আজকাল ওয়েবডেস্ক: অনলাইনে সোনা অর্ডার করে এ কী বিপত্তি? বেঙ্গালুরুতে এক ব্যক্তির অনলাইন কেনাকাটা নিয়ে চরম চাঞ্চল্য। ইনস্টামার্টের মাধ্যমে কল্যাণ জুয়েলার্স-এর কাছ থেকে ১৩ হাজার টাকার একটি স্বর্ণমুদ্রা অর্ডার করেছিলেন ব্যক্তি। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের পর যখন প্যাকেট হাতে এল, তখন ভিতরে পাওয়া গেল শুধু একটি খালি বাক্স!

ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দেখা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি সতর্কতার সঙ্গে প্যাকেট খুলছেন।  ভিতরে কল্যাণ জুয়েলার্সের সোনালি লোগোযুক্ত বাক্সটি বের করছেন। কিন্তু বাক্সটি সিল ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায় এবং তা সম্পূর্ণ খালি। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।

একজন ব্যবহারকারী এক্স-এ লিখেছেন, “আজকের যুগে  মানুষ এত সুবিধাভোগী যে তারা সতর্কতা হারাচ্ছে। আগে মানুষ নিজেরা জুয়েলারি দোকানে গিয়ে সোনার কয়েন কিনত, ওজন ও বিশুদ্ধতা যাচাই করত। এখন অনলাইন ডেলিভারির সহজ পদ্ধতিতে মানুষ সেই ধাপগুলো এড়িয়ে যাচ্ছে। আর তাতেই প্রতারকদের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।”

অন্য এক মন্তব্যে বলা হয়েছে, “এত টাকার জিনিস কিনে এমন ঘটনা সত্যিই উদ্বেগজনক। ভবিষ্যতে কেউ যেন এমন সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। উচ্চমূল্যের পণ্য অনলাইন ইনস্ট্যান্ট ডেলিভারি প্ল্যাটফর্মে না কেনাই ভালো। কেনাকাটার আগে বিক্রেতার সত্যতা যাচাই ও সুরক্ষিত পেমেন্ট ব্যবস্থার দিকেও নজর দেওয়া উচিত।”

ঘটনার পর কল্যাণ জুয়েলার্সের তরফে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। তারা বলেছে, “আপনার সমস্যার কথা জানাতে ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য ccescalation@swiggy.in–এ যোগাযোগ করুন। সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ।”

একই সঙ্গে অনেকেই পরামর্শ দিয়েছেন যে, মূল্যবান পণ্য অনলাইনে কেনার সময় প্যাকেট খোলার আগে ডেলিভারি এজেন্টের উপস্থিতিতে প্যাকেট পরীক্ষা করা উচিত এবং ওটিপি শেয়ার করার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে জিনিসটি সঠিক রয়েছে।

একজন নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, “এ ধরনের ক্ষেত্রে প্যাকেট খোলার সময় ভিডিও রেকর্ড রাখাও জরুরি। ইনস্টামার্টের শর্তাবলীতে স্পষ্ট বলা আছে, প্যাকেট যাচাই না করে ওটিপি দিলে দায়িত্ব গ্রাহকের।”

আরেকজন লিখেছেন, “এই নীল বাক্সটি সাধারণত গিফট কভার হতে পারে। আসল স্বর্ণমুদ্রা সম্ভবত বেগুনি রঙের আলাদা বাক্সে থাকে। পুলিশের তদন্ত প্রয়োজন।”

কেউ কেউ বিকল্প পরামর্শও দিয়েছেন- “এ ধরনের পণ্য শুধুমাত্র অ্যামাজনের মতো বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনা উচিত।”

অন্য এক ব্যক্তি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, “এই প্রতারণার দায়ে পুলিশ যেন ইনস্টামার্ট ও কল্যাণ জুয়েলার্স উভয়কেই জরিমানা করে এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে ভুক্তভোগীকে দ্বিগুণ অর্থ প্রদান করে।”

অবশেষে কল্যাণ জুয়েলার্স একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা গ্রাহকদের অনুরোধ করছে মূল্যবান পণ্য কেনার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে। এমনকী ব্র্যান্ডটি দাবি করেছে, তারা পণ্যের বিশুদ্ধতা ও গ্রাহকের আস্থার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

এই ঘটনার পর অনেকেই বলছেন, “সব কিছু অনলাইনে কেনা যায় না। কিছু জিনিস এখনও অফলাইনে গিয়ে দেখা, যাচাই করে কেনাই সবচেয়ে নিরাপদ।”

এ বিষয়ে অনেকেই মনে করছেন, যতই সুবিধা হোক না কেন, সতর্কতা হারালে ডিজিটাল প্রতারণা থেকে রেহাই পাওয়া কঠিন। পাশাপাশি এও বলছেন, দোকানে গিয়ে যাচাই করে কেনাতেই একমাত্র নিরাপত্তা।