আজকাল ওয়েবডেস্ক: অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার বিদ্যমান শ্রম আইন সংশোধন করেছে। বেসরকারি কোম্পানি এবং কারখানাগুলির জন্য কর্মীদের ন্যূনতম কাজের সময় ৯ ঘন্টা থেকে বাড়িয়ে ১০ ঘন্টা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের মতে, এই পদক্ষেপটি শিল্প উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ করার লক্ষ্যে করা হয়েছে।
তবে, চন্দ্রবাবু নাইডু সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখর হয়েছে শ্রমিক ইউনিয়ন এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা। প্রতিবাদীদের যুক্তি, কাজের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কর্মীদের কল্যাণকে ক্ষুণ্ন করবে এবং দীর্ঘস্থায়ী শ্রম সুরক্ষাকে দুর্বল করে।
সংশোধিত আইনের ৫ নং ধারা অনুযায়ী, একটানা ৫ ঘণ্টা কাজ করার পর ১ ঘণ্টা বিশ্রাম করার সুযোগ পেতেন কর্মচারীরা, সেই সময়ও বাড়িয়ে ৬ ঘণ্টা করা হয়েছে। অর্থাৎ টানা ৬ ঘণ্টা কাজ করার পর ১ ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে পারবেন কর্মীরা।
নতুন নিয়মে প্রতি ত্রৈমাসিকে অনুমোদিত ওভারটাইম সীমা ৭৫ ঘন্টার বদলে বেড়ে ১৪৪ ঘন্টা পর্যন্ত বেড়েছে হয়েছে। এবং ১২ ঘন্টা কর্মদিবসের অনুমদন দিয়েছে। যা শ্রমিক শোষণের বিষয়ে উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
নতুন আইনের অধীনে মহিলারা রাতের শিফটে কাজ করতে পারবেন
সংশোধিত আইন অনুসারে মহিলারা রাতের শিফটে কাজ করতে পারবেন। তবে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং পরিবহন সুবিধা থাকতে হবে। এই সিদ্ধান্ত কর্মীবাহিনীতে লিঙ্গ সমতার দিকে একটি পদক্ষেপ হিসাবে স্বাগত জানানো হয়েছে। যদিও সমালোচকরা এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন এবং সুরক্ষা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “অন্ধ্রপ্রদেশের নতুন কারখানা সংশোধনী বিল মহিলাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা-সহ রাতের শিফটে কাজ করার অনুমতি দেয়... শিল্প সংস্কারের দিকে একটি পদক্ষেপ, তবে শ্রমিকদের অধিকার এবং সুরক্ষা অবশ্যই সর্বাগ্রে থাকা উচিত।”
নতুন শ্রম আইনের পক্ষে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার কী বলেছে?
মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর দাবি, সংস্কারগুলি কর্ম-জীবন ভারসাম্য উন্নত করার এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি বৃদ্ধির জন্য একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ। তিনি বলেছেন, "এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের কর্মজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।"
তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) সরকারের পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে। ষা,ক দলের দাবি এতে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি উৎসাহিত হবে। পুরো বিষয়টি বৃহত্তর উন্নয়ন লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে বলেও মত তাদের। টিডিপি-র দাবি এই পরিবর্তন রাজ্যের আইটি এবং জিসিসি (গ্লোবাল ক্যাপাবিলিটি সেন্টার) নীতি ৪.০ এর পরিপূরক, যা দূরবর্তী কাজের বিকল্প-সহ নমনীয় কাজের ব্যবস্থাকেও উৎসাহিত করে।
ট্রেড ইউনিয়নগুলি কী বলেছে?
শ্রমিক ইউনিয়নগুলি এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছে, এটিকে শোষণমূলক এবং শ্রমিকদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বলে অভিহিত করেছে। একজন ট্রেড ইউনিয়ন নেতা টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেছেন, "এটি একটি বিশ্বাসঘাতকতা... নীতিটি শ্রমিকদের দাসে পরিণত করবে।”
অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিতেও সমালোচনায় চলছে। এক্সে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন: “অন্ধ্র প্রদেশে কারখানার কাজের সময় এবং ওভারটাইম বৃদ্ধি করা একটি পশ্চাদমুখী পদক্ষেপ, যা শ্রমিকদের অধিকার এবং কল্যাণের চেয়ে ব্যবসা করার সহজতা-কে অগ্রাধিকার দেয়।”
