আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ উত্তরকাশীতে বড় বিপর্যয়। হড়পা বানে একেবারে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী। আর এই হড়পা বানেই ভেসে গেল হরশিলের একটি সেনা ছাউনি। ৯ জন জওয়ান নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, হড়পা বানে এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। নিখোঁজ অন্তত ৫০।


মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে ধারালি গ্রামে হড়পা বান আসে। হরশিলে ভারতীয় সেনার ছাউনি থেকে যার দূরত্ব মাত্র ৪ কিমি। হড়পা বান সেনা ছাউনিকেও ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ওই সেনা ছাউনির ৯ জওয়ান নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। সেই ধাক্কা সামলে বাকি জওয়ানরা উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। রিলিফ অপারেশনের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিঃস্বার্থভাবে দেশের সেবা করতে সবসময় প্রস্তুত জওয়ানরা। এটাই ভারতীয় সেনার প্রকৃত স্পিরিট। সেনার তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‌ঘটনার ১০ মিনিটের মধ্যে ১৫০ জওয়ান ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। বিপর্যস্ত নাগরিকদের সবরকম সাহায্য করতে দায়বদ্ধ ভারতীয় সেনা।’‌


প্রসঙ্গত, গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে পুণ্যার্থীরা এই ধারালিতে আশ্রয় নেন। সেজন্য এখানে অনেক হোটেল, রেস্তরাঁ এবং হোম স্টে রয়েছে। উত্তরাখণ্ডের প্রিন্সিপাল সচিব আরকে সুধাংশু জানিয়েছেন, ৪০ থেকে ৫০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। নম্বরগুলি হল ০১৩৭৪-২২২১২৬, ২২২৭২২ এবং ৯৪৫৬৫৫৬৪৩১।


পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি বৈঠকে বসেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। আপাতত কেদারনাথ যাত্রা বন্ধ রাখা হয়েছে। হড়পা বানে এই ক্ষয়ক্ষতিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন ধামি। তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

এটা ঘটনা, এই ভয়াবহ দুর্যোগে গঙ্গোত্রী ধামের সঙ্গে সমস্ত রাস্তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঘটনাস্থলের খুব কাছেই অবস্থিত গঙ্গার শীতকালীন আসন মুখবা ও পবিত্র গঙ্গোত্রী ধাম। পর্যটকদের তোলা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পাহাড় থেকে নেমে আসা জলপ্রবাহ ধেয়ে আসছে নিচের দিকে, একের পর এক বাড়ি ও গাছপালা ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। হরশিল অঞ্চলের খীর গাধ নালার উপচে পড়া জলের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে।

 

আরও পড়ুন:‌ আচমকাই মেঘভাঙা বৃষ্টি, জলের তোড়ে ভেসে গেল উত্তরকাশীর ধারালি, ভূমিধসে মৃত একাধিক, নিখোঁজ বহু


প্রসঙ্গত, গোটা হিমালয় অঞ্চলে এই মুহূর্তে প্রবল বর্ষণের ফলে রীতিমতো বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডের প্রতিবেশী রাজ্য হিমাচল প্রদেশেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মারাত্মক রূপ নিয়েছে। শুধুমাত্র সোমবার দিনেই প্রবল বর্ষণের কারণে রাজ্যের ৩১০টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, যার মধ্যে একটি জাতীয় সড়কও আছে। মান্ডি জেলায় একটি গাড়ি খাদে পড়ে ৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সিমলার পান্থাঘাটি এলাকায় রবিবার রাতে ধস নামায় মেহলি-শোগি বাইপাস সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে এবং কিছু দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে, গঙ্গা, যমুনা ও বেতওয়া নদীর জলস্তর বিপদসীমার উপরে বইছে একাধিক স্থানে। যার ফলে বহু গ্রাম ও শহরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ত্রাণ কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, গঙ্গা নদী বিপদসীমার ওপরে বইছে বারাণসী, মির্জাপুর, গাজিপুর ও বালিয়ায়।