আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৫ সালে প্রকৃতির রুদ্রমূর্তিতে তছনছ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। পাহাড়ে হড়পা বান, ভূমিধস থেকে শুরু করে সমতলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি‌। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বহু জায়গা। ভেঙে পড়েছে বাড়িঘর, সেতু। প্রকৃতির এহেন তাণ্ডবেই গত কয়েক বছরে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর সাক্ষী থাকল দেশ। ক্ষয়ক্ষতির তালিকাও দীর্ঘ। 

তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে একের পর এক মেঘভাঙা বৃষ্টির সাক্ষী ছিল হিমাচল প্রদেশ। মান্ডি, কুলু, সিমলা, কাঙ্গরা জেলা হড়পা বান ও ভূমিধসে তছনছ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র এই রাজ্যেই ৩৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চার হাজার ৩০০ কোটি টাকা। রাস্তা, সেতু, বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতিতে বিপর্যস্ত বিস্তীর্ণ এলাকা। 

কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার সাক্ষী ছিল পাঞ্জাব। এক হাজারের বেশি গ্রাম বন্যার কবলে পড়ে। কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল বন্যার জলে ভেসে যায়। ভারী বৃষ্টির জেরেই ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হয় একাধিক জেলা। 

চলতি বছরে ৯ ডিসেম্বর সংসদের তথ্য অনুযায়ী, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে দেশে ২০২০ সাল থেকে ২০২৫ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত ১৩ হাজার ৩৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৪ সাল থেকে ২০২৫ সালের ২ হাজার ৯৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ২ হাজার ৮৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২ হাজার ৩৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

এই সময়কালেই ৪ লক্ষ ৩১ হাজার গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে। ২৮ লক্ষ ৭ হাজার বাড়ি পুরোপুরি ধসে পড়েছে। ৫৮৭.৮ লক্ষ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। চলতি বছরে এপ্রিল মাস থেকে হিমাচল প্রদেশে ৩২৪.২৭ লক্ষ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। যা গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এরপরই রয়েছে মহারাষ্ট্র, ৭৫.৪২ লক্ষ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। 

২০২৪ থেকে ২০২৫ সালে রাজ্যগুলি মিলিয়ে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৭ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা চায়। কিন্তু এনডিআরএফ মাত্র ৮১২ কোটি টাকা দেয়। ত্রিপুরা ৬ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছিল। পেয়েছে মাত্র ১৭৫ কোটি টাকা। তামিলনাড়ু চেয়েছিল ৩ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। পেয়েছে ৫২২ কোটি টাকা। হিমাচল প্রদেশ এক হাজার ২০২ কোটি টাকা চেয়েছিল। পেয়েছে ১০৭ কোটি টাকা। 

তাপপ্রবাহ, ভারী বৃষ্টি, বন্যা, ভূমিধস, হড়পা বান, মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে প্রতি বছর শ'য়ে শ'য়ে মানুষের মৃত্যু হয় দেশজুড়ে। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে সঠিকভাবে ক্ষতিপূরণ পৌঁছে দেওয়া হয় না রাজ্যগুলিতে। যা ঘিরে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সাধারণ মানুষেরা।