজ্ঞতা' প্রকাশ করেছেন, উল্লেখ করেছেন যে সারা দেশে এই প্রতিক্রিয়ার প্রশংসা করা হয়েছে।

চলতি বছর এপ্রিল মাসের পহেলগাঁও হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক কার্যত তলানিতে ঠেকেছে। একাধিক নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি পাক বিমানের জন্য ভারতের আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিল্লি। পাল্টা ভারতের জন্য একই নির্দেশ দেয় পাকিস্তানের সরকার। এতদিন এইভাবেই দিন কাটছিল। তবে সংকটের মুহূর্তে পাকিস্তানের ত্রাণবাহী বিমানকে দ্রুত অনুমতি দিয়ে ভারত আবারও প্রমাণ করল, মানবিক পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মতপার্থক্য কোন বাধা নয়।