আজকাল ওয়েবডেস্ক: গভীর রাতে হঠাৎ চোখে পড়ে আগুনের ফুলকি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বাস থেকে লাফিয়ে নীচে নেমে পড়েন সকলে। নিমেষেই দাউদাউ আগুনে পুড়ে খাক গোটা বাস। ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার হাত থেকে বরাত জোরে মতে রক্ষা পেলেন ৪৫ যাত্রী। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাসটিতে ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন। বাসটি গুরুগ্রাম থেকে পান্নার দিকে যাচ্ছিল। সোমবার রাতে গোয়ালিয়রের ওল্ড ক্যান্টনমেন্ট থানার অন্তর্গত মুম্বই হাইওয়েতে আচমকাই বাসে দাউদাউ আগুন জ্বলতে শুরু করে। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, বাসটি নিমেষের মধ্যে পুড়ে খাক হয়ে যায়। কিন্তু চালক ও সতর্ক যাত্রীদের বুদ্ধিতেই বাস থেকে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সকলে নেমে পড়েন। তাই হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বাস থেকে নেমে পড়তে না পারলে, ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারতেন যাত্রীরা। 

গোয়ালিয়রের মোরেনা সীমান্ত এলাকা পার করার পরেই অগ্নিকাণ্ডের কবলে পড়ে যাত্রীবাহী বাসটি। পুলিশ জানিয়েছে, রাতভর বাসে বসে থাকার কারণে গভীর রাতে প্রায় সকলেই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। যাত্রীদের অধিকাংশ মহিলা ও শিশু। বাসে থাকা এক যাত্রীই প্রথমে খেয়াল করেন, বাসের পিছনের চাকায় আগুনের ফুলকি। তিনি তড়িঘড়ি করে বাস থেকে সকলকে নেমে যাওয়ার পরামর্শ দেন। 

বাসের চালক চিৎকার করে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সকলকে নেমে যেতে বলেন। হাতের কাছে ব্যাগ, চাদর, ফোন যা ছিল, সব নিয়ে নেমেও যান যাত্রীরা। দু'মিনিটের মধ্যে বাসটি ফাঁকা হয়ে যায়। এরপরই টায়ার ফেটে দাউদাউ আগুন জ্বলতে শুরু করে। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বাসটি। 

প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরেই রাজস্থানে চলন্ত বাসে অগ্নিকাণ্ডের জেরে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছিল রাজস্থানে। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল বিকেলে জয়সালমের - যোধপুর হাইওয়েতে। বাসটি জয়সালমের থেকে যোধপুরের দিকে যাচ্ছিল। মাঝ পথেই চলন্ত বাসে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। পালানোর সুযোগ পাননি বহু যাত্রী। বাসের মধ্যেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১৯ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাসটি জয়সালমের থেকে দুপুর তিনটে নাগাদ যোধপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। বাসে মোট ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন। জয়সালমের - যোধপুর হাইওয়েতে চলন্ত বাসের পিছনের দিকে কালো ধোঁয়া দেখা গিয়েছিল প্রথমে। কালো ধোঁয়া নজরে পড়তেই বাসটি হাইওয়ের একপাশে থামান চালক। নিমেষের মধ্যে গোটা বাসে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। 

বাসটি দাউদাউ করে জ্বলতে দেখেই স্থানীয়রা ও পথচলতি মানুষ উদ্ধারকাজে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ও বিশাল পুলিশ বাহিনী। দ্রুত আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু ততক্ষণে বাসের মধ্যেই আটকে পড়েন বহু যাত্রী।‌ জীবন্ত দগ্ধ হন ২১ জন যাত্রী। আহতদের তড়িঘড়ি করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

পুলিশ ও দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই বাসটিতে আগুন ধরে যায়। এমনকী জানা গেছে, বাসটি মাত্র পাঁচদিন আগেই কেনা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতেই জয়সালমেরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা। পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া বাসটি ও দুর্ঘটনাস্থল তিনি পরিদর্শন করেছেন। 

সর্বশেষে পাওয়া খবর অনুযায়ী, অগ্নিদগ্ধ হয়ে আরও ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁরা সকলেই হাসপাতালে যমে-মানুষে টানাটানি অবস্থায় রয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে চারজন মহিলা ও দু'জন শিশু রয়েছে। বাকিদের শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তিনটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে প্রথমে জয়সালমেরের জহর হাসপাতালে আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই তাঁদের যোধপুরের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।