আজকাল ওয়েবডেস্ক: সাম্প্রতিককালে পরপর একই ছবি। পিছু হটছেন তাঁরা। পরপর আত্মসমর্পণ। এবার একযোগে ২৮জন। তাঁদের মধ্যে ২২ জনের সম্মিলিত মাথার দাম ছিল ৮৯ লক্ষ। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর জেলায় মঙ্গলবার একসঙ্গে ২৮জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, ২৮ জনের মধ্যে, ১৯জন মহিলা।  


বাস্তার রেঞ্জের পুলিশের মহাপরিদর্শক  পি. সুন্দররাজ জানিয়েছেন, 'পুনা মার্জেম: পুনর্বাসন থেকে পুনর্মিলন পর্যন্ত উদ্যোগের অধীনে, আজ নারায়ণপুর জেলায় একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে, ২৮ জন মাওবাদী ক্যাডার সহিংসতার পথ ত্যাগ করে মূলধারায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।'

তিনি জানান, গত ৫০ দিনে, নারায়ণপুর-সহ সাতটি জেলা-সহ বাস্তার রেঞ্জে ৫১২ জনেরও বেশি মাওবাদী ক্যাডার তাঁদের অস্ত্র সমর্পণ করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, এটি দেশের তিনটি জেলার মধ্যে একটি, যেখানে এখনও প্রবল মাওবাদী-আতঙ্ক। 

 

এর আগে, সেপ্টেম্বর মাসে আত্মসমর্পণ করেন নিহত মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষেণজির স্ত্রী পোথুলা পদ্মাবতী। সংগঠনে তিনি কল্পনা ও সুজাতা নামেও পরিচিত। পদ্মাবতী শনিবার হায়দরাবাদে তেলেঙ্গানা পুলিশের ডিজি জিতেন্দ্রের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। ১৯৮২ সাল থেকে আত্মগোপন করেছিলেন মাওবাদী নেত্রী ৬২ বছর বয়সী পোথুলা পদ্মাবতী। তাঁর মাথার দাম ছিল এক কোটি টাকা।

 

কিষেনজির ছোট ভাই মাল্লুজুলা বেণুগোপাল রাও আত্মসমর্পণ করেন অক্টোবরমাসে।একইসঙ্গে আত্মসমর্পণ করেছেন তাঁর ৬০ জন সহযোগী। শীর্ষ মাওবাদী নেতা বেণুগোপাল রাও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের উপস্থিতিতে অস্ত্র সমর্পণ করেন। বাণুগোপালের আত্মসমর্পণের পরেই উঠে আসে বেশকিছু তথ্য। একাধিক মহলের তথ্য, আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের মতে, সশস্ত্র সংগ্রামের প্রতি তাদের মোহভঙ্গ ঘঠেছে। ফলে, সমাজের মূল স্রোতে ফিরতেই তাঁদের এই পদক্ষেপ।

ছত্তিশগড়ের উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা বেণুগোপালের আত্মসমর্পণের ঘটনাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছিলেন, 'বাস্তারের মানুষ নকশালবাদের অবসান ঘটাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এক বছর আগে বেণুগোপালের স্ত্রী আত্মসমর্পণ করেছিলেন। আজ তাঁর স্বামীর আত্মসমর্পণ পরিবর্তিত বাস্তবতাকে তুলে ধরছে। প্রশাসন হিংসা ত্যাগকারীদের পুনর্বাসন করবে, কিন্তু যারা সশস্ত্র প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে তাদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে  নিরাপত্তা বাহিনী।' 

 

পরপর মাওবাদীদের আত্মসমর্পণ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের মধ্যে মাওবাদী-মুক্ত ভারত গঠনই কেন্দ্রের লক্ষ্য। এই জন্য মাও অধ্যুষিত ছত্তিশগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানার বিস্তীর্ণ এলাকায় সরকারের যৌথ বাহিনীর অভিযানের পর একের পর এক মাওবাদী আত্মসমর্পণ করছেন।