আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফা ভোটগ্রহণের প্রায় এক সপ্তাহ আগে বিহারের শাসকজোট ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) তাদের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেছে। শুক্রবার সকালে পাটনায় বিজেপি প্রধান জে পি নাড্ডা এবং মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এনডিএ-র ‘সংকল্প পত্র’ প্রকাশ করেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জোটের সিনিয়র নেতারা। এই জোটে বিজেপি, জেডিইউ, চিরাগ পাসওয়ানের এলজেপি এবং অন্যান্য দল রয়েছে।

ইস্তাহারে এনডিএ রাজ্যে এক কোটি সরকারি চাকরি প্রদানের বিশাল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়াও নারী ক্ষমতায়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এক কোটি মহিলাকে ‘লাখপতি দিদি’তে পরিণত করার উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যও নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বিহারে চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সাতটি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের বড় পরিকাঠামোগত পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। এনডিএ-র ইস্তেহারে ৫০ লক্ষ নতুন পাকা বাড়ি নির্মাণ এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় বিনামূল্যে রেশন, ১২৫ ইউনিট বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং সামাজিক সুরক্ষা পেনশন প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মত, এ বছর নির্বাচনে কর্মসংস্থান বড় বিষয় হতে চলেছে। এর আগে বিহারের বিরোধী জোট মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী মুখ তেজস্বী যাদব রাজ্যের প্রতিটি পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এনডিএ-ও একই রকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিহার থেকে প্রতি বছর বহু সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করতে অন্য রাজ্যে চলে যান। ফের নির্বাচিত হলে, এনডিএ বিহারের প্রতিটি যুবককে দক্ষতা-ভিত্তিক কর্মসংস্থান প্রদানের জন্য একটি দক্ষতা আদমশুমারি পরিচালনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইস্তাহারে বলা হয়েছে, বিহারের প্রতিটি জেলায় একটি করে ‘মেগা স্কিল সেন্টার’ তৈরি করা হবে। সেখানে যুব সম্প্রদায়কে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: দেশের ৫৩তম প্রধান বিচারপতি হলেন বিচারপতি সূর্য কান্ত, কবে থেকে দায়িত্ব নেবেন তিনি?

মুখ্যমন্ত্রীর মহিলা কর্মসংস্থান প্রকল্পের মাধ্যমে, মহিলাদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। এনডিএ এক কোটি ‘লাখপতি দিদি’ তৈরিরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যা কার্যকরভাবে মহিলাদের বার্ষিক এক লক্ষ টাকা আয় করার সুযোগ করে দেবে। জোট ‘মিশন কোটিপতি’-এর মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের কোটিপতিতে পরিণত করারও লক্ষ্যও নিয়েছে।

ইশতেহারে কৃষকদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি রয়েছে। সকল ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি, নতুন কারপুরী ঠাকুর কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পের আওতায় ৩,০০০ টাকা প্রদান করা হবে। এর ফলে কৃষকদের মোট সহায়তা ৬,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯,০০০ টাকা করা হবে। অন্যদিকে, জেলেদের জন্য সহায়তা ৪,৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯,০০০ টাকা করা হবে। সরকার রাজ্যের কৃষি-অবকাঠামোতে ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে।

এছাড়াও ঘোষণা করা হয়েছে, সাতটি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ এবং ৩,৬০০ কিলোমিটার রেলপথ আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি পাটনা, দারভাঙ্গা, পূর্ণিয়া এবং ভাগলপুরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং চারটি শহরে মেট্রো নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। আরও ১০টি শহরে বিমান যোগাযোগ সম্প্রসারণ করা হবে।
 
প্রতিটি জেলায় কারখানা এবং ১০টি নতুন শিল্প পার্ক নির্মাণও তাদের প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে। জোট ক্ষমতায় ফিরলে কমপক্ষে ১০০টি এমএসএমই পার্ক এবং ৫০,০০০ এরও বেশি কুটির শিল্প গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এনডিএ।