আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিয়ের মরশুমকে নিশানা করে প্রতারণার নতুন অস্ত্র ব্যবহার করছে সাইবার অপরাধীরা। জানা যাচ্ছে, বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রের ডিজিটাল লিঙ্কের মাধ্যমে প্রতারণা করা হচ্ছে।

হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো ভুয়ো বিয়ের কার্ডে একবার ক্লিক করলেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হ্যাক হয়ে যাচ্ছে মোবাইল ফোন। আর ব্যবহারকারীর অজান্তেই খালি হয়ে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।

বিজনোর জেলার ধামপুরের বাসিন্দা ড. ওমপ্রকাশ চৌহান নিজের অজান্তেই এমন প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন। হোয়াটসঅ্যাপে একটি বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র লিঙ্ক পেয়ে সেটিতে ক্লিক করতেই তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৩১ হাজার টাকা উধাও হয়ে যায়।

চৌহানের অভিযোগ, হোয়াটসঅ্যাপে আসা লিঙ্কে ক্লিক করতেই তাঁর মোবাইলের ওপর থেকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হয়ে যায় এবং ব্যক্তিগত তথ্য সরাসরি ‘সাইবার ঠাকুর’ নামে এক প্রতারকের হাতে চলে যায়।

ঘটনাটি বুঝতে পেরে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এবং পরে বিজনোর সাইবার ক্রাইম থানাতেও অভিযোগ জানান। তদন্ত বর্তমানে চলছে।

সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ভুয়ো নিমন্ত্রণপত্র সাধারণ লিঙ্ক নয়, বরং APK ফাইল আকারে পাঠানো হয়। কেউ তা ডাউনলোড করলেই মোবাইল ফোনে একটি ভাইরাস সক্রিয় হয় এবং প্রতারকরা ভুক্তভোগীর ফোনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায়।

এরপর তারা সহজেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ইউপিআই অ্যাপ, পাসওয়ার্ড ও মোবাইল ডেটার ওপর দখল নেয়। হ্যাক হওয়ার পর সেই একই বিয়ের কার্ড লিঙ্ক আবার ভুক্তভোগীর পরিচিতদের কাছে পাঠিয়ে প্রতারণার পরিধি আরও বাড়ানো হয়।

এক সাইবার বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ডিজিটাল বিয়ের কার্ড আনন্দের মনে হলেও এখন এটি নতুন সাইবার প্রতারণার ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এক ক্লিকেই কোনও ব্যক্তির সঞ্চয় ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই অজানা লিঙ্ক গ্রহণে সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি।’

এই ধরনের একাধিক ঘটনার পর জনগণকে সচেতন করতে পুলিশ সতর্কবার্তা জারি করেছে। বিজনোর শহরের সহকারী পুলিশ সুপার (ASP) ড. কৃষ্ণ গোপাল বলেন, অজানা নম্বর থেকে আসা যেকোনও লিঙ্ক, ফাইল বা ডিজিটাল বিয়ে-কার্ড খুললেই বড় ক্ষতি হতে পারে।

তিনি মানুষকে APK ফাইল ডাউনলোড না করা, ওটিপি শেয়ার না করা, এবং সন্দেহজনক কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে সাইবার হেল্পলাইনে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। বিজনোর পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে ও জনসাধারণকে সচেতন করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তথ্যসমৃদ্ধ ভিডিও তৈরি করছে।