আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও বিয়ে ঘিরে তীব্র আপত্তি। কোনও মতেই বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হচ্ছিল না যুবক। আর তার জেরেই প্রেমিকা ঘ্যান ঘ্যান করতে শুরু করেন। বিয়ের জন্য নিত্যদিন জোরাজুরি করতেন। ধৈর্য্য হারিয়ে বিয়ের কথা বলতে একদিন না জানিয়ে বাড়িতেও পৌঁছে যান প্রেমিকা। তার জেরেই ঘটে বিপত্তি।
বিয়ে নিয়ে চাপ সৃষ্টি এবং প্রেমিকার আচরণে তিতিবিরক্ত হয়ে ওঠে যুবক। চিরতরে মুক্তি পেতে চেয়েছিল সে। আর তার জন্য প্রেমিকাকে দুনিয়া থেকেই চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। বিয়ের কথাবার্তা বলার অজুহাতে প্রেমিকাকে ডেকে খুন করে সে। এই কাজে তাকে সাহায্য করেছে, তার এক বন্ধু। খুনের পরেও রেহাই মেলেনি তাদের। বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে দুই যুবক।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এক মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে এক অটো চালক ও তাঁর সহকারীকে শনিবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রায়া এলাকার মান্ট ব্রাঞ্চ গাং ক্যানেল থেকে মহিলার দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত অটো চালক শাকিলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দীর্ঘ জেরায় খুনের ঘটনায় তার ভূমিকা ছিল বলে স্বীকার করেছে সে।
মহভানের পুলিশ আধিকারিক সঞ্জীব কুমার রাই জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার ওই খাল থেকে মহিলার দেহটি দেখতে পান স্থানীয়রা। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাল থেকে মহিলার দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি পাঠানো হয়েছে। মৃতদেহে আঘাতের একাধিক চিহ্ন দেখা গেছে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে, কীভাবে খুন করা হয়েছে তাঁকে।
তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, মহিলার নাম বরখা। হাইওয়ে থানার অন্তর্গত এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। বরখা মহিলা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বাড়ি থেকে কর্মস্থল পর্যন্ত অটোতে যাতায়াত করতেন। প্রায়ই শাকিলের অটোতে চড়তেন তিনি। নিত্যদিন যাতায়াতের পথেই শাকিলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে বরখার। ক্রমেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
পুলিশি জেরায় শাকিল জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে বরখা উত্যক্ত করতে শুরু করেন। বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠার পরেই শাকিলের প্রেমে পড়ে যান। এরপর তাঁকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেন। বিয়ের জন্য জোরাজুরি করলেও, বরখার প্রস্তাবে রাজি ছিল না শাকিল। বিষয়টি চাঞ্চল্যকর মোড় নেয়, যখন হঠাৎ একদিন শাকিলের বাড়িতে পৌঁছে যান বরখা।
অভিযুক্ত অটো চালক জানিয়েছে, সে সুখদেব নগরের বাসিন্দা। আচমকা একদিন বাড়িতে চলে এসেছিলেন বরখা। সকলের সামনেই শাকিলকে বিয়ের জন্য জোরাজুরি করেন। পাশাপাশি অশান্তিও করেন এর জন্য। তখনই শাকিলের মেজাজ বিগড়ে যায়। বরখার হাত থেকে চিরতরে রেহাই পাওয়ার জন্য খুনের পরিকল্পনা করে। চন্দ্রবীর নামে এক বন্ধুকে সেই পরিকল্পনার কথাও জানায়। যাতে সে সাহায্য করতে পারে শাকিলকে।
বিয়ের কথাবার্তা বলার জন্য গত বুধবার রাতে বরখাকে একটি নির্জন এলাকায় ডাকে শাকিল। ফোনে জানিয়েছিল, সে বিয়ের প্রস্তাবে এখন রাজি আছে। সেই এলাকায় বরখা যাওয়ার পরেই কিছুক্ষণ কথা বলা বলছিল শাকিল। কথা বলার মাঝে আচমকাই বরখারি গলায় দড়ি চেপে ধরে। শ্বাসরোধ করে খুনের পর দেহটি খালে ফেলে দিয়ে দুই বন্ধু পালিয়ে যায়।
