আজকাল ওয়েবডেস্ক:  বিহারের নাওয়াদা জেলার কাহুয়ারা, সিমরি ও চাকওয়াই গ্রামের অনেক যুবক জড়িয়ে পড়েছে এক অদ্ভুত ও অবিশ্বাস্য সাইবার প্রতারণায়, যা "অল ইন্ডিয়া প্রেগন্যান্ট জব সার্ভিস" নামে পরিচিত। ফেসবুকে একটি মহিলার ছবি সহ "আমাকে কল করো" শিরোনামের বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই ভেবেছিল যে, একটি মহিলাকে গর্ভবতী করার বিনিময়ে তাঁরা পাবেন ১৫ লাখ টাকা। এমনকি 'সফল' না হলেও, কয়েক লাখ টাকা নিশ্চিত পেমেন্টের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।

যেমন মুকেশ কুমার, একজন ২৭ বছর বয়সী শ্রমিক, এই প্রতারণার শিকার। তাঁর স্ত্রী যখন সন্তানসম্ভবা ছিলেন, তখন অতিরিক্ত আয়ের লোভে তিনি এই ফাঁদে পা দেন এবং তাঁর সঞ্চয়ের ৬,৪০০ টাকা হারান। প্রতারকরা পরে পুলিশ সেজে আরও টাকা দাবি করে। একই কেলেঙ্কারিতে পাটনার এক দর্জিও ৪,৪৭০ টাকা হারান।

যদিও এটা নতুন কিছু নয়। নাওয়াদা জেলা আগে থেকেই প্রতারণা ও কেলেঙ্কারির জন্য পরিচিত ছিল। তবে, এখন প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে এই ধরনের প্রতারণা এখন অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। সস্তা স্মার্টফোন এবং ভুয়ো সিম কার্ড ব্যবহার করে এই প্রতারকরা মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

এই চক্রের মূল হোতা মুনা কুমার নামে একজন, যিনি মাছের খামার গড়ার অজুহাতে ২৫ জন যুবককে সাইবার অপরাধের প্রশিক্ষণ দেন। পুলিশের মতে, এই চক্র এতই বিস্তৃত যে একাধিক গ্রামে তা ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও পুলিশ কিছু অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে, কিন্তু অনেকেই অধরা থেকে গেছে।

গ্রামের প্রধান, দীনেশ কুমার সিং, এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন, যদিও তিনি স্বীকার করেন যে মোবাইল ফোনে কী হচ্ছে তা জানা খুব কঠিন। গ্রামের লাইব্রেরি খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে যুবকরা সম্মানজনক কাজে ফিরে আসে।

তবে, গ্রামের সমাজ ব্যবস্থা এখন এতটাই বদলে গেছে যে, মোবাইলে বসে প্রতারণা করাকে অনেকেই এখন সাধারণ পেশা হিসেবে মেনে নিচ্ছে।