আজকাল ওয়েবডেস্ক: লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের আগে পার্কিং লটে নিজেই বোমা তৈরি করেছিল দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডের মূলচক্রী তথা চিকিৎসক উমর মহম্মদ ওরফে উমর নবি নিজেই। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে তাদের প্রতিবেদনে এমন দাবিই করেছে।
গত ১০ নভেম্বর দিল্লির লালকেল্লার কাছে চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনে ১ নম্বর গেটের কাছে একটি হুন্ডাই আই২০ গাড়ি বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণের আঘাতে আশেপাশের আরও কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ১৩ জনের এবং আহত হন কমপক্ষে ২০ জন। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা যায় ঘাতক গাড়িটির চালক ছিলেন উমর। তদন্তে নেমে বিস্ফোরণের আগে উমরের গতিবিধির পরীক্ষার সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তদন্তকারীদের মনে উঠে আসে। সুনেহরি মসজিদের কাছে পার্কিংয়ে তিন ঘণ্টা কাটানোর সময় গাড়ির মধ্যে তিনি কী করেছিলেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, উমর বিকেল ৩টে ১৯ মিনিটে গাড়ি চালিয়ে লালকেল্লার কাছে সুনহেরি মসজিদের পার্কিংয়ে প্রবেশ করেছিলেন। সন্ধ্যা ৬টা ২৮ মিনিটে গাড়ি চালিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। বিস্ফোরণটি ঘটে সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিট নাগাদ। তদন্তে আরও বলা হয়েছে, পার্কিং লটে থাকাকালীন উমর একবারও গাড়ি থেকে নামেননি।
সূত্রের দাবি, তদন্তে এখন জানা গিয়েছে সেই সকালে দিল্লিতে প্রবেশের পর উমর তাঁর হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। তদন্তকারীদের ধারণা, আলোচনার বিষয় ছিল বিস্ফোরণের এলাকা। উমর ময়ূর বিহার এবং কনট প্লেস দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পুরনো দিল্লিতে যান। অবশেষে, লালকেল্লার কাছের পার্কিংটি বেছে নেওয়া হয়েছিল। আংশিকভাবে স্মৃতিস্তম্ভের প্রতীকী তাৎপর্যের কারণে।
কিন্তু উমর এবং তার হ্যান্ডলাররা এই বিষয়টি বিবেচনা করেনি যে সোমবার লালকেল্লা দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকে। পার্কিং এলাকাটি বেশিরভাগই খালি ছিল। তাই, পার্কিংয়ে বিস্ফোরণের পরিকল্পনাটি স্থগিত রাখা হয়েছিল। উমর এবং তাঁর হ্যান্ডলাররা তখন জনাকীর্ণ নেতাজি সুভাষ মার্গে বিস্ফোরণ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেয়, যার একদিকে লালকেল্লা এবং অন্যদিকে চাঁদনি চক।
তদন্তকারীদের মতে, উমর বিস্ফোরক তৈরির জন্য পার্কিংয়ে তিন ঘণ্টা সময় কাটিয়েছিলেন। কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি পার্কিং থেকে বেরিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি বিস্ফোরণ ঘটান, যার ফলে ১৩ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হন। তদন্তে দেখা গিয়েছে যে, ফরিদাবাদে ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় তাঁর সহযোগী ডাক্তার মুজাম্মিল এবং ডাক্তার শাহিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর উমর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি আশঙ্কা করেছিলেন যে তদন্তকারীরা তাঁর কাছে পৌঁছনো কেবল সময়ের ব্যাপার এবং তা হওয়ার আগেই বিস্ফোরণ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেন। একটি দ্রুত পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং ডাক্তার একটি বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে জাতীয় রাজধানীতে চলে যান।
