আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় বন্ধুর বিয়েতে এসে মর্মান্তিক পরিণতি এক সুইডিশ তরুণের। দেদার মদ্যপানের পর, মত্ত অবস্থায় পাঁচতলা থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পড়ে যান তিনি। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে তাঁর। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নভি মুম্বইয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, ২৬ বছর বয়সি সুইডিশ তরুণ বন্ধুর বিয়েতে যোগ দিতেই ভারতে এসেছিলেন। সানপাড়া এলাকায় বিয়েবাড়িতে হুল্লোড়েও মেতেছিলেন। সেই বিয়েবাড়ির পাঁচতলা থেকে নীচে পড়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, মৃত তরুণের নাম, অ্যালডে এডওয়ার্ড জ্যান। তিনি সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের বাসিন্দা ছিলেন। ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বিয়েতে যোগ দিতেই ভারতে এসেছিলেন। শনিবার ভাসির রঘুলীলা মলে বিয়েবাড়িতে যোগ দিয়েছিলেন। বিয়ের অনুষ্ঠানের পর একদল বন্ধুর সঙ্গে বাইরে বেরিয়েছিলেন জ্যান। এরপরই নিখোঁজ হয়ে যান জ্যান। তাঁর খোঁজ আর পাননি বন্ধুরা। 

রবিবার সন্ধ্যায় প্রণয় শাহ নামের এক তরুণ জানতে পারেন, গুরুতর আহত অবস্থায় জ্যান মুম্বইয়ের সিওন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরপর তড়িঘড়ি থানায় পৌঁছে গোটা ঘটনাটি জানান প্রণয়। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, একটি ভবনের পাঁচতলা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন জ্যান। যার জেরেই গুরুতর চোট পান তিনি। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। 

এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, জ্যান সেই সময় মত্ত অবস্থায় থাকতে পারেন। মত্ত অবস্থায় পাঁচতলা থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যেতে পারেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত জারি রয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসেই কর্ণাটকে আরও এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। বন্ধুর বিয়েতে ধুমধাম আয়োজন। নিমন্ত্রণ পেয়েই ছুটে গিয়েছিলেন এক যুবক। দিনরাত হুল্লোড়ে মেতেছিলেন সকলের সঙ্গে। নাচগান, খাওয়াদাওয়ায় কেটে গিয়েছিল বিয়ের দিনটি। কে জানত এই বিয়েবাড়িতে এসেই মর্মান্তিক পরিণতি হবে তাঁর! কব্জি ডুবিয়ে খেতে গিয়েই প্রাণ গেল তাঁর। 

খাবারে বিষক্রিয়ায় নয়। বন্ধুর বিয়েতে এসে, আরেক বন্ধুর হাতে খুন হলেন এক যুবক। কারণ? কষা মুরগির মাংস ছিল তাঁর প্রিয়। বাড়তি এক টুকরো মাংস চেয়েছিলেন খেতে বসে। মাংসের টুকরো দেওয়া তো দূরের কথা, এত দাবি ঘিরেই সকলের সামনে তাঁকে কটুক্তি করেন এক বন্ধু। 

কষা মাংসের টুকরোকে ঘিরেই শুরু হয় সামান্য ঝামেলা। সেই অশান্তি শেষমেশ গড়ায় হাতাহাতিতে। রক্তবন্যায় ভেসে যায় বিয়ের আসর। গুরুতর চোট নিয়ে বিয়েবাড়িতেই লুটিয়ে পড়েন যুবক। সেখানেই তাঁর মর্মান্তিক পরিণতি হয়। ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের বেলাগাভি জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম, বিনোদ মালাশেট্টি। তিনি ইয়ারাগাট্টি তালুকের বাসিন্দা ছিলেন। গত সপ্তাহান্তে তাঁর বন্ধু অভিষেক কোপ্পাড়ের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। বিয়ের পরদিন রবিবার আরও একটি বিশেষ পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। সেই পার্টিতে অন্য এক বন্ধুর হাতে খুন হন বিনোদ। 

পুলিশ জানিয়েছে, রাতের পার্টিতে বন্ধুবান্ধব মিলে হুল্লোড় করছিলেন। গানবাজনার মাঝেই চলছিল খাওয়াদাওয়া। সেই পার্টিতে ডিনারের সময় গণ্ডগোল হয়। বন্ধুদের খাবার পরিবেশন করছিলেন ভিত্তাল নামের এক যুবক। মেন কোর্স খাওয়ার সময় বিনোদ বলেন কষা মুরগির মাংসের টুকরোগুলি খুব ছোট ছোট। ভিত্তাল ঠিক মতো পরিবেশন করছেন না। তাঁকে আরেক টুকরো মাংস দিতে বলেন। 

ইচ্ছা করে ছোট মাংসের টুকরো পরিবেশন করার অভিযোগ ঘিরে ভিত্তাল রেগে লাল হয়ে যান। তখন বিনোদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় তাঁর। বাকি বন্ধুরা সমস্যা মেটানোর জন্য হস্তক্ষেপ করেন। দু'জনকেই থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। 

সামান্য বচসার পর বিনোদ আর ভিত্তালের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। রাগের মাথায় হঠাৎ পেঁয়াজ কাটার ধারালো ছুরি দিয়ে বিনোদের উপর হামলা করেন ভিত্তাল। বন্ধুদের মাঝেই পরপর ছুরির কোপ বসান বিনোদের শরীরে। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি বিয়ের আসরে লুটিয়ে পড়েন। 

বিনোদকে উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ধারালো ছুরির একাধিক কোপে অতিরিক্ত রক্তপাত হয় তাঁর। তার জেরেই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় যুবকের। 

বিনোদের মৃত্যুর খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী। ঘটনার বিবরণ শুনে খুনের মামলা রুজু করেছে তারা। ভিত্তালের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। ৩০ বছর বয়সি মৃত যুবকের পরিবারের তরফেও অভিযুক্ত বন্ধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া তাঁর পরিবারে। ভিত্তালের কীর্তিতে স্তম্ভিত বন্ধুরাও। বিয়েবাড়ির আনন্দ মুহূর্তের মধ্যে বিষাদে পরিণত হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে খুনের ঘটনায় তাজ্জব বনে গেছেন নিমন্ত্রিতরাও। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়ে তদন্তে সাহায্য করছেন।