আজকাল ওয়েবডেস্ক: বহু বছরের প্রার্থনার পর সন্তানের মুখ দেখেছিল পরিবার। ছোট্ট ভুলেই এখন কপাল চাপড়াচ্ছেন। বাবা-মায়ের মাঝে শুয়েছিল সদ্যোজাত সন্তান। গভীর রাতে বাবা-মায়ের শরীরের চাপেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হল তার। মর্মান্তিক এই ঘটনায় হতবাক সকলেই। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। পুলিশ জানিয়েছে, বহু বছরের প্রার্থনার পর পুত্রসন্তানের জন্ম দেন এক যুবতী। এদিকে বাবা-মায়ের ছোট্ট ভুলেই ২৩ দিনের সদ্যোজাত সন্তানের মর্মান্তিক পরিণতি হল। ঘুমন্ত অবস্থায় বাবা-মায়ের শরীরের চাপে মৃত্যু হয়েছে তার। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে আমরোহা জেলার হাসানপুর থানার অন্তর্গত সিহালি জাগির এলাকায়। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার গভীর রাতে। বাবা ও মায়ের মাঝখানে শুয়েছিল সদ্যোজাত সন্তান। ঘুমন্ত অবস্থায় অসাবধানতাবশত সদ্যোজাতের উপরেই পাশ ফিরে শুয়ে পড়েন তাঁরা। বাবা-মায়ের শরীরের চাপে পিষে যায় সদ্যোজাত। 

ঘটনাটি টের পান পরেরদিন সকালে। গত ৮ ডিসেম্বর, সোমবার সকালে খাওয়াতে গিয়ে যুবতী দেখেন, সদ্যোজাতর কোনও জ্ঞান নেই। অনেকবার ডাকাডাকির পরেও সাড়া মেলেনি তার। তড়িঘড়ি করে সদ্যোজাতকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যান আসমা ও সাদ্দাম আব্বাসি নামের যুবতী ও যুবক। সেখানেই চিকিৎসকরা সদ্যোজাতকে মৃত ঘোষণা করেন। 

জানা গেছে, বিয়ের পর সাদ্দাম ও আসমা চার বছর ধরে সন্তানের জন্য প্রার্থনা করছিলেন। অবশেষে গত মাসে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন আসমা। সদ্যোজাতর মর্মান্তিক পরিণতির জন্য একে অপরকেই দায়ী করেন তাঁরা। যা ঘিরে হাসপাতালের মধ্যেই তুমুল বচসা শুরু হয় দু'জনের মধ্যে। চিকিৎসকদের অনুমান, শীতের রাতে কম্বলে জড়ানো ছিল সদ্যোজাত। অসাবধানতাবশত সেই কম্বলের মধ্যে চাপা পড়তে পারে সে। দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে সদ্যোজাতর। 

গত মাসে আরেকটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। সদ্যোজাত সন্তানের জন্মের কয়েক ঘণ্টা পর মায়ের হাতেই মর্মান্তিক পরিণতি হয় তার। হাসপাতালের মধ্যে সদ্যোজাত সন্তানকে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল মায়ের বিরুদ্ধে। সন্তানের জন্মের কয়েক ঘণ্টা পরেই, শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে মা। যে ঘটনায় শিউরে উঠেছেন সকলে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছিল রাজস্থানের চুরু জেলায়। শনিবার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে ৪০ বছর বয়সি গুড্ডু দেবী নামের এক যুবতী চুরু জেলার সরকারি হাসপাতালে পঞ্চম সন্তানের জন্ম দিয়েছিল। সদ্যোজাতর মুখ দেখে, বাড়ির আত্মীয়স্বজন হাসপাতালের অন্য ওয়ার্ডে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেই ফাঁকেই সদ্যোজাত সন্তানের শ্বাসরোধ করে খুন করে মা। 

পুলিশ আধিকারিক সুখরাম চোটিয়া জানিয়েছেন, আর্থিক অনটনে জেরবার ছিল গুড্ডু দেবী। সংসারের খরচ চালানোর মতো সামর্থ্য ছিল না তার। যা ঘিরে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিল সে। পাশাপাশি গুড্ডু দেবীর স্বামী তারাচাঁদ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী। পঞ্চম সন্তানের জন্মের পরেই আত্মীয়স্বজনদের জানিয়েছিল, আরেকটি সন্তানের দেখভাল করার মতো আর্থিক পরিস্থিতি নেই। 

শুক্রবার সকালে সদ্যোজাতকে দেখতে যান গুড্ডুর বোন ময়না দেবী। তখনই খেয়াল করেন, সদ্যোজাত নড়াচড়া করছে না। কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন চোখে পড়ে। তড়িঘড়ি করে চিকিৎসকদের খবর দেন তিনি। সদ্যোজাতর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এরপরেই ঘাতক মায়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পরবর্তীতে তাকে গ্রেপ্তার করে তারা।