আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজস্থানের আন্তা এলাকায় ধারে চায়ের দোকান। সেই দোকানের নাম '৪৯৮এ টি ক্যাফে'। নামেই অভিনবত্ব! কেন এমন নামকরণ? এর নেপথ্যে রয়েছে এক বিরাট কাহিনী। আসলে, এই নামকরণের মধ্যে দিয়ে সমাজের সামনে বড় একটি বার্তা তুলে ধরতে চেয়েছেন ওই চা-য়ের দোকানের মালিক কৃষ্ণ কুমার ধাকাদ। দেশব্যাপী এই চায়ের দোকান ঘিরে আলোড়ন পড়েছে।
আথানা শহরের বাসিন্দা কৃষ্ণ কুমার ধাকাদ, ২০১৯ সালে রাজস্থানের বারান জেলার আন্তা শহরের মেয়েকে বিয়ে করেন। তখন তিনি পেশায় ছিলেন মৌমাছি পালনকারী। দাম্পত্যজীবণ মসৃণভাবে চললেও ২০২২ সালে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে ছেদ পড়ে কৃষ্ণ কুমারের। তাঁর স্ত্রী শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে যান।
এরপরই কৃষ্ণ কুমার ধাকাদ-এর বিরুদ্ধে যৌতুক নির্যাতন (ধারা ৪৯৮এ) এবং ক্ষতিপূরণের মামলা (ধারা ১২৫) দায়ের করেন তাঁর স্ত্রী। এই আইনি লড়াইয়ের জন্য কৃষ্ণকে নিমুচ থেকে বারানের আদালতে যেতে ২২০ কিলোমিটার পথ যেতে হত। যা ছিল অতি কষ্টের।
এসবের মধ্যেই কৃষ্ণ কুমার ধাকাদ অনন্য সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তাঁর শ্বশুরবাড়ির শহরের ঠিক পাশেই আন্তায় '৪৯৮এ টি ক্যাফে' খুলে ফেলেন। উল্লেখযোগ্য যে, ৯ জুন শুরু হওয়া এই উদ্যোগটি কেবল একটি ব্যবসায়িক পদক্ষেপ ছিল না। এই চায়ের দোকানের মাধ্যমে একটি বার্তাও সমাজের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছেন কৃষ্ণ কুমার ধাকাদ।
দোকানের উদ্বোধনের দিন, হাতকড়া পরা কে কে ঘোষণা করেছিলেন, "যতক্ষণ না আমি ন্যায়বিচার পাই, ততক্ষণ পাত্রে চা ফুটতে থাকবে।" এই ধ্বনি তাঁর ক্যাফেতে স্পষ্টভাবে প্রদর্শিত হয়, যা মিথ্যা আইনি অভিযোগের শিকার বোধ করা পুরুষদের জন্য একটি প্রতীক হয়ে উঠেছে।
Not just tea, it’s a tale of truth.
— बेटा बचाओ देश बचाओ (@avoiceofchange_)
Falsely accused under 498A, this man didn’t break — he brewed courage.
Started a tea stall outside court, named it “498A Tea Café”.
"जब तक नहीं मिलता न्याय तब तक उबलती रहेगी चाय" ☕????#Salute #MensRights #498AAbuse#planecrash#12YearsWithBTS pic.twitter.com/PKX4sF51mcTweet by @avoiceofchange_
কৃষ্ণ কুমার ধাকাদ জানান যে, তিনি দেড় মাস ধরে অর্থ জমিয়ে, চেয়ার-টেবিল-সহ চায়ের দোকান প্রস্তুত করার জন্য একটি তাঁবু ঘর পরিষ্কার করেছেন। তাঁর লক্ষ্য হল সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সেই পুরুষদের কণ্ঠস্বর দেওয়া যারা তাঁর মতো চলমান আইনি লড়াই এবং দূরদূরান্তে ভ্রমণের বোঝার সঙ্গে ন্যায়বিচার না দেখে লড়াই করে।
ক্যাফেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, কৃষ্ণ-র দুর্দশার প্রতি সহানুভূতিশীল অনেকের সঙ্গে এটির প্রতিধ্বনি। তিনি বিশ্বাস করেন যে, অনেক মহিলা ন্যায়বিচারের জন্য আইন ব্যবহার করলেও, কিছু লোক আছেন যাঁরা এটিকে হাতিয়ার করে কাজে লাগান, ফলে নিরপরাধ পুরুষ এবং তাঁদের পরিবার চরম দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, কৃষ্ণ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, চা বিক্রি চালিয়ে যাওয়ার এবং হাল না ছেড়ে তাঁর মামলা লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেন, "আমার স্ত্রী আমাকে এভাবে দেখে অবশ্যই শান্তিতে থাকবেন। আদালতে আমরা কেবল তারিখ পাই, ন্যায়বিচার পাই না। তাই আমি এখানে চা বিক্রি করার এবং এখান থেকে আমার আইনি লড়াই লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি হাল ছাড়ব না।"
