আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১২ জুন। আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। বিমানে থাকা একজন ছাড়া সকল যাত্রী নিহত হন ওই দুর্ঘটনায়। ছিলেন ভারতীয় নারগিক, ছিলেন বহু ব্রিটিশ নাগরিকও। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, দুই ব্রিটিশ নাগরিকের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পর যে দেহাবশেষ পাঠানো হয়েছে, তা মিলছে না নিহতদের পরিবারের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে। ঘটনার পর, তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত শ্রাদ্ধানুষ্ঠান বাতিল হয়েছে বলেও খবর সূত্রের। সূত্রের খবর, ঘটনায় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ওই পরিবারগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিদেশ মন্ত্রক।
১২ জুন, বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের কাছে মেঘানিনগর এলাকায় এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমান ভেঙে পড়ে। বিমানটি বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ১৭ নাগাদ উড়ান দেয়, ঠিক তার কয়েকমিনিট পরেই বিপর্যয় ঘটে। সম্ভাব্য ১টা ৪৮ নাগাদ ভেঙে পড়ে বিমানটি। ওই বিমানটি আহমেদাবাদের একটি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাসের উপর ভেঙে পড়ে। বিমানের যাত্রী, ক্রু-সহ ওই ছাত্রাবাসের বহু ছাত্র, কর্মীর মৃত্যু হয় দুর্ঘটনায়। দুর্ঘটনায় বিমান যাত্রীদের দেহ এতটাই ঝলসে যায়, দেহ শনাক্তকরনের জন্য ডিএনএ টেস্ট করা হয়। এবং ডিএনএ পরীক্ষার পরেই নিশ্চিত করা হয় যাত্রীদের পরিচয়।
আরও পড়ুন: উড়ানের সঙ্গে সঙ্গেই বিমানের ইঞ্জিনে আগুন! 'মে ডে কল' পাইলটের, ফের ভয়াবহ ঘটনা আহমেদাবাদে
ওই বিমানে একাধিক বিদেশী নাগরিক ছিলেন। সূত্রের খবর, অন্তত দুটি ব্রিটেন পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, কফিনে পাঠানো দেহাবশেষ তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নয়। ব্রিটিশ পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী জেমস হিলির মতে, ‘১২ জুন আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI171 দুর্ঘটনার পর ১২-১৩ টি দেহাবশেষ ব্রিটেনে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে দুটি পরিবাররের পক্ষ থেকে ডিএনএ বিশ্লেষণের পর জানানো হয়েছিল যে তারা যে দেহাবশেষ পেয়েছে তা তাদের আত্মীয়দের নয়।‘
ঘটনায় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, ‘সব মৃতদেহ অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে এবং মৃত ব্যক্তির মর্যাদার প্রতি যথাযথ সম্মানের সঙ্গে পরীক্ষা করা হয়েছে। এই সমস্যা সম্পর্কিত যেকোনও উদ্বেগ মোকাবেলায় আমরা ব্রিটেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।‘

উল্লেখ্য, ১২ জুন, দুপুর ১টা ১৭ মিনিট নাগাদ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দর থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল। ১টা ৩৮ মিনিট নাগাদ বিমানটি স্থানীয় একটি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাসে ঢুকে যায়। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ছাত্রাবাসের একাংশ। চাপা পড়ে প্রাণ যায় বহু পড়ুয়া এবং সেখানে কর্মরত কয়েকজনের। প্রকাশ্যে আসা বেশকিছু ছবিতে দেখা গিয়েছিল, ছাত্রাবাসে পড়ুয়ারা তখন দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। তার মাঝেই মৃত্যু। উল্লেখ্য, আহমেদাবাদ এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনায় কেবল এক যাত্রী ছাড়া ওই বিমানে থাকা সকল যাত্রী, ক্রু-র মৃত্যু হয়। এআই ১৭১ ফ্লাইটে থাকা যাত্রী ও ক্রু সদস্যদের পাশাপাশি দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা-সহ মোট ২৭৪ জনের মৃত্যু হয় দুর্ঘটনায়।
১২ জুন থেকে, ২৩ জুলাই, বারবার এয়ার ইন্ডিরা, ইন্ডিগোর একাধিক বিমান দুর্ঘটনার কবলে পরেছে। বুধবারেও ইন্ডিগোর একটি বিমানের উড়ান প্রক্রিয়া শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই, ইঞ্জিনে আগুন লাগে বলে জানা যায়। অন্যদইকে, ২১ জুলাই, ঢাকায় আহমেদাবাদের মতোই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। ২১ জুলাই, সোমবার ঢাকার উত্তরায় বাংলাদেশ বায়ুসেনার প্রশিক্ষণ বিমানটি একটি স্কুলের উপর ভেঙে পড়ে। সোমবার দুপুরে ১টা ৬ মিনিটে উড়ানের পরেই ঢাকার উত্তরা এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ক্যাম্পাসে বিমানটি ভেঙে পড়ে। সেই সময় স্কুলে ছিল পড়ুয়ারা। ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা।
