মাঝেমধ্যে সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ শুকিয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু অনেকে রোজই এই সমস্যায় ভুক্তভোগী হলেও খুব একটা গুরুত্ব দেন না। তবে জানেন কি এটি শরীরে লুকানো কোনও স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, মুখের আর্দ্রতা কমে যাওয়া বা ‘ড্রাই মাউথ’ দীর্ঘমেয়াদে দাঁত, গলা ও সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ঠিক কী কারণে মুখ শুকিয়ে যায়, আসুন জেনে নেওয়া সম্ভাব্য কারণ-

১. মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া: রাতে নাক বন্ধ থাকলে বা সাইনাসের সমস্যা থাকলে মানুষ ঘুমন্ত অবস্থায় মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়। এতে মুখের লালা শুকিয়ে যায় এবং সকালে মুখ শুষ্ক মনে হয়।

২. জল বা স্যালাইভার অভাব: পর্যাপ্ত জল না খাওয়া বা রাতে স্যালাইভা কম উৎপাদন হওয়াও মুখ শুষ্কতার অন্যতম কারণ। বয়স্কদের বা দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের মধ্যে এটি আরও বেশি দেখা যায়।

৩. ওষুধের প্রভাব: অ্যান্টিহিস্টামিন, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ বা মানসিক সমস্যার ওষুধ-এই ধরনের বেশ কয়েকটি ওষুধ মুখ শুষ্ক হওয়ার নেপথ্যে থাকতে পারে। 

৪. শরীরের জটিল সমস্যা: ডায়াবেটিস, অটোইমিউন রোগ, ক্যানসারের চিকিৎসা বা স্যালাইভারি গ্রন্থি সংক্রান্ত সমস্যা হলে মুখ শুষ্ক হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

কখন সতর্ক হবেন? মুখ শুষ্কতার সঙ্গে গলায় খসখসে ভাব, গিলতে বা কথা বলতে কষ্ট, মুখে ঘা, দুর্গন্ধ বা স্বাদের পরিবর্তন দেখা দেওয়া, দীর্ঘমেয়াদি বা নিয়মিত মুখ শুকিয়ে থাকা-এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন।  বিশেষ করে যদি আপনি নিয়মিত ওষুধ খান বা কোনও দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হন তাহলে অবশ্যই সতর্ক হওয়া জরুরি। 

প্রাথমিকভাবে কী করবেন? পর্যাপ্ত জল পান করুন এবং ঘুমানোর সময়ে জলতেষ্টা পেলে খান। নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন। নাক বন্ধ থাকলে ইএনটি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও ধূমপান এড়িয়ে চলুন। রাতে ঘুমানোর ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে শ্বাসপ্রবাহ ও গলার আর্দ্রতা বজায় থাকে। 

সময়মতো সচেতন হলে ও নিয়মিত যত্ন নিলে মুখ শুষ্কতার সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তাই সকালে মুখ শুষ্ক লাগলে এটিকে অবহেলা না করে সতর্ক হন।