আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রথম দফার ভোট চলছে বিহারে। সকাল থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর মিলছিল। বেলা গড়াতেই একেবারে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী বিজয় কুমার সিনহার গাড়ি ঘিরে ফেলে চপ্পল এবং পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠে এসেছে। সঙ্গেই মুহুর্মুহু 'মুর্তাবাদ' স্লোগান।
জানা গিয়েছে, বিজয় কুমার খোরিয়ারি গ্রামে প্রবেশ করতে গেলে, ব্যাপক বাধার মুখে পড়েন তিনি। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, আরজেডি সমর্থকরা, বিয়জ কুমারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে, দুপুর ১টা পর্যন্ত ৪২.৩১% ভোটার ভোট দিয়েছেন। ১৮টি জেলার মধ্যে গোপালগঞ্জে ভোট পড়েছে ৪৬.৭৩%, ভোট দানের নিরিখে এই জেলা এগিয়ে রাজ্যের মধ্যে। লখিসরাই ৪৬.৩৭% এবং বেগুসরাই ৪৬.০২% ভোট পড়েছে। তবে তুলনায় ভোটের হার কম রাজধানী পাটনা্য। ৩৭.৭২% ভোট দিয়েছেন সেখানকার মানুষ। অন্যান্য জেলার মধ্যে রয়েছে, মুজাফফরপুর (৪৫.৪১%), সহরসা (৪৪.২০%), এবং মাধেপুরা (৪৪.১৬%), এবং রাঘোপুর (৪৩.৩%), তারাপুর (৪৪.৩৫%) এবং মোকামা (৪১.৭৮%)।
২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় চলছে ভোটগ্রহণ। বৃহস্পতিবার ৬ নভেম্বর প্রথম দফায় ১২১ কেন্দ্রে চলছে ভোট। দ্বিতীয় দফায় ১১ নভেম্বর ভোট হবে বাকি ১২২ কেন্দ্রে। ইতিমধ্যেই ভোট দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, লালুপ্রসাদ যাদব, স্ত্রী রাবড়ি দেবী সহ লালুর দুই পুত্র। যাঁদের প্রথম দফাতেই ভাগ্য নির্ধারণ হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালেই বিহার-ভোট নিয়ে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স হ্যান্ডলে হিন্দিতে লেখেন, ‘গণতন্ত্রের উৎসবে আজ বিহারে প্রথম পর্যায়ের ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এই পর্বে সকল ভোটারের কাছে আমার আবেদন, আপনারা পূর্ণ উদ্যমে ভোট দিন।’ ওই পোস্টেই বিহারের প্রথমবারের ভোটার যাঁরা, তাঁদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে ভোটারদের উদ্দেশে মোদির বার্তা, ‘মনে রাখবেন আগে ভোট, পরে আহার–বিশ্রাম।’ পাশাপাশি বিহারে এনডিএ অভূতপূর্ব সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বলে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বিহারে গণতন্ত্রের বৃহৎ উৎসবে মানুষের মধ্যে দারুণ উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে। এই ঘটনা ইঙ্গিত করছে যে, বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ অভূতপূর্ব সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে।’ এদিকে, দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে বৃহস্পতিবার বিহারের ফরবীসগঞ্জ এবং আরারিয়ায় দু’টি জনসভা করবেন মোদি।
রাঘোপুর থেকে ভোটে দাঁড়ানো লালু–পুত্র তেজস্বী যাদবের বার্তা দিয়েছেন, ‘আপনার ভোট বিহারের উন্নতির পথকে প্রশস্ত করবে। আগে ভোট। অন্য কাজ কিছু সময় পরেও করা যেতে পারে।’ ভোট দিয়ে বেরিয়ে লালু–পুত্র আরও জানান, তিনি বিরোধী জোট ‘মহাগঠবন্ধন’–এর জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। আগামী ১৪ নভেম্বর নতুন সরকার তৈরি হবে বলেও দাবি করেন বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বী। অন্যদিকে, স্ত্রী রাবড়ি দেবীকে নিয়ে পাটনার একটি বুথ থেকে ভোট দিয়ে বেরিয়ে লালু বলেন, ‘বদল হবে।’ অন্যদিকে, রাবড়ি দেবী বলেন, ‘আমার দুই ছেলের জন্যই আমার শুভেচ্ছা রইল (তেজস্বী এবং তেজপ্রতাপ)। আমি তাঁদের মা। তেজপ্রতাপ আলাদা লড়ছে। তাঁদের দু’জনের জন্যই আমার শুভকামনা রইল। একই সঙ্গে আমি বিহারের জনগণকে অনুরোধ করছি, আপনারা নিজেদের ভোটাধিকার ভুলে না গিয়ে ভোট দিন।’ তবে ‘বিদ্রোহী’ তেজপ্রতাপকে সমর্থন করেছেন লালু–কন্যা রোহিণী আচার্য। তিনি বলেন, ‘আমার শুভেচ্ছা ওর সঙ্গে রয়েছে, আমি ওকে (তেজপ্রতাপ) আশীর্বাদ করছি। আপনি কি আপনার ভাইকে আশীর্বাদ করবেন না?’
