আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরাখণ্ডের রামনগর শহরে এক মর্মান্তিক ঘটনা আবারও আলোচনায় এসেছে। একটি ১৭ বছর বয়সী মাদকাসক্ত কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ফলে কমপক্ষে ১৯ জন পুরুষ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত দেড় বছর ধরে এই ঘটনা চলার পর অবশেষে তা প্রকাশ্যে আসে।  

গত অক্টোবরে নৈনিতাল জেলার গুলারঘাট্টি অঞ্চলে প্রথম এই ঘটনা ধরা পড়ে। স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুবক গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে রামদত্ত জোশি যৌথ হাসপাতালের ইন্টিগ্রেটেড কাউন্সেলিং অ্যান্ড টেস্টিং সেন্টার (ICTC)-এ গেলে পরীক্ষায় তাদের এইচআইভি পজিটিভ ধরা পড়ে। স্বাস্থ্য বিভাগের তদন্তে একটি মেয়েকে সাধারণ সূত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়—একটি দরিদ্র পরিবারের মাদকাসক্ত কিশোরী, যিনি নিয়মিত  হেরোইন সেবন করতেন।  ক্রমশ  জানা যায়, মেয়েটি কয়েক মাস ধরে আক্রান্ত পুরুষদের অনেকের সঙ্গেই শারীরিক সম্পর্ক করেছিল। মাদক কেনার টাকার জন্যই সে এই কাজ করত বলে অভিযোগ।  

আরও পড়ুন:'উফফ, কী সুন্দর', মোহময়ী তরুণীকে দেখেই উত্তেজিত, বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে হস্তমৈথুন যুবকের, এই রাজ্যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা মডেলের

সম্প্রতি এক্স (আগের  টুইটার)-এ একটি পোস্ট ভাইরাল হয়, যাতে বলা হয়, "উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালে এক ১৭ বছর বয়সী মাদকাসক্ত মেয়ে ১৯ যুবককে এইচআইভি দিয়েছে। সে বিবাহিত পুরুষদের সাথেও সম্পর্ক করেছিল, যাদের স্ত্রীরাও আক্রান্ত হয়েছেন।" এই পোস্টে অনেক ব্যবহারকারী পুরুষদের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানান। তাদের যুক্তি—এখানে একটি নাবালিকার সঙ্গে সম্পর্ক করাটাই আইনত অপরাধ (POCSO Act অনুযায়ী)।  

ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। আরও জানা গেছে, কিশোরী মাদকের নেশা করত দিনরাত। নেশার টাকা জোগাড় করার জন্য উদ্দাম যৌনতায় মেতে উঠত সে। সেই তালিকায় বিবাহিত পুরুষরাও ছিলেন। যৌনতায় মেতে টাকা রোজগার করত কিশোরী। সেই টাকা দিয়ে নেশার সামগ্রী কিনত সে। তার পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। 

- "একজন লিখেছেন, "বিবাহিত পুরুষরা তাদের স্ত্রীদের ঠকিয়ে একজন নাবালিকার সঙ্গে সম্পর্ক করল? এরা এর যোগ্য!"  
- অন্য একজন বলেছেন, "এখানে আসল ভুক্তভোগী হলেন সেইসব অসহায় মহিলারা, যাঁরা তাঁদের স্বামীদের অপরাধের শিকার হয়েছেন।"  
- একজন প্রশ্ন তোলেন, "এখানে কেন নাবালিকার সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের সম্পর্কই মূল ইস্যু নয়?"  

ঘটনা প্রকাশের পর স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ এইচআইভি/এইডস নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে সেমিনার ও ক্যাম্পের আয়োজন করে। বিনামূল্যে পরীক্ষা ও ওষুধ দেওয়া হয়, এবং আক্রান্তদের পরিচয়  গোপন রাখা হয়।  

এই ঘটনা শুধু একটি মেডিকেল কেস নয়, বরং সমাজের নৈতিকতা ও আইনের প্রশ্ন তুলেছে:  নাবালিকার সঙ্গে সম্পর্ক POCSO আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ফৌজদারি অপরাধ।  মাদকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ এখানে। মাদকাসক্তি কীভাবে একজন কিশোরীকে শোষণের শিকার করল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

সচেতনতার অভাব নিয়েও সর্ব হয়েছেন কেউ কেউ। এইচআইভি প্রতিরোধে নিরাপদ যৌন সম্পর্ক ও নিয়মিত টেস্টিং-এর প্রয়োজনীয়তা।   এই ঘটনা শুধু উত্তরাখণ্ড নয়, গোটা দেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা। মাদকাসক্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কদের শোষণ, এবং এইচআইভি প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ ও সামাজিক সচেতনতা জরুরি।