আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত সোমবারের দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে বিস্ফোরণে দু’কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়েছিল। শনিবার এমনটাই দাবি করল তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র একটি সূত্র। এনআইএ-র দাবি, ঘাতক হুন্ডাই আই২০ গাড়িটির চালক উমর উন নবি বোমা বানাতে ‘পারদর্শী’ ছিলেন।
এনআইএ-র ওই সূত্রটি জানিয়েছে, ফরেনসিক টিম এখন পর্যন্ত ৫২টিরও বেশি বিস্ফোরক নমুনা সংগ্রহ করেছে। যা পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে যে, উমর অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, পেট্রোলিয়াম এবং বিস্ফোরক পদার্থ ব্যবহার করে বিস্ফোরকটি তৈরি করেছিলেন। ফরেন্সিক তদন্তে আরও জানা গিয়েছে যে এই ধরনের বিস্ফোরক প্রায় ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে প্রস্তুত করা যেতে পারে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলিও তদন্ত করছে যে বিস্ফোরণের আগে উমর কেন তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কাছের একটি পার্কিং লটে ছিলেন।
দিল্লি পুলিশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে জানিয়েছিল, উমর বিকেল ৩টে ১৯ মিনিটে পার্কিং লটে প্রবেশ করেন। সন্ধ্যা ৬টা ২৮ মিনিটে বেরিয়ে যান। এর আধ ঘণ্টা পরেই তাঁর হুন্ডাই আই২০ গাড়িটি লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি ট্র্যাফিক সিগন্যালে বিস্ফোরিত হয়। যার ফলে ১২ জন নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হন। জনাকীর্ণ এলাকায় বিস্ফোরণটি হওয়ায় বেশ কয়েকটি গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত কাশ্মীরি ডাক্তার উমর প্রথমে লালকেল্লার পার্কিংয়ের কাছে বোমা বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেছিলেন। লালকেল্লা একটি পর্যটন এলাকা এবং এখানে একটি ব্যস্ত বাজারও রয়েছে। কিন্তু ফরিদাবাদে তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তার এবং বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধারের পর তিনি ‘আতঙ্কিত’ হয়ে পড়েন। লালকেল্লা যে সোমবার বন্ধ থাকে তা ভুলে গিয়েছিলেন। পার্কিং লটে পৌঁছনোর পর তিনি দেখেন যে কোনও ভিড় নেই। তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর, উমর নেতাজি সুভাষ মার্গে গাড়ি চালিয়ে বেরিয়ে যান। যার একদিকে লালকেল্লা এবং অন্যদিকে চাঁদনি চক। সেখানেই একটি ট্র্যাফিক সিগন্যালে গাড়িটি বিস্ফোরিত হয়।
তদন্তকারীদের দাবি, ‘হোয়াইট কলার’ সন্ত্রাসী মডিউলের বৃহত্তর তদন্তের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে উমরের দুই সহযোগী, আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসক হিসেবেও কর্মরত মুজাম্মিল আহমেদ এবং শাহিন সইদের গ্রেপ্তারির পর তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
লালকেল্লা বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ ঘোষণা করেছিল যে তারা একটি আন্তঃরাজ্য এবং আন্তর্জাতিক ‘হোয়াইট কলার’ জঙ্গি মডিউল ভেঙে দিয়েছে। যার সঙ্গে পাকিস্তান-ভিত্তিক জইশ-ই-মহম্মদ এবং আল-কায়েদা অনুমোদিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দের যোগসূত্র রয়েছে। পুলিশ আরও জানিয়েছিল, তারা ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করেছে এবং সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
